ভারতের প্রধান ঋতু — শরৎকাল

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 11/15/2014 - 10:49

শরৎকাল [Autumn] :

(১) ভারতে এই ঋতুটি অক্টোবর মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় ।

(২) এই সময়ে কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর সূর্যের কিরণ লম্বভাবে পড়ে না । ফলে উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলে তাপমাত্রা কমতে শুরু করে । এর ফলে উত্তর ভারতের নিম্নচাপ বলয়টি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে । তা ভারতে মৌসুমি বায়ু আকর্ষণ করে আনার পক্ষে যথেষ্ট শক্তিশালী নয় ।

(৩) এই কারনে মৌসুমি বায়ু সেপ্টেম্বর মাসের শেষে উত্তর ভারতের পাঞ্জাব পর্যন্ত, মধ্য অক্টোবরে মধ্য ভারত পর্যন্ত এবং নভেম্বর মাসের প্রথমে দক্ষিণ ভারত পর্যন্ত আসতে পারে ।

(৪) এই সময়ের পর সূর্য মকরক্রান্তিয় অঞ্চলে লম্বভাবে কিরণ দেয় । ফলে ভারত মহাসাগরের জলভাগ ভারতের স্থলভাগের তুলনায় বেশি উত্তপ্ত হয় ও ভারত মহাসাগরে নিন্মচাপের সৃষ্টি হয় । ফলে ভারতের স্থলভাগ থেকে উচ্চচাপের বায়ু দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহের বিপরীতে ভারত মহাসাগরের নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে । এই ঘটনাকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাবর্তন বলে ।

(৫) কিন্তু বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সময় কিছু পরিমাণ জলীয় বাস্প সংগ্রহ করে এই বায়ু অন্ধ্র ও করমণ্ডল (তামিলনাড়ু) উপকূলে শরৎকালে বৃষ্টিপাত ঘটায় । ফলে করমণ্ডল ও অন্ধ্র উপকূলে বছরে দু-বার বৃষ্টিপাত হয় ।

(৬) এই সমর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ভারতের পূর্ব উপকূল ও বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূল অঞ্চলে প্রবল আঘাত হানে এবং জীবন ও সম্পত্তিনাশের কারণ হয় । পশ্চিমবঙ্গে এই ঘূর্ণিঝড় আশ্বিনের ঝড় নামে পরিচিত । 

*****

Related Items

সাময়িক বায়ু (The Periodic Winds)

সাময়িক বায়ু (The Periodic Winds) : দিনের বিভিন্ন সময়ে এবং বছরের বিভিন্ন ঋতুতে স্থল ও জলভাগের বায়ুর উষ্ণতা ও বায়ুচাপের পার্থক্যের ফলে সাময়িকভাবে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে সাময়িক বায়ু বলে । এই বায়ু কয়েক প্রকারের হয়, যেমন— (১)

আকস্মিক বায়ু (Sudden or Irregular wind)

আকস্মিক বায়ু (Sudden or Irregular wind)  চাপের সমতা রাখার জন্য বায়ুপ্রবাহ উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ধাবিত হয় । বায়ুচাপের তারতম্য হল বায়ুপ্রবাহের প্রধান কারণ । বায়ুর চাপ আবার নির্ভর করে উষ্ণতর উপর । কোনো স্থানের বায়ু উত্তপ্ত হলে সেখানে বায়

স্থানীয় বায়ু (Local Wind)

স্থানীয় বায়ু (Local Wind) : ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয়ভাবে বাযুর তাপ ও চাপের পার্থক্যের কারণে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে যে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়, তাদের স্থানীয় বায়ু বলে । স্থানীয় বায়ুপ্রবাহ দুই প্রকারের হয়ে থাকে, যথা— (১) উষ্ণ স্থানীয় বায়

নিয়ত বায়ু (Planetary Winds)

নিয়ত বায়ু (Planetary Winds) : ভূপৃষ্ঠের বায়ুচাপের পার্থক্যই বায়ুপ্রবাহের প্রধান কারণ । যেখানে বায়ুচাপ বেশি, সেখান থেকে যেদিকে বায়ুচাপ কম, সেদিকেই বায়ু প্রবাহিত হয় । এই নিয়ম মেনে পৃথিবীর চারটি স্থায়ী উচ্চচাপ বলয় থেকে তিনটি স্থায়ী নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সা

বায়ুপ্রবাহের প্রকারভেদ (Types of Winds)

বায়ুপ্রবাহের প্রকারভেদ (Types of Winds) : উৎপত্তি ও প্রকৃতি অনুযায়ী বায়ুপ্রবাহকে প্রধানত চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয় । যথা— (ক) নিয়ত বায়ু (Planetary Winds), (খ) সাময়িক বায়ু (The Periodic Winds), (গ) স্থানী