বান্দুং সম্মেলন (Bandung Conference)

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 04/26/2012 - 18:49

বান্দুং সম্মেলন (Bandung Conference) :

১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দের ১৮ থেকে ২৪শে এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং শহরে ‘বান্দুং সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয় । জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের পক্ষে এই ‘বান্দুং সম্মেলন’ এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা । এই সম্মেলনে এশিয়া ও আফ্রিকার ২৯টি দেশের প্রতিনিধিরা মিলিতভাবে উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করেছিলেন । ভারত, চিন, মিশর, যুগোশ্লাভিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশ বান্দুং সম্মেলনে নেতৃত্বদান করে । এই সম্মেলনে ভারতের উদ্যোগে বিশ্বশান্তি ও সহযোগিতা সংক্রান্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত হয় । বান্দুং সম্মেলনের প্রধান উদ্যোক্তাদের মধ্যে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু ছিলেন অন্যতম । পরবর্তী কালে আমেরিকা ও রাশিয়া দুটি রাষ্ট্র গোষ্ঠীর মধ্যে ঠান্ডা লড়াই তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে, শক্তিধর দেশগুলির মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বেড়েছে, দিকে দিকে সামরিক শক্তিজোট গঠনের প্রচেষ্টা জোরদার হয়েছে । এইসব রকম পরিস্থিতিতে ভারত এ সবের বিরুদ্ধে নির্জোট আন্দোলনকে আরও সংহত ও শক্তিশালী করার চেষ্টায় সক্রিয় হয়েছে ।

বান্দুং সম্মেলনের গুরুত্ব :

(১) বান্দুং সম্মেলন থেকেই জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় ।

(২) এই সম্মেলনে (i) বিভিন্ন দেশে ঔপনিবেশিক শাসন ও বর্ণ-বৈষম্য নীতির অবসান,  (ii) ঠান্ডা লড়াই জনিত উত্তেজনা প্রশমন,  (iii) নয়া উপনিবেশবাদ ও বর্ণ বৈষম্যবাদের বিরোধিতা, (iv) তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা,  (v) বিশ্বরাজনীতিতে ভারসাম্য রক্ষা প্রভৃতি বিষয়ে বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করা হয় ।

*****

Related Items

বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলন (Wahabi Movement in Bengal)

ওয়াহাবি আন্দোলন (Wahabi Movement) : ‘ওয়াহাবি’ শব্দের অর্থ হল ‘নবজাগরণ’ । আরব দেশে আব্দুল ওয়াহাব নামে এক ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ইসলাম ধর্মের সংস্কারের জন্য এই আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন । ভারতবর্ষে ওয়াহাবি আন্দলনের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন উত্তরপ্রদেশের রায়বেরি

সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ)

সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (Sanyasi-Fakir Rebellion):- ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন ও শোষনের বিরুদ্ধে অবিভক্ত বাংলার ঢাকায় ১৭৬৩ থেকে ১৮০০  খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত 'গিরি' ও 'দাশনামী' সম্প্রদায়ভুক্ত সন্ন্যাসী ও 'মাদারী' সম্প্রদায়ভুক্ত ফকিরদের নেতৃত্বে যে কৃষকবিদ্রোহ

পাগলপন্থী বিদ্রোহ (প্রথম পর্ব ১৮২৫ - ২৭ খ্রিস্টাব্দে)

পাগলপন্থী বিদ্রোহ (Pagal Panthi Revolt) : ঊনিশ শতকে বাংলায় যেসব কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল সেগুলির মধ্যে 'পাগলপন্থী' বিদ্রোহ বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল । ঔপনিবেশিক শাসনকালে অবিভক্ত বাংলায় ময়মনসিং জেলার শেরপুর পরগনার পাহাড়ি এলাকায় গারো ও

মুন্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দে)

মুন্ডা বিদ্রোহ (Munda Rebellion):- বর্তমান ঝাড়খন্ড রাজ্যের রাঁচিসহ ছোটোনাগপুর অঞ্চলে এবং তৎসংলগ্ন মধ্যপ্রদেশ, উড়িষ্যা ও বাংলার একাংশে মুন্ডা উপজাতিরা বসবাস করত । ১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দে রাঁচিতে আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায় বিরসা মুন্ডার নেতৃ

সাঁওতাল হুল (১৮৫৫-৫৬ খ্রিস্টাব্দ)

সাঁওতাল বিদ্রোহ (Santhal rebellion) : ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালে যে সমস্ত আদিবাসী বিদ্রোহগুলি ঘটেছিল সেগুলির মধ্যে 'সাঁওতাল বিদ্রোহ' বা 'সাঁওতাল হুল' সবথেকে ভয়াবহ ও জঙ্গি ছিল । সাঁওতালি ভাষায় বিদ্রোহকে হুল বলা হয় । সাঁওতালগণ