Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 06/20/2021 - 20:07

'V' -আকৃতির উপত্যকা (V-shaped Valley):- উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, 'V' -আকৃতির উপত্যকা হল তাদের মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল খুব বেশি থাকায় নদীর স্রোতের বেগ প্রচন্ড হয় । নদীর জলস্রোতের সঙ্গে বাহিত প্রস্তরখন্ড, নুড়ি প্রভৃতি নদীর তলদেশে অবঘর্ষ ক্ষয়ের মাধ্যমে নদী উপত্যকাকে গভীর ও সংকীর্ণ করে তোলে । তখন নদী উপত্যকার দু'ধার খাড়া দেওয়ালের আকার ধারণ করে । এই গভীর ও সংকীর্ণ নদী উপত্যকা ইংরেজি 'V' অক্ষরের মতো দেখতে হয় বলে একে 'V' -আকৃতির উপত্যকা বলে । কখনো কখনো এই সমস্ত নদী উপত্যকার তলদেশের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী পর্বতের চূড়ার মধ্যে উচ্চতার পার্থক্য প্রায় কয়েক হাজার মিটার হয় । ভারতের শতদ্রু, ব্রহ্মপুত্র, চিনের ইয়াংসি, জার্মানির রাইন প্রভৃতি নদী উচ্চগতিতে 'V' -আকৃতি উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ।

নদীর উচ্চগতিতে V -আকৃতির উপত্যকা সৃষ্টি হওয়ার কারণ

(i) ভূমির ঢাল:- পার্বত্য অঞ্চলের ভূমির ঢাল বেশি বলে নদীস্রোত প্রবল বেগে নীচের দিকে নামে । প্রবল স্রোতের সঙ্গে বাহিত শিলাখণ্ডের সঙ্গে নদীগর্ভের ঘর্ষণ ও সংঘর্ষে নদী উপত্যকায় পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় বেশি হয় । এভাবে নদী উপত্যকা ক্রমশ সংকীর্ণ ও গভীর হতে থাকে ।

(ii) বৃষ্টিবহুলতা ও আবহবিকার:- বৃষ্টিবহুল পার্বত্য অঞ্চলে প্রথমে নদী উপত্যকার দুই পার্শ্বদেশ কিছুটা সংকীর্ণ থাকলেও রাসায়নিক আবহবিকার ও পুঞ্জিত ক্ষয়ের প্রভাবে পার্শ্বক্ষয়ের দ্বারা নদী উপত্যকার উপরিভাগ ক্রমশ প্রশস্ত হয়ে 'V' -আকৃতির উপত্যকা গঠন করে ।

(iii) ভূমিধস:- পার্বত্য নদী উপত্যকার দুই পাশ থেকে নদীতে ধস নামে ও কিছু উপনদীও এসে নদীখাতে মিলিত হয় । এর ফলে নদীখাত কিছুটা প্রশস্থ হয়ে 'V' -আকৃতির উপত্যকা সৃষ্টি করে ।

****

Comments

Related Items

কাবেরী নদী (The Kaveri)

কাবেরী নদী (The Kaveri) : কর্ণাটক রাজ্যের তালাকাভেরি উচ্চভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে কাবেরী নদী কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মধ্য দিয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । কাবেরী নদীর দৈর্ঘ্য ৭৬৫ কিমি.

কৃষ্ণা নদী (The Krishna)

কৃষ্ণা নদী (The Krishna) : পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মহাবালেশ্বরের শৃঙ্গের কিছুটা উত্তরে প্রায় ১৪০০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর কৃষ্ণা নদী দক্ষিণ-পূর্বে তেলেঙ্গানা ও অন্ধপ্রদেশ রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিশাল বদ্বীপ সৃষ্টি করে

গোদাবরী নদী (The Godavari)

গোদাবরী নদী (The Godavari) : গোদাবরী নদী 'দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা' নামে পরিচিত । মহারাষ্ট্রের ব্রম্ভগিরি পাহাড়ের ত্র্যম্বক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে এবং পরে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ

মহানদী (The Mahanadi)

মহানদী (The Mahanadi) : ছত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুর জেলার দক্ষিণাংশের সিয়াওয়া মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্য অতিক্রম করার পর বদ্বীপ সৃষ্টি করে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । মহানদী

তাপী নদী (The Tapti)

তাপী বা তাপ্তি নদী (The Tapti) : মধ্যপ্রদেশের মহাদেব পর্বতের মুলতাই উচ্চভূমির প্রায় ৭৭০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হয়ে তাপী নদী মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ওপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে সাতপুরা ও অজন্তার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত