কোশ বিভাজন ও কোশ বিভাজনের তাৎপর্য

Submitted by arpita pramanik on Thu, 12/13/2012 - 12:33

কোশ বিভাজন (Cell Division)

আজ থেকে প্রায় ২৬০ কোটি বছর আগের ঘটনা । পৃথিবীতে জন্ম নিল প্রথম জীব । পৃথিবীর বুকে জাগল প্রাণের স্পন্দন । প্রথম সৃষ্টি হওয়া সেই জীব না ছিল উদ্ভিদ না কোন প্রাণী । জেলির মতো থকথকে খানিকটা প্রোটোপ্লাজম নিয়ে নির্দিষ্ট আকার ও আকৃতিবিহীন সেই জীবের দেহ গড়ে উঠেছিল । কালক্রমে সেই প্রোটোপ্লাজমকে ঘিরে এক আবরণ রচিত হল —সৃষ্টি হল এককোশী জীব । পরবর্তিকালে বহুকোশী জীবের উদ্ভব ঘটল, আর যে পদ্ধতিতে এককোশী জীব থেকে বহুকোশী জীবের উদ্ভব ঘটল, তা হল কোশ বিভাজনযে প্রক্রিয়ায় একটি কোশ থেকে দুটি নতুন কোশের সৃষ্টি হয় তাকে কোশ বিভাজন বলে । যে কোশটি বিভাজিত হয় তাকে জনিতৃ কোশ [parent cell] বলে এবং যে নতুন কোশ দুটি সৃষ্টি হয় তাদের অপত্য কোশ [daughter cells] বলে ।  সুতরাং জনিতৃ কোশ থেকে অপত্য কোশ সৃষ্টি হওয়ার পদ্ধতিকেই কোশ বিভাজন বলা যায়

সংজ্ঞা [Defination]:- যে জৈবিক পদ্ধতিতে একটি জনিতৃ-মাতৃকোশ বিভাজিত হয়ে দুই বা ততোধিক অপত্য কোশ সৃষ্টি হয়, তাকে কোশ বিভাজন বলা হয়

বিজ্ঞানী ওয়াল্টার ফ্লেমিং [W.Flemming] 1880 খ্রিস্টাব্দে স্যালামান্ডারের দেহে প্রথম কোশ বিভাজন (মাইটোসিস) প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করেন । বিজ্ঞানী বোভেরি [Boveri] 1887 খ্রিস্টাব্দে প্রথম অ্যাসকারিস -এর দেহে মিওসিস কোশ বিভাজন পর্যবেক্ষণ করেন ।

কোশ বিভাজনের তাৎপর্য (Significance of Cell Division)

কোশ বিভাজনের তাত্পর্য হল :

(১)  কোশ বিভাজনের ফলে জীবের আকার ও আয়তনের বৃদ্ধি হয় এবং বিভিন্ন অঙ্গের ক্রমবিকাশ ঘটে ।

(২)  ভ্রুণের পরিস্ফুটনের জন্য কোশ বিভাজনের প্রয়োজন ।

(৩)  কোশের জীর্ণ ও ক্ষয়প্রাপ্ত স্থান মেরামত অথবা ক্ষতস্থান পূরণেও কোশ বিভাজনের ভূমিকা রয়েছে ।

(৪)  জনন এবং বংশবিস্তারের জন্য কোশ বিভাজনের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে ।   

*****

Related Items

ডারউইনবাদের ব্যাখ্যা

ডারউইনের মতে, অত্যাধিক হারে বংশবৃদ্ধি করাই জীবের সহজাত বৈশিষ্ট্য । এর ফলে জ্যামিতিক ও গাণিতিক হারে জীবের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় । একটি স্ত্রী স্যালমন মাছ প্রজনন ঋতুতে প্রায় 3 কোটি ডিম পাড়ে । একটি ঝিনুক একবারে 12 কোটি ডিম্বাণু উত্পাদন করে ...

ডারউইনের তত্ত্ব ও প্রতিপাদ্য বিষয়গুলি

ডারউইনের মতে, অত্যধিক হারে বংশবৃদ্ধি করাই হল জীবের সহজাত বৈশিষ্ট্য । এর ফলে জ্যামিতিক ও গাণিতিক হারে জীবের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় । জীবের জ্যামিতিক ও গাণিতিক হারে সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটার জন্য এবং খাদ্য ও বাসস্থান সীমিত থাকায় বেঁচে থাকার জন্য জীবকে কঠিন প্রতিযোগিতার ...

অভিব্যক্তির তত্ত্বাবলি ও ল্যামার্কের তত্ত্ব

অভিব্যক্তির ফলে নতুন প্রজাতির অথবা একটি প্রজাতি থেকে অন্য একটি প্রজাতির উত্পত্তি হয় । অভিব্যক্তির কৌশল সম্পর্কে যেসব বিজ্ঞানী বিভিন্ন তত্ত্বাবলি প্রতিষ্ঠিত করেছেন তাঁদের মধ্যে ল্যামার্ক এবং ডারউইনের নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য । এখানে অভিব্যক্তির বিভিন্ন তত্ত্বাবলি ...

জীবাশ্মঘটিত বা প্রত্নজীববিদ্যা সংক্রান্ত প্রমাণ

ভূগর্ভের শিলাস্তরে সুদীর্ঘকাল যাবৎ প্রাকৃতিক উপায়ে সংরক্ষিত কিন্তু আজকের পৃথিবীতে লুপ্ত জীবদেহের সামগ্রিক বা আংশিক প্রস্তরীভূত অবস্থা অথবা তার ছাপকে জীবাশ্ম বলে । বিবর্তন সম্পর্কে যেসব প্রমাণ আছে তাদের মধ্যে জীবাশ্ম ঘটিত প্রমাণ সব থেকে জোরালো । ...

অভিব্যক্তির স্বপক্ষে অঙ্গসংস্থান অঙ্গসংস্থানগত ও জীবাশ্মঘটিত প্রমাণ

জীবদেহের যে সমস্ত অঙ্গের বাহ্যিক গঠন ও কাজ আলাদা হলেও উত্পত্তি এবং অভ্যন্তরীণ গাঠনিক কাঠামো মূলগতভাবে এক, তাদের সমসংস্থ অঙ্গ বলে । বিভিন্ন প্রাণীর বিভিন্ন অঙ্গের প্রাথমিক গঠনগত মিল দেখে জৈব-বিবর্তন সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় । এগুলির মধ্যে মেরুদন্ডী ...