গ্যাসের ধর্ম ও গ্যাসের চাপ

Submitted by arpita pramanik on Tue, 01/08/2013 - 16:24

গ্যাসের ধর্ম ও গ্যাসের চাপ (Properties of gases and Pressure of the gas) :

গ্যাসের ধর্ম (Properties of gases) :

(ক) গ্যাসীয় পদার্থের কোনো নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন নেই । যে পাত্রে রাখা হয় সেই পাত্রের সমগ্র আয়তন জুড়ে থাকে । গ্যাস অণুর ধর্মই হল চারিদিকে ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়া । অণুগুলির গতির জন্যই গ্যাসের প্রবাহী ধর্ম দেখা যায় ।

(খ) গ্যাস অণুর পরস্পরকে আকর্ষণ করার ক্ষমতা অনেক কম । চাপ ও উষ্ণতার সামান্য পরিবর্তনে গ্যাসের আয়তন যথেষ্ট পরিমাণে পরিবর্তিত হয় ।

(গ) স্থির উষ্ণতায় গ্যাসের ওপর চাপ প্রয়োগ করলে কিংবা চাপ স্থির রেখে উষ্ণতা বৃদ্ধি করলে গ্যাসের আয়তন সংকোচন হয় ।

(ঘ) পরস্পর রাসায়নিক বিক্রিয়া করে না এমন দুই বা তার বেশি গ্যাস স্বতঃস্ফূর্তভাবে পরস্পরের সঙ্গে মিশে যায় । গ্যাসের এই ধর্মকে ব্যাপন বলে ।

(ঙ) কঠিন ও তরল পদার্থের তুলনায় গ্যাসের ঘনত্ব অনেক কম ।

(চ) বিভিন্ন গ্যাসের মধ্যে রাসায়নিক ধর্ম এবং প্রকৃতিগত ভাবে পার্থক্য থাকলেও মৌলিক বা যৌগিক সব গ্যাসের ভৌতধর্ম একই রকম হয় ।

গ্যাসের চাপ (Pressure of the gas) :

আবদ্ধ গ্যাস পাত্রের দেওয়ালের ওপর লম্বভাবে বল প্রয়োগ করে । দেওয়ালের প্রতি একক ক্ষেত্রফলের ওপর ওই বল যতটা প্রযুক্ত হয় তাকে গ্যাসের চাপ বলে । গ্যাসের চাপ ব্যারোমিটার যন্ত্রে পারদ স্থম্ভের উচ্চতা দিয়ে প্রকাশ করা হয় ।

কোনো গ্যাসের চাপ = 76 সেমি. পারদ— এই উক্তির অর্থ, ওই গ্যাসের চাপ 76 সেমি উচ্চতা এবং 1 বর্গসেমি ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট একটি পারদস্থম্ভের ওজনের সমান । 

প্রমাণ চাপ (Standard Pressure) : সমুদ্রপৃষ্ঠে 45o অক্ষাংশে এবং 0oC উষ্ণতায় 76 সেমি পারদ স্থম্ভ যে উদস্থৈতিক চাপ প্রয়োগ করে তাকে প্রমাণ চাপ বা এক বায়ুমন্ডলীয় চাপ বলে । অতএব, এক-বায়ুমন্ডলীয় চাপ = 76 সেমি পারদস্থম্ভের চাপ = 76 x 13.6 (পারদের ঘনত্ব) x 980 (অভিকর্ষজ ত্বরণ) = 1.013 x 106 ডাইন / বর্গসেমি = 1.013 x 105 নিউটন / বর্গমিটার । চাপের আন্তর্জাতিক একক হল পাস্কাল (Pascal, Pa) = নিউটন /বর্গমিটার । সুতরাং, এক-বায়ুমন্ডলীয় চাপ =1.013 x 105 Pa । এছাড়াও চাপ প্রকাশ করতে বার (bar) ও টর (torr) এককের ব্যবহার আছে । 1 বার = 105 Pa এবং 1 টর = 1 মিমি পারদস্থম্ভের চাপ ।

*****

Related Items

হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার

রসায়নাগারে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড খুবই প্রয়োজনীয় বিকারক । ক্লোরিনের শিল্পোত্পাদনে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার হয় । অ্যাকুয়া রিজিয়া (অম্লরাজ) প্রস্তুতিতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার হয়, যা সোনা গলাতে দরকার হয় । রঞ্জন শিল্পে, চর্ম শিল্পে, লোহার ওপর দস্তা ...

হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের শনাক্তকরণ

সিলভার নাইট্রেট দ্রবণের সঙ্গে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় অদ্রাব্য সিলভার ক্লোরাইডের থকথকে সাদা অধঃক্ষেপ পাওয়া যায় । এই অধঃক্ষেপ নাইট্রিক অ্যাসিড -তে অদ্রাব্য কিন্তু অতিরিক্ত অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সিড -এ দ্রাব্য । হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের মধ্যে ক্লোরিন এবং হাইড্রোজেন ...

হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাসের ধর্ম

হাইড্রোজেন ক্লোরাইড বর্ণহীন, শ্বাসরোধী, ঝাঁঝালো গন্ধযুক্ত, অম্লস্বাদ বিশিষ্ট গ্যাস । হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস বাতাসের চেয়ে প্রায় 1.3 গুণ ভারী, এর বাষ্পীয় ঘনত্ব 18.25। এই গ্যাস জলে অত্যন্ত দ্রাব্য, 0°C উষ্ণতায় এবং প্রমাণ চাপে 1 সিসি জলে 450 সিসি হাইড্রোজেন ক্লোরাইড ...

হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড প্রস্তুতি

HCl -এর জলীয় দ্রবণ অর্থাৎ, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড প্রস্তুতি: গ্যাসীয় অবস্থায় HCl -কে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড বলে । এই গ্যাসের জলীয় দ্রবণকে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড বলে । উত্পন্ন হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাসকে জলে দ্রবীভূত করলে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড পাওয়া যায় । ...

হাইড্রোজেন ক্লোরাইড এবং হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড

1648 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী গ্লোবার রক সল্ট ও গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিডের বিক্রিয়া ঘটিয়ে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস তৈরি করেন । বিজ্ঞানী প্রিস্টলী 1772 খ্রিস্টাব্দে সমুদ্রের লবণ থেকে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড প্রস্তুত করেন । তিনিএই অ্যাসিডের নাম দেন সামুদ্রিক অ্যাসিড ...