বায়ুপ্রবাহের কাজ ও কাজ করার পদ্ধতি

Submitted by avimanyu pramanik on Wed, 05/23/2012 - 08:36

বায়ুর কাজ (Work of Wind) : বায়ুপ্রবাহের প্রধান কাজ ক্ষয়সাধন করা । বায়ু প্রবাহ সহজেই বালুকণাকে উপরে তুলে উড়িয়ে নিয়ে যায় ।  ভূমি বা মাটির কাছাকাছি বায়ু প্রবাহের গতিবেগ কম হয় । কারণ ভূমির সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে কিছু শক্তি কমে যায় । আবার মাটি থেকে বেশি উপরে বায়ুতে বালুর পরিমাণ কমে যাওয়ার দরুন বায়ু প্রবাহের ক্ষয় করার শক্তি কম হয় । তাই এর মাঝামাঝি জায়গায় অর্থাৎ মাটি থেকে মিটার খানেক উপরে বায়ুপ্রবাহের ক্ষয় করার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি হয় । কারণ এই অংশে একদিকে বায়ুপ্রবাহের গতি বেগ থাকে বেশি, আবার অপরদিকে বায়ুতে বালুকণার পরিমাণ ও থাকে বেশি । সেই জন্য ভূমির কিছু উপরে দন্ডায়মান পাথরের স্তুপ বা শিলাময় ভূমির ক্ষয় বেশি হয় । এর ফলে নানা রকম ভূমিরূপের সৃষ্টি হয় ।

বায়ুপ্রবাহের কাজের ক্ষেত্র : মরুভূমি শুকনো বালির দেশ, গাছপালাহীন শূন্য প্রান্তর । সেখানে শিথিল বালুর উপর বায়ুপ্রবাহ সহজেই তার শক্তিকে কাজে লাগায় ও ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটায় ।

বায়ুপ্রবাহের কাজ করার পদ্ধতি:  বায়ুপ্রবাহ প্রধানত তিনভাবে কাজ করে ; যথা- (ক) অপসারণ,  (খ) অবঘর্ষণ,  (গ) ঘর্ষণ  ।

(ক) অপসারণ (Deflation) : শিথিল বালিকে বাতাসের সঙ্গে তুলে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়াকে অপসারণ বলে ।

(খ) অবঘর্ষণ (Abrasion) : বাযুস্থিত বালির আঘাতে শিলাস্থার ক্ষয় করার নাম অবঘর্ষণ ।  
(গ) ঘর্ষণ (Attrition) : বায়ুস্থিত শিলাকণার পরস্পর সংঘর্ষের নাম ঘর্ষণ বায়ু একদিকে শিলাস্থর ক্ষয় করে এবং অন্যদিকে শিলাধূলি ও বালি বহন ও অবক্ষেপন করে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটায় ।  

*****

Related Items

খাঁড়ি

খাঁড়ি : উৎস থেকে বিচ্ছিন্ন, অধিক প্রশস্ত এবং সমুদ্রের লবণাক্ত জলে পূর্ণ নদীমুখকে খাঁড়ি বলে । জোয়ারের সময় সমুদ্রের জল খাঁড়ি দিয়ে নদীর উজানের দিকে এগিয়ে যায় । ভাটার সময় সেই জল আবার সমুদ্রে ফিরে আসে । খাঁড়ির দৈর্ঘ্য খুব বেশি না হলেও এরূপ নদীর মোহানা যথেষ্ট প্রশস্ত হয় । খাঁড়ি

স্বাভাবিক বাঁধ (Natural Levee)

স্বাভাবিক বাঁধ (Natural Levee) : সমভূমি প্রবাহে ও বদ্বীপ প্রবাহে নদীর সঞ্চয়কাজের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, তাদের মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ হল স্বাভাবিক বাঁধ । সমভূমি প্রবাহে নদীর বহন ক্ষমতা একেবারে কমে যায় বলে নদীবাহিত পলি, বাল

প্লাবনভূমি (Flood Plain)

প্লাবনভূমি (Flood Plain) : নদী মধ্যপ্রবাহ থেকে মোহনার দিকে যতই অগ্রসর হতে থাকে, ততই নদীর স্রোতের বেগ কমতে থাকে । স্রোতের বেগ কমে যাওয়ায় নদীবাহিত শিলাচূর্ণ, নুড়ি, কাদা, পলি, বালি, প্রভৃতি নদী গর্ভে ও নদীর দুই তীরে জমা হতে থাকে । ফলে নানা রকম ভূমিরূপ গড়ে

অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ (Ox-bow lake)

অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ (Ox-bow lake) : নদীর মধ্যগতির শেষের দিকে এবং নিম্নগতিতে নদীর ক্ষয়কাজ ও সঞ্চয়কাজের ফলে যে সমস্ত রকম ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ হল তাদের মধ্যে অন্যতম । সমভূমি প্রবাহে নদী এঁকে-বেঁকে প্রবাহিত হলে নদীর জলস্রোত বাঁকের মুখে ক

নদীবাঁক (Meander)

নদী বাঁক (Meander) : নদীর মধ্যগতিতে সমভূমির উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় যে সমস্ত রকম ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, নদী বাঁক [Meander] হল তাদের মধ্যে অন্যতম । তুরস্কের বাঁকবহুল 'মিয়েন্ড্রেস' নদীর নামানুসারে এই ভূমিরূপের নামকরণ হয় 'মিয়েন্ডার' ।