বান ডাকা (Tidal Bores)

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 11/09/2013 - 10:12

বান ডাকা (Tidal Bores) : সাধারণত বর্ষাকালে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার ভরা কোটালের সময় চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণে জোয়ারের জল নদীর খাড়িপথ ও মোহনা দিয়ে খুব উঁচু হয়ে প্রবল বেগে উজানের দিকে অর্থাৎ নদী প্রবাহের বিপরীত দিকে অগ্রসর হয় । ঢেউ, জলোচ্ছ্বাসসহ নদীর এই সগর্জন বিপরীত প্রবাহকে বান ডাকা বলে । পশ্চিমবঙ্গের হুগলি, মেঘনা, চিনের ইয়াং-সি-কিয়াং, দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদী, ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের টেমস প্রভৃতি নদী-মোহনায় বর্ষাকালে ভরা কোটালের মাত্রা অনেক সময় ৬-৯ মিটারের মতো উঁচু হয় । এই সময় নদীতে স্নান অথবা নৌ-চালনা করা অত্যন্ত বিপজ্জনক । এই ঢেউ ফেনিল তরঙ্গের আকারে ঘন্টায় কয়েক কিলোমিটার বেগে অগ্রসর হয় । 

বান সৃষ্টির কারণ :-

(১) নদীর মোহনার কাছে বালির চড়া থাকলে,

(২) নদীতে প্রবাহিত জলের পরিমাণ বেশি হলে এবং

(৩) নদীর মোহনা ফানেল বা শঙ্কু আকৃতির হলে নদীতে বান খুব প্রবল হয় ।

ষাঁড়াষাঁড়ির বান : ষাঁড়াষাঁড়ি বান হল বিশেষ একটি নদীর বিশেষ সময়ের বান । বর্ষাকালে হুগলি নদীতে ভরা জোয়ারের সময় নদীর গতিপথের বিপরীত দিকে ভীষণ গর্জন করে যে প্রবল বান আসে তাকে ষাঁড়াষাঁড়ি বান বলে । বর্ষার সময় সাধারণত জুলাই-আগস্ট মাসে হুগলি নদীতে এমনিতেই জলপ্রবাহ খুব বেশি থাকে । এই সময় হুগলি নদীতে যে প্রবল বান আসে তার জন্য হুগলি নদীর জল প্রায় ৭-৮ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে ওঠে । দুটি প্রাপ্ত বয়ষ্ক ষাঁড়ের মধ্যে লড়াইয়ের সময় যে প্রবল গর্জন শোনা যায়, এই বান আসার সময় অনেকটা ওই রকম আওয়াজ পাওয়া যায় বলে একে ষাঁড়াষাঁড়ি বান বলা হয় ।

*****

Related Items

অধঃক্ষেপণ (Precipitation)

অধঃক্ষেপণ (Precipitation) : সূর্যের উত্তাপে ভূপৃষ্ঠের সমুদ্র, হ্রদ, নদী, পুকুর, খাল, বিল প্রভৃতি জলরাশি থেকে জল জলীয়বাষ্পে পরিণত হয় । জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাস হাল্কা হওয়ার দরুন ঊর্ধগামী হয় । উপরের বায়ুমণ্ডলের প্রবল শৈত্যের সংস্পর্শে এলে ঘনিভবনের ফলে জলীয়বাষ

ঘনীভবন (Condensation)

ঘনীভবন (Condensation) : যে প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প জলকণায় পরিণত হয়, তাকে ঘনীভবন বলে । আর্দ্র বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কের নীচে নেমে গেলে বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণায় পরিণত হয় । এই জলকণাসমূহ বিভিন্ন

বায়ুর আর্দ্রতা (Humidity)

বায়ুর আর্দ্রতা (Humidity) : বায়ুতে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিকে বা জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাসকে বায়ুর আর্দ্রতা বলে । বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকলে তাকে আর্দ্র বায়ু এবং কম থাকলে তাকে শুষ্ক বায়ু বলে । বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা প্রধানত বায়ুর উষ

বায়ুর আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ (Humidity and Precipitation)

বায়ুর আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ (Humidity and Precipitation):

বায়ুপ্রবাহের পরিমাপ

বায়ুপ্রবাহের পরিমাপ : বায়ু কোনদিক থেকে প্রবাহিত হচ্ছে, তা বাতপতাকার (Windvane)-এর সাহায্যে সহজেই নির্ণয় করা যায় । অ্যানিমোমিটার (Anemometer) নামক যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ পরিমাপ করা হয় । বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ মাপার একক হল নট (১ নট = ১.৮ ক