তড়িৎ-ক্ষমতা এবং শক্তি

Submitted by arpita pramanik on Sat, 01/26/2013 - 21:20

তড়িৎ-ক্ষমতা এবং শক্তি (Electrical power and energy) :

কার্য করবার হারকে ক্ষমতা বলে । তড়িৎ-ক্ষমতা বলতে তড়িৎপ্রবাহের কার্য করবার হার-কে বোঝায় । বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ক্ষমতা ওয়াট (watt) নামক এককে প্রকাশ করা হয় । যে বৈদ্যুতিক যন্ত্র এক সেকেন্ডে (second) এক জুল (joule) কার্য করতে পারে, তার ক্ষমতাকে 1 ওয়াট বলা হয় । অর্থাৎ 1 ওয়াট = 1 জুল / সেকেন্ড ।

কিন্তু [tex]1joule = 1volt \times 1coulomb[/tex] [tex]\therefore 1watt = 1volt \times \frac{{1coulomb}}{{1\sec ond}}[/tex]

কিন্তু [tex]\frac{{1coulomb}}{{1\sec ond}} = 1Ampere[/tex] [tex]\therefore 1watt = 1volt \times 1Ampere[/tex]

অর্থাৎ [tex]watt = volt \times Ampere[/tex]

সংজ্ঞা : 1 অ্যাম্পিয়ার তড়িৎপ্রবাহ 1 ভোল্ট বিভব-প্রভেদের মধ্য দিয়ে গেলে প্রতি সেকেন্ডে যে হারে শক্তি ব্যয় হয় তাকে 1 ওয়াট (watt) বলে

বড়ো বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ক্ষমতা প্রকাশের জন্য সাধারণত বড়ো একক ব্যবহৃত হয় । এই বড়ো একককে কিলোওয়াট (KW) এবং মেগাওয়াট (MW) বলে ।

1 KW = 103 W এবং 1 MW = 106

তড়িৎ-শক্তির একক : যেহেতু সম্পাদিত কার্য = ক্ষমতা x সময়; তাই P ক্ষমতা সম্পন্ন কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্র একটানা t সময় ধরে কার্য করলে, ওই যন্ত্র কর্তৃক সম্পাদিত কার্যের পরিমাণ ক্ষমতা (P) ও সময়ের (t) গুণফল থেকে পাওয়া যাবে । এ থেকে তড়িৎ-শক্তির বিভিন্ন একক গঠন করতে পারা যায় ।

জুল (joule) : যদি 1 ওয়াট ক্ষমতা 1 সেকেন্ডব্যাপী কার্য করে তবে যে শক্তি ব্যয়িত হয় তাকে 1 জুল বলা হয় । অর্থাৎ জুল = ওয়াট x সেকেন্ড ।  

ওয়াট-ঘন্টা (watt-hour) : 1 ওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন যন্ত্র 1 ঘন্টা চললে যে তড়িৎ-শক্তি ব্যয় হয়, তাকে 1 ওয়াট-ঘন্টা বলে ।

অর্থাৎ 1ওয়াট-ঘন্টা = 1 ওয়াট x 1 ঘন্টা = (1 জুল / সেকেন্ড ) x 3600 সেকেন্ড = 3600 জুল ।

কিলোওয়াট-ঘন্টা (Kilowatt-hour বা kwh বা B.O.T. unit) : বিদ্যুৎ-সরবরাহ কোম্পানি বাড়িতে যে বিদ্যুত সরবরাহ করে তার পরিমাপ শক্তির একক অনুযায়ী করা হয় । একে কিলোওয়াট-ঘন্টা বা বোর্ড অফ ট্রেড একক বলা হয় । 

1 কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন যন্ত্র 1 ঘন্টা চললে যে তড়িৎ-শক্তি ব্যয় হয়, তাকে 1 কিলোওয়াট-ঘন্টা বলে । 1 B.O.T. একক  = 1 কিলোওয়াট-ঘন্টা = 1000 ওয়াট ঘন্টা

অর্থাৎ কিলোওয়াট-ঘন্টা বা B.O.T. একক = (ওয়াট-ঘন্টা ÷ 1000 ) =  (ভোল্ট x অ্যাম্পিয়ার x ঘন্টা) ÷ 1000

প্রত্যেক বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে ইলেকট্রিক কোম্পানি একটি মিটার বসিয়ে দেয় । এই মিটার B.O.T. একক অনুযায়ী বাড়িতে মোট তড়িৎ-শক্তি খরচের হিসেব রাখে । এই একক সাধারণ কথায় 'ইউনিট' নামে পরিচিত ।

*****

Related Items

এক্স-রশ্মির ধর্ম ও এর ব্যবহার

এক্স-রশ্মি এক প্রকার তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ হওয়ায় তড়িৎক্ষেত্র বা চৌম্বকক্ষেত্রের দ্বারা এই রশ্মির গতিপথের কোনো বিচ্যুতি ঘটে না । এক্স-রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক কম। এই রশ্মি মানুষের চোখে অনুভূতি জন্মায় না । কম তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মিকে কঠিন এক্স-রশ্মি ...

এক্স-রশ্মি উৎপাদনের নীতি

তীব্র গতিবেগ সম্পন্ন ইলেকট্রনের গতি উচ্চ গলনাঙ্ক বিশিষ্ট কোনো কঠিন বস্তু দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হটাৎ কমে গেলে বা থেমে গেলে, এর গতিশক্তির কিছু অংশ তাপশক্তিতে রুপান্তরিত হয় । এই শক্তিশালী অদৃশ্য তরঙ্গকে এক্স-রশ্মি বলা হয় । 1895 খ্রিস্টাব্দে জার্মান বিজ্ঞানী রন্টজেন ...

দুই তড়িদ্দ্বারবিশিষ্ট তাপীয় আয়ন ভালভ

দুই তড়িদ্দ্বারবিশিষ্ট তাপীয় আয়ন ভালভ বা ডায়োড ভালভ : বিভিন্ন ধরনের তাপীয় আয়ন ভালভ তৈরির কাজে তাপীয় আয়ন নিঃসরণকে ব্যবহার করা হয় । 1904 খ্রিস্টাব্দে স্যার ফ্লেমিং সর্বপ্রথম দুই তড়িদ্দ্বারবিশিষ্ট তাপীয় আয়ন ভালভ উদ্ভাবন করেন । প্রথমে এই ভালভকে ‘ফ্লেমিং ভালভ’ ...

তপ্ত ক্যাথোড-রশ্মি নল

এটি প্রধানত একটি বায়ুশূন্য কাচের নল । নলটির ভিতরের দেওয়ালে পরিবাহী পদার্থের আস্তরণ লাগানো থাকে । ক্যাথোড C হল ইলেকট্রনের উত্স । যখন তড়িৎপ্রবাহ পাঠিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একে উত্তপ্ত করা হয় তখন এ থেকে ইলেকট্রন নির্গত হয় । G হল গ্রিড, এটি নিকেলের ...

তাপীয় আয়ন নিঃসরণ

তাপীয় আয়ন নিঃসরণ: বিজ্ঞানী ড্রুড -এর মুক্ত ইলেকট্রন তত্ত্ব অনুযায়ী ধাতুর মধ্যে মুক্ত ইলেকট্রনগুলি স্বাধীনভাবে এলোমেলো ঘুরে বেড়ায় । সাধারণভাবে এই ইলেকট্রনগুলি ধাতবপৃষ্ঠ ত্যাগ করে যেতে পারে না । কারণ ধাতবপৃষ্ঠ ওই ইলেকট্রনগুলির উপর একটি আকর্ষণ বল ...