মুঘলদের উদ্ভব ও মুঘল সাম্রাজ্য

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 09/07/2014 - 07:20

মুঘলদের উদ্ভব ও মুঘল সাম্রাজ্য (The Origin of the Mughals and Mughal dynasty) :

১৫২৬ সাল থেকে ১৫৫৬ সাল পর্যন্ত ভারত ইতিহাসের মুল বিষয়বস্তু মুঘল-আফগান প্রতিদ্বন্দ্বিতা । প্রথম পানিপথের যুদ্ধে যার সূচনা, দ্বিতীয় পানিপথের যুদ্ধে তার পরিসমাপ্তি । প্রথম পানিপথের যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদীকে পরাস্ত করে বাবর ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা করেন । এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ভারত ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় ।

বংশ পরিচয় : সুলতানি যুগে বারংবার মোঙ্গল আক্রমণ হলেও মোঙ্গলরা ভারতে রাজ্য স্থাপণ করতে পারে নি । কিন্তু তৈমুরের এক বংশধর বাবর ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন । বাবরের প্রতিষ্টিত সাম্রাজ্য মুঘল সাম্রাজ্য নামে পরিচিত হলেও বাবর কিন্তু মোঙ্গল বা মুঘল ছিলেন না । আসলে তিনি ছিলেন চাঘতাই তুর্কি বংশসম্ভূত । চাঘতাই তুর্কি নামটি এসেছে বিখ্যাত মোঙ্গলবীর চেঙ্গিস খানের দ্বিতীয় পুত্র চাঘতাই -এর নাম থেকে । মায়ের দিক থেকে বাবরের সঙ্গে চেঙ্গিস খানের সম্পর্ক ছিল । সুতরাং বাবরের দেহে তৈমুর ও চেঙ্গিস উভয়েরই রক্ত প্রবাহিত ছিল । ১৪৮৩ সালে বাবরের জন্ম হয় । তাঁর পিতা উমর শেখ মির্জা ছিলেন মধ্য এশিয়ার ফারঘনা রাজ্যের শাসক । ১৪৯৪ সালে তিনি মাত্র ১১ বছর বয়সে ফারঘনা রাজ্য লাভ করেন । পরপর তিনি দুবার সমরখন্দ অধিকার করতে ব্যর্থ হন । পৈত্রিক রাজ্য ফারঘনাও তাঁর হস্তচ্যুত হয় । কিন্তু এই ভাগ্য বিপর্যয়ের মধ্যেও তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ তৈমুরের মতো ভারত বিজয়ের স্বপ্ন দেখতেন । ১৫০৪ সালে তিনি কাবুল অধিকার করেন ।  কিন্তু সমরখন্দ দখলের তৃতীয় প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হওয়ায় তিনি ভারতের দিকে রাজ্যবিস্তারের পরিকল্পনা করেন ।

*****

Related Items

আরবদের সিন্ধু বিজয়

হজরত মহম্মদ ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহন করেন ও ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে দেহত্যাগ করেন । হজরত মহম্মদ মারা যাওয়ার পর একশো বছরের মধ্যে আরবরা পারস্য দখল করে ভারতের দিকে অগ্রসর হয় । ভারতে প্রথম মুসলিম আক্রমণ শুরু হয় সিন্ধুতে । সে সময় সিন্ধুর রাজা ছিলেন ব্রাহ্মণ্যধর্মী দাহির । ...

প্রাচীন ভারতের শিল্প ও চিত্রকলা

চূড়া ও শিখরের আকৃতির বিচারে গুপ্ত যুগের পর থেকে প্রাচীন যুগের শেষ পর্যন্ত সময়ের শিল্পরীতিকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে । ইন্দো-এরিয়ান বা উত্তর ভারতীয় শিল্পরীতি এবং দক্ষিণ ভারতীয় দ্রাবিড়ীয় শিল্পরীতি । মহাবলী পুরম বা মামল্লপুরমের রথগুলি পল্লব শিল্পরীতির সবচেয়ে বড় উদাহরণ ...

প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞান চর্চা

গুপ্তযুগের আর্যভট্ট, বরাহমিহির, গর্গ, লাটদেব ও আর্যভট্টের শিষ্যগণ গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যায় মৌলিক অবদান রেখেছিলেন । পৃথিবীর আহ্নিকগতি ও বার্ষিকগতির কথা আর্যভট্টের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি । আর্যভট্টের লেখা ‘সুর্যসিদ্ধান্ত’ একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ...

প্রাচীন ভারতের সাহিত্য

প্রাচীন ভারতে সংস্কৃত ভাষায় সাহিত্যের স্বর্ণভান্ডার ছিল । এ ছাড়া পালি,প্রাকৃত,বাংলা,হিন্দি,তামিল প্রভৃতি ভাষাতেও উল্লেখযোগ্য সাহিত্য রচিত হয়েছিল । বৈদিক সাহিত্য, রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ, স্মৃতি প্রভৃতি কালজয়ী সাহিত্য সংস্কৃত সাহিত্যকে প্রভূতভাবে প্রভাবিত করেছিল । ...

প্রাচীন ভারতের সভ্যতা ও সংস্কৃতি

ধর্ম : একটা সময় ছিল যখন প্রাচীন ভারতের ইতিহাসকে ‘হিন্দুযুগ’ বলে অভিহিত করা হত । প্রাচীন ভারতে বৈদিক, ব্রাহ্মণ্য বা হিন্দুধর্মই একমাত্র ধর্ম ছিল না । বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের জন্ম প্রাচীন ভারতের ধর্মীয় জীবনকে জটিল করেছিল । কোনো সময় বৌদ্ধধর্ম, আবার কোনো সময় হিন্দু ধর্ম ...