সাময়িক বায়ুপ্রবাহ (Periodical wind)

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 08/18/2012 - 10:34

সাময়িক বায়ু (The Periodic Winds) : দিনের বিভিন্ন সময়ে এবং বছরের বিভিন্ন ঋতুতে স্থল ও জলভাগের বায়ুর উষ্ণতা ও বায়ুচাপের পার্থক্যের ফলে সাময়িকভাবে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে সাময়িক বায়ু বলে । এই বায়ু কয়েক প্রকারের হয়, যেমন— (১) স্থলবায়ু, (২) সমুদ্র বায়ু, (৩) মৌসুমি বায়ু এবং (৪) উপত্যকা বায়ু ও পার্বত্য বায়ু ।

(১) স্থলবায়ু (Land Breeze) : যে বায়ু স্থলভাগ থেকে সমুদ্র, হ্রদ অথবা বিস্তৃত জলভাগের দিকে সাধারণত সন্ধ্যার পর প্রবাহিত হয়, তাকে স্থলবায়ু বলে ।

(i) স্থলভাগ ও জলভাগের প্রকৃতিগত তারতম্যের কারণে সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে জলভাগ অপেক্ষা স্থলভাগ দ্রুত উত্তপ্ত বা শীতল হয় । সন্ধ্যার পর জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হয়ে পড়ে, ফলে সেখানকার বায়ুও শীতল ও ভারী হয়ে থাকে । ফলে সেখানে উচ্চচাপ বিরাজ করে । সমুদ্রের জল দ্রুত তাপ বিকিরণ করতে পারে না ।  সারাদিনের তাপ সঞ্চয় করে সমুদ্রের জল তখনও গরম থাকে, ফলে সমুদ্রের ওপরের বায়ুতে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় । ফলে স্থলভূমির উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে বায়ু সমুদ্রের নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে । স্থলভাগ থেকে এই বায়ু সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয় বলে এই বায়ুকে স্থলবায়ু বলে ।

(ii) স্থলবায়ু সাধারণত সন্ধ্যার পর থেকে প্রবাহিত হলেও জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ তাপবিকিরণ করে দ্রুত শীতল হওয়ার জন্য মধ্যরাত্রির পর থেকে স্থলভাগের বায়ুতে উচ্চচাপের পরিমাণও ক্রমশ বাড়ে, এই জন্য মধ্যরাত্রি থেকে ভোররাত্রির মধ্যে স্থলবায়ু সবচেয়ে বেশি বেগে প্রবাহিত হয় ।

(২) সমুদ্র বায়ু (Sea Breeze) : যে বায়ু সাধারণত দিনের বেলায় সমুদ্র, হ্রদ অথবা বিস্তৃত জলভাগ থেকে স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়, তাকে সমুদ্রবায়ু বলে । 

(i) জলভাগ ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয় ও ধীরে ধীরে শীতল হয় । কিন্তু স্থলভাগ দ্রুত উত্তপ্ত হয় ও দ্রুত শীতল হয় । দিনের বেলায় স্থলভাগ জলভাগের তুলনায় বেশি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে । গরম স্থলভাগের সংস্পর্শে এসে স্থলভাগ সংলগ্ন বায়ুও গরম এবং হালকা হয়ে ওপরে উঠে যেতে থাকে, ফলে সেখানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় । স্থলভাগের তুলনায় জলভাগ অপেক্ষাকৃত কম উত্তপ্ত হওয়ায় সেখানকার ঠান্ডা ও উচ্চচাপের বায়ু তখন উত্তপ্ত স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে ।

(ii) সমুদ্রবায়ু সাধারণত দিনের বেলায় প্রবাহিত হয় ।

(iii) সারাদিনের সূর্যতাপ গ্রহণ করে সন্ধ্যার সময় ভূপৃষ্ঠ সেই তাপ বিকিরণ করতে শুরু করে সেজন্য সন্ধ্যাবেলায় স্থলভাগের নিম্নচাপের পরিমাণ আরও বাড়ে । ফলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রবায়ুর বেগ ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে সবচেয়ে বেশি বেগে সমুদ্রবায়ু প্রবাহিত হতে থাকে ।

(iv) সমুদ্রবায়ুর প্রভাবে সমুদ্রোপকূল বা বিস্তৃত জলভাগের তীরবর্তী অঞ্চলে সমভাবাপন্ন বা নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু দেখা যায় ।

