অক্ষাংশের তারতম্যে পৃথিবীপৃষ্ঠে উষ্ণতার তারতম্যের কারণ ব্যাখ্যা কর ।

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 12/30/2021 - 16:59

প্রশ্ন :- অক্ষাংশের তারতম্যে পৃথিবীপৃষ্ঠে উষ্ণতার তারতম্যের কারণ ব্যাখ্যা কর

ভূপৃষ্ঠের সব স্থানে এবং সব সময়ে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা একই রকম থাকে না । অক্ষাংশ ভেদে পৃথিবীপৃষ্ঠে উষ্ণতার তারতম্য ঘটে, যেমন—

(ক) সূর্যরশ্মি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতার প্রধান উৎস হলেও, অক্ষাংশ অনুসারে সূর্যকিরণ ভূপৃষ্ঠে কোথাও লম্বভাবে এবং কোথাও তির্যক ভাবে পড়ে ।

(খ) লম্বভাবে পতিত রশ্মির তুলনায় তির্যকভাবে পতিত রশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ কম হয় ।

(গ) নিরক্ষরেখার ওপর প্রায় সারা বছর ধরে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে ।

(ঘ) নিরক্ষরেখা থেকে যতই উত্তর বা দক্ষিণ মেরুর দিকে যাওয়া যায় ততই সূর্যরশ্মি পৃথিবীপৃষ্ঠে তির্যক ভাবে পড়তে থাকে যার ফলে নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে উভয় মেরুর দিকে উত্তাপ ক্রমশ কমতে থাকে ।

(ঙ) সাধারণত, নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর বা দক্ষিণে প্রতি ১ অক্ষাংশের তফাতে ০.২৮ সেলসিয়াস হারে উষ্ণতা কমে যায় ।

(চ) নিরক্ষরেখার উভয় দিকে ২৩½ অক্ষাংশ পর্যন্ত স্থান গ্রীষ্মমণ্ডল বা উষ্ণমণ্ডলের অন্তরর্গত । এই অঞ্চলে দিনের দৈর্ঘ্যের বিশেষ কোনো পার্থক্য দেখা যায় না এবং প্রত্যেক স্থানে সূর্যরশ্মি বছরে দুদিন মধ্যাহ্নে লম্বভাবে পতিত হয় । এইজন্য সারা বছর ধরে এই অঞ্চল পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় উষ্ণ থাকে ।

(ছ) নিরক্ষরেখার উত্তর ও দক্ষিণে ২৩½ থেকে ৬৬½ অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলের অন্তরর্গত । এই অঞ্চল গ্রীষ্মে খুব একটা উষ্ণ বা শীতে খুব একটা শীতল হয় না ।

(জ) দুই মেরুর চতুর্দিকে ৬৬½ থেকে ৯০ অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল হিমমণ্ডলের অন্তরর্গত । এই অঞ্চলে সূর্যরশ্মি সবচেয়ে তির্যকভাবে পড়ে । এই অঞ্চলের সর্বত্রই বছরে অন্তত একদিন আকাশে সূর্যকে দেখাই যায় না । এই সমস্ত কারণে এই অঞ্চল দুটি অত্যন্ত শীতল ।

*****

প্রশ্ন : নিরক্ষরেখা থেকে একটি দ্রাঘিমা রেখা বরাবর মেরুপ্রদেশ পর্যন্ত গেলে জলবায়ুর পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করা যায় কেন ?

নিরক্ষরেখা থেকে একটি দ্রাঘিমা বরাবর মেরু অঞ্চল পর্যন্ত গেলে অক্ষাংশ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা ক্রমশ কমতে থাকে, কারণ,  উষ্ণতা হল আবহাওয়া ও জলবায়ুর অন্যতম প্রধান উপাদান । জলবায়ুর অন্য সব উপাদান উষ্ণতার ওপরই অনেকাংশে নির্ভর করে । অক্ষাংশের পরিবর্তন হলে উষ্ণতার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাই জলবায়ুরও পরিবর্তন হয় ।

নিরক্ষরেখা থেকে একটি দ্রাঘিমারেখা বরাবর মেরু অঞ্চল পর্যন্ত গেলে প্রথমে উষ্ণমন্ডলের উষ্ণ জলবায়ু এবং তার পর নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলের মৃদুভাবাপন্ন জলবায়ু এবং তারপরে হিমমণ্ডলের অতি শীতল জলবায়ু দেখা যাবে ।

*****

Comments

Related Items

কাবেরী নদী (The Kaveri)

কাবেরী নদী (The Kaveri) : কর্ণাটক রাজ্যের তালাকাভেরি উচ্চভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে কাবেরী নদী কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মধ্য দিয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । কাবেরী নদীর দৈর্ঘ্য ৭৬৫ কিমি.

কৃষ্ণা নদী (The Krishna)

কৃষ্ণা নদী (The Krishna) : পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মহাবালেশ্বরের শৃঙ্গের কিছুটা উত্তরে প্রায় ১৪০০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর কৃষ্ণা নদী দক্ষিণ-পূর্বে তেলেঙ্গানা ও অন্ধপ্রদেশ রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিশাল বদ্বীপ সৃষ্টি করে

গোদাবরী নদী (The Godavari)

গোদাবরী নদী (The Godavari) : গোদাবরী নদী 'দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা' নামে পরিচিত । মহারাষ্ট্রের ব্রম্ভগিরি পাহাড়ের ত্র্যম্বক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে এবং পরে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ

মহানদী (The Mahanadi)

মহানদী (The Mahanadi) : ছত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুর জেলার দক্ষিণাংশের সিয়াওয়া মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্য অতিক্রম করার পর বদ্বীপ সৃষ্টি করে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । মহানদী

তাপী নদী (The Tapti)

তাপী বা তাপ্তি নদী (The Tapti) : মধ্যপ্রদেশের মহাদেব পর্বতের মুলতাই উচ্চভূমির প্রায় ৭৭০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হয়ে তাপী নদী মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ওপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে সাতপুরা ও অজন্তার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত