মুখ্য জোয়ার, গৌণ জোয়ার ও ভাটা (Primary Tide, Secondary Tide and Low Tide)

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 10/21/2021 - 18:18

মুখ্য জোয়ার (Primary or Direct Tide) : পৃথিবী যেমন তার অক্ষ বা মেরুদণ্ডের ওপর আবর্তন করে তেমনিই চাঁদও পৃথিবীর চারদিকে সর্বদা পরিক্রমণ করছে । পৃথিবীর আবর্তনের ফলে পৃথিবী পৃষ্ঠের যে স্থান ঠিক চন্দ্রের সামনে এসে উপস্থিত হয়, সেখানে চন্দ্রের আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হওয়ার জন্য সেখানে প্রবল টান অনুভূত হয় । স্থলভাগের চেয়ে তরল জলভাগের ওপর আকর্ষণশক্তির কার্যকারিতা অনেক বেশি । তাই সেখানকার জলরাশি চন্দ্রের আকর্ষণে স্ফীত হয়ে ওঠে এবং পৃথিবীর অন্যান্য স্থানের জলভাগ থেকেও কিছু জল ওই স্থানে চলে আসে । ফলে পৃথিবী পৃষ্ঠের ওই অংশে জোয়ারের সৃষ্টি হয় । এভাবে চন্দ্রের আকর্ষণে যেখানে যে জোয়ার হয় তাকে মুখ্য জোয়ার বা প্রত্যক্ষ জোয়ার বলে । চাঁদের আকর্ষণে এই জোয়ারের সৃষ্টি হয় বলে, একে চান্দ্র জোয়ার নামেও অভিহিত করা হয় । পূর্ণিমা তিথিতে চন্দ্রের আকর্ষণ স্থলের বিপরীত দিকে সূর্যের আকর্ষণেও এইরকম মুখ্য জোয়ার হয় ।

গৌণ জোয়ার (Secondary or Indirect Tide) : চন্দ্র যেখানে আকর্ষণ করে মুখ্য জোয়ার সৃষ্টি করেছে, ঠিক সেই সময়ে চন্দ্রের বিপরীত দিকে প্রতিপাদ স্থানে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব কম হয় বলে বিপরীত দিকে অবস্থিত জলরাশি প্রধানত পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রবল কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে স্ফীত হয়ে জোয়ার সৃষ্টি করে । তখন তাকে গৌণ জোয়ার বা পরোক্ষ জোয়ার বলে । এছাড়া পৃথিবীর যে অংশে মুখ্য জোয়ার হয় ঠিক তার বিপরীত দিকের স্থলভাগ জলভাগের চেয়ে চন্দ্রের বেশি কাছে থাকে । চাঁদ থেকে ওই স্থানের জলভাগের দূরত্ব বেশি হওয়ায় জলের ওপর চাঁদের আকর্ষণ কমে যায় ফলে পৃথিবীর আবর্তনের দ্বারা সৃষ্ট প্রবল কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে সেখানকার জলও ফুলে উঠে গৌণ জোয়ারের সৃষ্টি করে । সুতরাং একই সময়ে পৃথিবীর দুটি বিপরীত প্রান্তে একই সঙ্গে জোয়ারের সৃষ্টি হয় ।

ভাটা (Low Tide) : মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের স্থানে অধিক জলরাশি চলে যাওয়ায় তাদের মধ্যবর্তী সমকোণে অবস্থিত স্থানে জলরাশি কমে গিয়ে জলতল নেমে যায় । ফলে ওই দুই স্থানে ভাটার সৃষ্টি হয় ।

*****

Comments

Related Items

মেঘমুক্ত রাত্রি থেকে মেঘাচ্ছন্ন রাত্রি বেশি উত্তপ্ত হয় কেন ?

প্রশ্ন : মেঘমুক্ত রাত্রি থেকে মেঘাচ্ছন্ন রাত্রি বেশি উত্তপ্ত হয় কেন ?

থর মরুভূমিতে শীত ও গ্রীষ্মের পার্থক্য খুব বেশি কেন ?

প্রশ্ন : থর মরুভূমিতে শীত ও গ্রীষ্মের পার্থক্য খুব বেশি কেন ?

নিম্নলিখিত কারণগুলির জন্য মরুভূমি অঞ্চলে শীত ও গ্রীষ্মের উষ্ণতার পার্থক্য বেশি হয়—

ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে বায়ুর চাপ ক্রমশ কমে কেন ?

প্রশ্ন : ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে বায়ুর চাপ ক্রমশ কমে কেন ?

ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে বায়ুর চাপ ক্রমশ কমে যায়, কারণ—

অক্ষাংশের তারতম্যে পৃথিবীপৃষ্ঠে উষ্ণতার তারতম্যের কারণ ব্যাখ্যা কর ।

প্রশ্ন :- অক্ষাংশের তারতম্যে পৃথিবীপৃষ্ঠে উষ্ণতার তারতম্যের কারণ ব্যাখ্যা কর

ভূপৃষ্ঠের সব স্থানে এবং সব সময়ে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা একই রকম থাকে না । অক্ষাংশ ভেদে পৃথিবীপৃষ্ঠে উষ্ণতার তারতম্য ঘটে, যেমন—

একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে বরফ জমে না, অথচ ল্যাব্রাডর উপকূলে বরফ জমে — এর কারণ কী ?

প্রশ্ন : একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে বরফ জমে না, অথচ ল্যাব্রাডর উপকূলে বরফ জমে — এর কারণ কী ?