(৩) মৌসুমি বায়ু (Monsoon Winds) : আরবি ভাষায় 'মৌসম' শব্দের অর্থ হল ঋতু । ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মহাদেশ ও সমুদ্রের জলভাগের মধ্যে বায়ুর উষ্ণতা ও বায়ুচাপের পার্থক্যের কারণে যে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়, তাকে মৌসুমি বায়ু বলে । এই বায়ু ঋতুভেদে সম্পূর্ণ বিপরীত দিক থেকে প্রবাহিত হয় । মৌসুমী বায়ু হল প্রকৃতপক্ষে স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ুর বৃহৎ সংস্করণ । ভারত সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকার গিনি উপকূল প্রভৃতি অঞ্চলে এই বায়ু প্রবাহিত হয় । গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারতের সর্বাধিক বৃষ্টিপাত হয় বলে ভারতকে 'মৌসুমি বায়ুর দেশ' বলে ।

(i) উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে দক্ষিণের জলভাগ থেকে উচ্চচাপের বায়ু উত্তরের স্থলভাগের নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হয় । এই বায়ুকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বলে ।

(ii) শীতকালে উত্তর গোলার্ধের স্থলভাগের উচ্চচাপ থেকে বায়ু দক্ষিণের জলভাগের নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হয় । একে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু বলে ।

(iii) উষ্ণমণ্ডলে পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত এক বিশাল স্থলভাগের দক্ষিণে এক বিপুল জলভাগের অবস্থান, অথবা বিস্তীর্ণ এক জলভাগের উত্তরে এক বিরাট স্থলভাগের অবস্থান, মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টির প্রধান কারণ ।

(৪) উপত্যকা বায়ু ও পার্বত্যবায়ু (Anabatic winds and Katabatic winds) : পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির বন্ধুরতা ও উষ্ণতার তারতম্যের কারণে এক প্রকারের সাময়িক বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয় । দিনের বেলা সূর্যের তাপে পার্বত্য উপত্যকা অঞ্চলের বায়ু উষ্ণ হয়ে উঠে । তখন এই উষ্ণ বায়ু উপত্যকার ঢাল বরাবর পর্বতের উপরের দিকে প্রবাহিত হয় । এই উষ্ণ ঊর্ধ্বগামী বায়ুপ্রবাহকে উপত্যকা বায়ু বলে । আবার রাত্রিকালে পর্বতের ওপরের অংশের বায়ু দ্রুত তাপ বিকিরণ করে শীতল ও ভারী হয়ে পর্বতের ঢাল বেয়ে উপত্যকার নীচে নেমে আসে । এই শীতল নিম্নগামী বায়ুকে পার্বত্য বায়ু বলে ।

গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু :-

(i) গ্রীষ্মকালে উত্তর গোলার্ধে কর্কটীয় অঞ্চলে সূর্য প্রায় লম্বভাবে কিরণ দেয় । ফলে  দক্ষিণ এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা, মেক্সিকো প্রভৃতি দেশগুলোর স্থলভাগ জলভাগের তুলনায় বেশি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে ও হালকা হয়ে উপরে উঠে যায় । এর ফলে স্থলভাগে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় । এই সময়ে দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল ও সূর্য সেখানে বাঁকা ভাবে কিরণ দেয় বলে দক্ষিণ গোলার্ধে সূর্যের তাপ কম পড়ে এবং সেখানে উচ্চচাপ বিরাজ করে । এই উচ্চচাপ কেন্দ্র থেকে বায়ু উত্তরের স্থলভূমির নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে প্রবল বেগে প্রবাহিত হতে থাকে । এই বায়ুকেই উত্তর গোলার্ধে “গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু” বলে ।

(ii) পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্য ফেরেলের সুত্র অনুসারে এই বায়ুপ্রবাহ একটু ডানদিকে বেঁকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে থেকে প্রবাহিত হয় । এই জন্য গ্রীষ্মের মৌসুমি বায়ুকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমিবায়ুও বলা হয় ।

(iii) গ্রীষ্মের মৌসুমি বায়ু সমুদ্রের ওপর দিয়ে আসে বলে এতে প্রচুর জলীয় বাষ্প থাকে । এজন্য যেসব দেশের ওপর দিয়ে এই বায়ু প্রবাহিত হয় সেইসব দেশে এই বায়ুর প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় ।

(iv) আরব সাগর থেকে প্রবাহিত মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারতের পশ্চিম উপকূলে এবং বঙ্গোপসাগর থেকে প্রবাহিত মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, বাংলাদেশ ও মায়ানমারে প্রবল বৃষ্টিপাত হয় । প্রশান্ত মহাসাগর থেকে প্রবাহিত মৌসুমি বায়ু চিন, জাপান, কোরিয়া, ইন্দোচিন প্রভৃতি দেশে প্রবাহিত হয় ।

শীতকালীন মৌসুমিবায়ু:- শীতকালে স্থলভাগ ও সমুদ্রের মধ্যে উষ্ণতার পার্থক্যজনিত বায়ুচাপের পার্থক্যে শীতকালীন মৌসুমি বায়ুর সৃষ্টি হয় ।

