Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 04/26/2012 - 16:09

সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India)

সুপ্রিমকোর্টকে ভারতের বিচারব্যবস্থার সর্বোচ্চ আদালত বলা হয় । তাই সুপ্রিমকোর্টের বিচারকদের সিদ্ধান্ত আইন বলে গণ্য হয় । রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিদের নিয়োগ করেন । বিচারপতি নিয়োগের আবশ্যিক যোগ্যতা হল, কোনো হাইকোর্টে পাঁচ বছর বিচারপতি থাকতে হবে, অথবা হাইকোর্টে ১০ বছর একটানা অ্যাডভোকেট থাকতে হবে এবং ভারতের নাগরিক হওয়া চাই । বিচারপতিদের কার্যকালের মেয়াদ ৬৫ বছর পর্যন্ত । বর্তমানে এই আদালত একজন প্রধান বিচারপতি ও ২৫ জন বিচারপতি নিয়ে গঠিত । এই সুপ্রিমকোর্ট একাধারে যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত এবং আপিল আদালত হিসেবে কাজ করে । দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মামলার আপীল সংক্রান্ত শুনানি সুপ্রিম কোর্টে হয় । একমাত্র সাংবিধানিক প্রতিবিধানের ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিক সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতে পারেন । সুপ্রিমকোর্ট দেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলির সুরক্ষার ব্যাপারে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে । সুপ্রিমকোর্টকে ভারতীয় সংবিধানের 'সংরক্ষক, ব্যাখ্যাকর্তাঅভিভাবক' বলা হয় ।

সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কাজ : ভারতের সুপ্রিমকোর্টের চার ধরনের ক্ষমতা রয়েছে, এগুলি হল—

(১) মৌলিক বিচার ক্ষমতা (Original Jurisdiction) : ভারতবর্ষের আন্তঃরাজ্য অর্থাৎ রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যের বিরোধের নিষ্পত্তি সুপ্রিম কোর্টে হয় । রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের বিরোধ দেখা দিলে সুপ্রিমকোর্ট তার নিষ্পত্তি করে । এছাড়া সংবিধানের ব্যাখ্যা নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে সেখানে সুপ্রিমকোর্টের রায়ই চুড়ান্ত । এই জন্য সুপ্রিমকোর্টকে সংবিধানের বিশ্লেষক ও রক্ষক বলা হয় ।

(২) আপিল বিচার ক্ষমতা (Appellate Jurisdiction) : এই ক্ষমতা বলে সুপ্রিমকোর্ট ভারতের বিভিন্ন হাইকোর্টের দেওয়ানি, ফৌজদারি এবং সংবিধান সংক্রান্ত বিচারের বিরুদ্ধে আপিলের বিচার করেন ।

(৩) পরামর্শদানের ক্ষমতা (Advisory Jurisdiction) : আইন সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শ বা অভিমত জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্ট তা দিয়ে থাকেন । সংবিধান সংক্রান্ত কোনো ব্যাখ্যার বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাইলে সুপ্রিমকোর্ট তা রাষ্ট্রপতিকে জানাতে পারে । তবে সুপ্রিম কোর্টের ব্যাখ্যা রাষ্ট্রপতি গ্রহণ বা বর্জন করতে পারেন ।

(৪) আদেশ, নির্দেশ বা পরওয়ানা জারি করার ক্ষমতা (Order Jurisdiction) : কোনোও নাগরিকের মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন হলে নাগরিক তার প্রতিবিধানের জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন । সুপ্রিমকোর্ট আদেশ, নির্দেশ অথবা পরওয়ানা (Writ) জারি করে তা রক্ষা করার ব্যবস্থা করতে পারেন ।

হাইকোর্ট (High Court) : বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে হাইকোর্ট হল সর্বোচ্চ বিচার বিভাগীয় সংস্থা । রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন রাজ্যের হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগ করে থাকেন । রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মামলা হাইকোর্টে হয় । নিম্ন আদালতের মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানি হাইকোর্টে হয় । হাইকোর্টের অধীনে আছে বিভিন্ন নিম্ন আদালত । যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় সর্বনিম্ন আদালত হল ন্যায় পঞ্চায়েত ।

*****

Related Items

বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন (Indian universities Act, 1904)

লর্ড কার্জন প্রতিক্রিয়াশীল শাসক হলেও শিক্ষার ব্যাপারে তিনি খুবই উৎসাহী ছিলেন । লর্ড কার্জন স্যার টমাস র‍্যালের সভাপতিত্বে ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে 'র‍্যালে কমিশন' গঠন করেছিলেন । এটি 'ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন' নামেও পরিচিত । স্যার টমাস র‍্যালে ছিলেন বড়লাটের কার্যনির্বাহক সমিতির আইন সদস্য । এই কমিশন ...

হান্টার কমিশন (Hunter Education Commission)

১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে লর্ড রিপণের সময় উইলিয়াম হান্টারের নেতৃত্বে হান্টার কমিশন গঠিত হয় । এই কমিশনের কাজ ছিল দেশে ইংরেজি শিক্ষার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা । শিক্ষার প্রসারে হান্টার কমিশনের ভূমিকা এক অভিনব অধ্যায়ের সূচনা করেছিল । হান্টার কমিশনের সুপারিশগুলি ছিল ....

উডের ডেসপ্যাচ (Wood's Despatch of 1854)

শিক্ষা সংক্রান্ত নানা সমস্যার সমাধান করার জন্য ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির পরিচালক সমিতির সভাপতি স্যার চার্লস উড 'শিক্ষা বিষয়ক প্রস্তাব' (Wood's Education Despatch) নামে একটি শিক্ষা নীতি রচনা করে ভারতে পাঠান । ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে চার্লস উডের সুপারিশ ...

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ:-

মাধ্যমিকের নমুনা প্রশ্ন:-

১. ভারতে 'হাফটোন' প্রিন্টিং পদ্ধতি প্রবর্তন করেন—     [মাধ্যমিক-২০১৭]

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা:-

মাধ্যমিকের নমুনা প্রশ্ন:-

১. ভারতের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হল—       [মাধ্যমিক -২০১৭]