জোয়ার ভাটার সময়ের ব্যবধান

Submitted by avimanyu pramanik on Fri, 10/22/2021 - 10:56

জোয়ার ভাটার সময়ের ব্যবধান : পৃথিবীর আবর্তন গতি ও পৃথিবীকে কেন্দ্র করে চাঁদের পরিক্রমণ গতির ওপর জোয়ার ভাটার উৎপত্তি নির্ভর করে । ভূপৃষ্ঠের যে স্থানে যখন মুখ্য জোয়ার হয়, তার প্রতিপাদস্থানে তখন গৌণ জোয়ার হয় । আবর্তন গতির ফলে পৃথিবীর যে স্থানে যখন মুখ্য জোয়ার হয়, তার ঠিক ১২ ঘন্টা পরে সেই স্থানের প্রতিপাদস্থানটি চাঁদের সামনে উপস্থিত হওয়ার কথা । কিন্তু এই সময়কালে চাঁদও তার গতিপথে একই দিকে কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার ফলে ১২ ঘন্টার কিছু সময় পরে সেই প্রতিপাদস্থানটি চাঁদের সামনে উপস্থিত হয় । তখন সেখানে চাঁদের আকর্ষণে মুখ্য জোয়ার এবং একই সঙ্গে তার প্রতিপাদস্থানে গৌণ জোয়ার হয় । এইভাবে পৃথিবীর প্রতিটি স্থানে দিনে দু-বার অর্থাৎ একবার মুখ্য জোয়ার ও একবার গৌণ জোয়ার এবং অনুরূপভাবে দু-বার ভাটা সংঘটিত হয় । তবে চাঁদের পরিক্রমণ গতির কারণে পৃথিবীর কোনো একটি স্থানে একবার মুখ্য জোয়ার ও তার পরবর্তী মুখ্য জোয়ারের সময়ের ব্যবধান হয় ২৪ ঘন্টা ৫২ মিনিট । চন্দ্র যদি স্থির থাকত, তাহলে পৃথিবীর প্রতিটি স্থান 24 ঘন্টা অন্তর একবার চন্দ্রের সামনে আসত এবং সেখানে মুখ্য জোয়ার হত । কিন্তু চন্দ্রও নিজের কক্ষে অবস্থান করে পশ্চিম থেকে পূর্বে 27 দিনে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করে । পৃথিবী গোলক বলে তার পরিধির কৌণিক পরিমাণ 360° । এই 360° প্রদক্ষিণ করতে চন্দ্রের 27 দিন সময় লাগে । সুতরাং পৃথিবীর একবার আবর্তনের সময়ে (অর্থাৎ 24 ঘন্টায়) চন্দ্র নিজের কক্ষপথের প্রায় (360° ÷ 27 = 13.3°) 13° পথ এগিয়ে যায় । এই পথ যেতে পৃথিবীর আরও (13° x 4 = 52) 52 মিনিট সময় লাগে । সেইজন্য পৃথিবীর কোনো জায়গায় একটি মুখ্য জোয়ারের পর পরবর্তী মুখ্য জোয়ার ঠিক 24 ঘন্টা পরে না এসে 24 ঘন্টা 52 মিনিট পরে আসে ।

এই হিসাবে পৃথিবীর প্রতিটি স্থানে দিনে—

(i) একটি মুখ্য জোয়ার ও একটি গৌণ জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হয় ১২ ঘন্টা ২৬ মিনিট । এবং

(ii) প্রতিটি স্থানে জোয়ারের ৬ ঘন্টা ১৩ মিনিট পরে ভাটা হয় ।

****

Comments

Related Items

আউট-ওয়াস সমভূমি ও প্লায়া হ্রদ কাকে বলে উদাহরণ সহ লেখ

প্রশ্ন :- আউট-ওয়াস সমভূমিপ্লায়া হ্রদ কাকে বলে উদাহরণ সহ লেখ ।

উৎপত্তি ও গঠন অনুসারে তিন রকমের সঞ্চয়জাত সমভূমির বর্ণনা দাও

প্রশ্ন:- উৎপত্তি ও গঠন অনুসারে তিন রকমের সঞ্চয়জাত সমভূমির বর্ণনা দাও ।

উত্তর:  উৎপত্তি ও গঠন অনুসারে, সঞ্চয়জাত সমভূমিগুলিকে প্রধান তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথা—

সমভূমির বৈশিষ্ট্য কী ? উদাহরণসহ বিভিন্ন প্রকার সমভূমির বর্ণনা দাও

প্রশ্ন:- সমভূমির বৈশিষ্ট্য কী ? উদাহরণসহ বিভিন্ন প্রকার সমভূমির বর্ণনা দাও ।

দুটি উল্লেখযোগ্য মালভূমির বিবর্তন আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- দুটি উল্লেখযোগ্য মালভূমির বিবর্তন আলোচনা কর ।

ছোটনাগপুর মালভূমির বিবর্তন (ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি)

যে-কোনো তিন ধরনের মালভূমি ব্যাখ্যা কর ।

প্রশ্ন :- যে-কোনো তিন ধরনের মালভূমি ব্যাখ্যা কর ।

উত্তর :- 

১) ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্টি হওয়া মালভূমি, যেমন- পর্বতবেষ্টিত মালভূমি,