(i) শীতকালে সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখা থেকে সরে গিয়ে মকরক্রান্তিরেখার ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয় । এই সময়ে উত্তর গোলার্ধে সূর্যরশ্মি বাঁকাভাবে পড়ে । সূর্যের তাপ কম হওয়ার জন্য উত্তর গোলার্ধে তখন শীতকাল । বায়ুর তাপ কম হওয়ার জন্য সেখানে উচ্চচাপ বিরাজ করে । কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে তখন জলভাগ স্থলভাগের থেকে বেশি উত্তপ্ত থাকে, ফলে সমুদ্রের ওপর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় । এই সময় স্থলভাগ থেকে উচ্চচাপের শীতলবায়ু দক্ষিণের নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে । ফেরেলের সুত্র অনুসারে এই বায়ু উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত হওয়ার সময় একটি বাঁ-দিকে বেঁকে যায় । এই বায়ু তখন উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয় । তাই এই শীতকালীন মৌসুমিবায়ুকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বলে । জাপান, উত্তর চিন প্রভৃতি দেশের ওপর দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে এই মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয় ।

(ii) স্থলভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে শীতের মৌসুমি বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম থাকায়, সাধারণত এই বায়ুপ্রবাহের ফলে বৃষ্টিপাত হয় না । তবে এই বায়ুপ্রবাহ বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় প্রচুর জ্বলীয়বাষ্প সংগ্রহ করে নিয়ে যায় । ফলে শীতকালীন মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের প্রভাবে তামিলনাড়ু, শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি স্থানে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় ।

(iii) উত্তর গোলার্ধে যখন শীতকাল দক্ষিণ গোলার্ধে অস্ট্রেলিয়ায় তখন গ্রীষ্মকাল এবং সেখানে বায়ুর নিম্নচাপ বিরাজ করে । তখন উত্তর-পূর্ব মৌসুমিবায়ু আরও দক্ষিণে এগিয়ে গিয়ে নিরক্ষরেখা অতিক্রম করলে ফেরেলের সূত্র অনুসারে দক্ষিণ গোলার্ধে বাঁ-দিকে বেঁকে যায় এবং উত্তর-পশ্চিম মৌসুমিবায়ু রূপে অস্ট্রেলিয়ার দিকে প্রবাহিত হয় এবং অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পশ্চিমাংশে বৃষ্টিপাত ঘটায় ।

ভূপৃষ্ঠে প্রধানত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভারত, বাংলাদেশ, মায়নামার,  শ্রীলঙ্কা, লাওস, কাম্পুচিয়া, ভিয়েতনাম, চিন, জাপান, প্রভৃতি দেশে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব দেখা যায় । তাই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশগুলিকে মৌসুমিবায়ুর দেশ বলা হয় । এছাড়া উত্তর আমেরিকার মেক্সিকো উপকূল, আফ্রিকার গিনি উপকূল, অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূল  প্রভৃতি অঞ্চলেও মৌসুমি বায়ুর প্রভাব দেখা যায় ।

*****

Related Items

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ (Causes of Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ (Causes of Ocean Currents) : সমুদ্রস্রোত বিভিন্ন কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে । এই কারণগুলি হল— (১) পৃথিবীর আবর্তন, (২) নিয়ত বায়ুপ্রবাহ, (৩) সমুদ্রজলের উষ্ণতা, (৪) সমুদ্রজলের ও লবণত্ব ও ঘনত্বের তারতম্য, (৫) বরফের গলন , (৬) উপকূলের আ

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents) : সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে, নির্দিষ্ট দিকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয় । সমুদ্রজলের এই প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে । সমুদ্রস্রোত সাধারণত একমুখী হয় । বায়ুপ্রবাহ দ্বারা তাড়িত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয় বলে এর গতিব

বারিমন্ডল (Hydrosphere)

বারিমন্ডল (Hydrosphere) : সৃষ্টির প্রথম অবস্থায় পৃথিবী ছিল এক উত্তপ্ত জ্বলন্ত মণ্ডল । ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তরল অবস্থায় আসে এবং অবিরাম তাপ বিকিরণ করে পৃথিবী ক্রমশ শীতল ও সংকুচিত হয় । আর সংকোচনের ফলে ভূপৃষ্ঠের গায়ে উঁচুনীচু আবরণের সৃষ্টি হয় । এই সম

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world)

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world) : পৃথিবীর যে সকল অঞ্চলে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মোটামুটি একই ধরনের বা সমধর্মী জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়, সেই সকল অঞ্চলকে এক-একটি জলবায়ু অঞ্চল বলা হয় । পৃথিবীর মুখ্য জলবায়ু অঞ্চলগুলি হল —

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall)

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall) : উৎপত্তির কারণ ও বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য অনুসারে বৃষ্টিপাতকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যথা:- (১) পরিচলন বৃষ্টিপাত, (২) শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত এবং (৩) ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত ।