তৈমুর লঙ্গের ভারত আক্রমণ

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 09/06/2014 - 22:36

তৈমুর লঙ্গের ভারত আক্রমণ (The Invasion of Taimur) :

ফিরোজ শাহ তুঘলকের মৃত্যুর পর দিল্লি সুলতানির পতন আসন্ন হয়ে পড়ে । ১৩৯৮ খ্রিষ্টাব্দে তৈমুর লঙ্গের ভারত আক্রমণ এই পতনের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে । তুঘলক বংশের শেষ সুলতান নাসিরউদ্দিন মামুদ শাহের রাজত্বকালে ১৩৯৮ খ্রিস্টাব্দে তৈমুর লঙ্গ ভারত আক্রমণ করেন । তৈমুর লঙ্গের ভয়ে সুলতান নাসিরউদ্দিন মামুদ দিল্লি ছেড়ে গুজরাটে পালিয়ে যান । এরপর তৈমুর লঙ্গ সেনাদল সহ দিল্লিতে ঢুকে দীর্ঘ পনেরো দিন ধরে নির্মম হত্যাকাণ্ড এবং লুন্ঠন চালান । লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করে তিনি দিল্লিকে শ্মশানে পরিণত করেন । তৈমুর লঙ্গের সেনারা হিন্দুদের ছিন্ন মুন্ড দিয়ে সৌধ নির্মাণ করে তীব্র উল্লাস প্রকাশ করেন । তৈমুরের আক্রমণ দিল্লি সুলতানির অন্তসার শূন্যতাকেই সর্বসমক্ষে তুলে ধরে । ফলে দিল্লি সুলতানির মর্যাদা ও প্রতিপত্তি ভূলুন্ঠিত হয়ে যায় । প্রচুর ধনসম্পদ লুঠ করে তৈমুর দিল্লির অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেয় । তৈমুর লঙ্গ ভারতে সাম্রাজ্য স্থাপনের কোন চেষ্টা করেন নি । সেজন্য ধ্বংস এবং বিশৃঙ্খলা ছাড়া তাঁর আক্রমণের কোন গঠন মূলক ফল পরিলক্ষিত হয় নাই । ভারতীয় দৃষ্টিতে তৈমুর লঙ্গ ভয় ও তাসের প্রতীক একজন লুণ্ঠনকারী মাত্র । বিপুল ধনসম্পদ ও প্রচুর বন্দিকে নিয়ে তিনি ১৩৯৯ খ্রিস্টাব্দে স্বদেশে ফিরে যান । 

*****

Related Items

আরবদের সিন্ধু বিজয়

হজরত মহম্মদ ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহন করেন ও ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে দেহত্যাগ করেন । হজরত মহম্মদ মারা যাওয়ার পর একশো বছরের মধ্যে আরবরা পারস্য দখল করে ভারতের দিকে অগ্রসর হয় । ভারতে প্রথম মুসলিম আক্রমণ শুরু হয় সিন্ধুতে । সে সময় সিন্ধুর রাজা ছিলেন ব্রাহ্মণ্যধর্মী দাহির । ...

প্রাচীন ভারতের শিল্প ও চিত্রকলা

চূড়া ও শিখরের আকৃতির বিচারে গুপ্ত যুগের পর থেকে প্রাচীন যুগের শেষ পর্যন্ত সময়ের শিল্পরীতিকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে । ইন্দো-এরিয়ান বা উত্তর ভারতীয় শিল্পরীতি এবং দক্ষিণ ভারতীয় দ্রাবিড়ীয় শিল্পরীতি । মহাবলী পুরম বা মামল্লপুরমের রথগুলি পল্লব শিল্পরীতির সবচেয়ে বড় উদাহরণ ...

প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞান চর্চা

গুপ্তযুগের আর্যভট্ট, বরাহমিহির, গর্গ, লাটদেব ও আর্যভট্টের শিষ্যগণ গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যায় মৌলিক অবদান রেখেছিলেন । পৃথিবীর আহ্নিকগতি ও বার্ষিকগতির কথা আর্যভট্টের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি । আর্যভট্টের লেখা ‘সুর্যসিদ্ধান্ত’ একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ...

প্রাচীন ভারতের সাহিত্য

প্রাচীন ভারতে সংস্কৃত ভাষায় সাহিত্যের স্বর্ণভান্ডার ছিল । এ ছাড়া পালি,প্রাকৃত,বাংলা,হিন্দি,তামিল প্রভৃতি ভাষাতেও উল্লেখযোগ্য সাহিত্য রচিত হয়েছিল । বৈদিক সাহিত্য, রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ, স্মৃতি প্রভৃতি কালজয়ী সাহিত্য সংস্কৃত সাহিত্যকে প্রভূতভাবে প্রভাবিত করেছিল । ...

প্রাচীন ভারতের সভ্যতা ও সংস্কৃতি

ধর্ম : একটা সময় ছিল যখন প্রাচীন ভারতের ইতিহাসকে ‘হিন্দুযুগ’ বলে অভিহিত করা হত । প্রাচীন ভারতে বৈদিক, ব্রাহ্মণ্য বা হিন্দুধর্মই একমাত্র ধর্ম ছিল না । বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের জন্ম প্রাচীন ভারতের ধর্মীয় জীবনকে জটিল করেছিল । কোনো সময় বৌদ্ধধর্ম, আবার কোনো সময় হিন্দু ধর্ম ...