পারমাণবিক সংখ্যা এবং ভর সংখ্যা

Submitted by arpita pramanik on Mon, 01/07/2013 - 16:54

পারমাণবিক সংখ্যা এবং ভর সংখ্যা (Atomic Number and Mass Number) :

পারমাণবিক সংখ্যা বা ভর-ক্রমাঙ্ক (Atomic Number) : কোনো মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থিত ধনাত্মক তড়িতের মোট একক সংখ্যাকে ওই মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বা পরমাণু-ক্রমাঙ্ক বলে ।

যেহেতু, প্রত্যেক প্রোটনে ধনাত্মক তড়িতের পরিমাণ এক একক ; সুতরাং, কোনো পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থিত প্রোটনগুলির মোট সংখ্যাই হল ওই পারমাণবিক সংখ্যা । পারমাণবিক সংখ্যাকে 'Z' অক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয় ।

ভর সংখ্যা (Mass Number) : কোনো মৌলের একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের মধ্যে অবস্থিত প্রোটন এবং নিউট্রনের মোট সংখ্যাকে ওই মৌলের বা পরমাণুর ভরসংখ্যা বলে । অর্থাৎ ভরসংখ্যা =  প্রোটন সংখ্যা + নিউট্রন সংখ্যা । ভরসংখ্যাকে 'A' অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করা হয় ।

ভর সংখ্যা এবং পারমাণবিক সংখ্যার মধ্যে সম্পর্ক : কোনো মৌলের পরমাণুতে যদি P -সংখ্যক প্রোটন এবং N -সংখ্যক নিউট্রন থাকে, তাহলে

পরমাণুটির ভরসংখ্যা (A) =  প্রোটন-সংখ্যা (P) + নিউট্রন-সংখ্যা (N)

যেহেতু, প্রোটন-সংখ্যা (P) = পারমাণবিক-সংখ্যা (Z)

অতএব, ভরসংখ্যা (A) =  পারমাণবিক-সংখ্যা (Z) + নিউট্রন-সংখ্যা (N) বা Z = A - N

অক্সিজেনের পারমাণবিক সংখ্যা (Z) = 8 এবং ভর-সংখ্যা (A) = 16 ; সুতরাং অক্সিজেনকে 8O16 লিখে প্রকাশ করা হয় ।

পারমাণবিক ভর (Atomic mass) : একটি কার্বন-12(6C12) পরমাণুর ভর 12 ধরে অন্য কোনো মৌলের একটি C-12 পরমাণুর ভরের 1/12 অংশ অপেক্ষা যতগুণ ভারী, সেই সংখ্যাকে মৌলটির পারমাণবিক ভর বা পারমাণবিক গুরুত্ব বলে । অর্থাৎ

মৌলের পারমাণবিক ভর = মৌলের 1টি পরমাণুর ভর / 1টি C-12 পরমাণুর ভরের 1/12 অংশ

সমজাতীয় দুটি রাশির অনুপাত হওয়ায় মৌলের পারমাণবিক ভর একটি এককহীন সংখ্যা মাত্র ।

পারমাণবিক ভর একক (Atomic Mass Unit, সংক্ষেপে amu বা u) :

সংজ্ঞা:- কোনো মৌলের একটি পরমাণুর প্রকৃত ভরকে যে একক দ্বারা প্রকাশ করা হয়, সেই একককে পারমাণবিক ভর একক বলা হয় ।

এক পারমাণবিক ভর একক (amu বা u) =[tex]{{1} \over {12}} \times 1[/tex]টি C-12 পরমাণুর প্রকৃত ভর ।

এখান, 1টি কার্বন পরমাণুর ভর =[tex]{{12} \over {6.023 \times {{10}^{23}}}}[/tex] গ্রাম

সুতরাং, এক পারমাণবিক ভর একক (amu বা u) =[tex]{1 \over {12}} \times {{12} \over {6.023 \times {{10}^{23}}}}[/tex] গ্রাম =[tex]1.6603 \times {10^{ - 24}}[/tex]গ্রাম =[tex]1.6603 \times {10^{ - 27}}[/tex]কেজি । এক পারমাণবিক ভর একক (amu বা u) -কে এক ডালটন (Dalton, সংক্ষেপে Da) ও বলা হয় ।

এই এককে প্রোটনের ভর (mp) = 1.0072766 amu বা u

নিউট্রনের ভর (mn) = 1.0086654 amu বা u

ইলেকট্রনের ভর (me) = 0.00055 amu বা u

*****

Related Items

এক্স-রশ্মির ধর্ম ও এর ব্যবহার

এক্স-রশ্মি এক প্রকার তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ হওয়ায় তড়িৎক্ষেত্র বা চৌম্বকক্ষেত্রের দ্বারা এই রশ্মির গতিপথের কোনো বিচ্যুতি ঘটে না । এক্স-রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক কম। এই রশ্মি মানুষের চোখে অনুভূতি জন্মায় না । কম তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মিকে কঠিন এক্স-রশ্মি ...

এক্স-রশ্মি উৎপাদনের নীতি

তীব্র গতিবেগ সম্পন্ন ইলেকট্রনের গতি উচ্চ গলনাঙ্ক বিশিষ্ট কোনো কঠিন বস্তু দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হটাৎ কমে গেলে বা থেমে গেলে, এর গতিশক্তির কিছু অংশ তাপশক্তিতে রুপান্তরিত হয় । এই শক্তিশালী অদৃশ্য তরঙ্গকে এক্স-রশ্মি বলা হয় । 1895 খ্রিস্টাব্দে জার্মান বিজ্ঞানী রন্টজেন ...

দুই তড়িদ্দ্বারবিশিষ্ট তাপীয় আয়ন ভালভ

দুই তড়িদ্দ্বারবিশিষ্ট তাপীয় আয়ন ভালভ বা ডায়োড ভালভ : বিভিন্ন ধরনের তাপীয় আয়ন ভালভ তৈরির কাজে তাপীয় আয়ন নিঃসরণকে ব্যবহার করা হয় । 1904 খ্রিস্টাব্দে স্যার ফ্লেমিং সর্বপ্রথম দুই তড়িদ্দ্বারবিশিষ্ট তাপীয় আয়ন ভালভ উদ্ভাবন করেন । প্রথমে এই ভালভকে ‘ফ্লেমিং ভালভ’ ...

তপ্ত ক্যাথোড-রশ্মি নল

এটি প্রধানত একটি বায়ুশূন্য কাচের নল । নলটির ভিতরের দেওয়ালে পরিবাহী পদার্থের আস্তরণ লাগানো থাকে । ক্যাথোড C হল ইলেকট্রনের উত্স । যখন তড়িৎপ্রবাহ পাঠিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একে উত্তপ্ত করা হয় তখন এ থেকে ইলেকট্রন নির্গত হয় । G হল গ্রিড, এটি নিকেলের ...

তাপীয় আয়ন নিঃসরণ

তাপীয় আয়ন নিঃসরণ: বিজ্ঞানী ড্রুড -এর মুক্ত ইলেকট্রন তত্ত্ব অনুযায়ী ধাতুর মধ্যে মুক্ত ইলেকট্রনগুলি স্বাধীনভাবে এলোমেলো ঘুরে বেড়ায় । সাধারণভাবে এই ইলেকট্রনগুলি ধাতবপৃষ্ঠ ত্যাগ করে যেতে পারে না । কারণ ধাতবপৃষ্ঠ ওই ইলেকট্রনগুলির উপর একটি আকর্ষণ বল ...