মৌর্য শাসন ব্যবস্থার বিবরণ দাও (Maurya Administration)

Submitted by avimanyu pramanik on Tue, 03/31/2020 - 10:47

মৌর্য শাসন ব্যবস্থার বিবরণ দাও (Discuss the administrative system of Mauryan Dynasty)

কৌটিল্যের 'অর্থশাস্ত্র', মেগাস্থিনিসের 'ইন্ডিকা', বৌদ্ধগ্রন্থ 'দিব্যবদান', বিশাখদত্তের 'মুদ্রারাক্ষস' নাটক, জৈনগ্রন্থ 'পরিশিষ্টপার্বণ', পতাঞ্জলির 'মহাভাষ্য' প্রভৃতি গ্রন্থ থেকে, অশোকের শিলালিপি ও স্তম্ভলিপি থেকে এবং শাকরাজা রুদ্রদামনের জুনাগড় প্রশস্তি থেকে মৌর্য শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে বহু তথ্য জানা যায় । মেগাস্থিনিসের রচনার উপর ভিত্তি করে গ্রিক ও রোমান ঐতিহাসিক স্ট্র্যাবো, অ্যারিয়ান, জাস্টিন, ডায়োডোরাস ও প্লিনি -র রচনা থেকেও এ সম্পর্কে নানান তথ্যাদি পাওয়া যায় । মৌর্য সম্রাটগণ প্রাচীন ভারতে সর্বপ্রথম একটি সুপরিকল্পিত শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলেন । সমকালীন ও বর্তমানকালের বিভিন্ন পণ্ডিত ও ইতিহাসবিদ এই শাসনব্যবস্থার প্রশংসা করেছেন । ড. ভিনসেন্ট স্মিথ -এর মতে, মৌর্য শাসনব্যবস্থা আকবর-প্রবর্তিত শাসন ব্যবস্থার চেয়েও উন্নত ছিল । চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এই শাসন ব্যবস্থার মূল কাঠামোটি গঠন করেন । পরবর্তীকালে সম্রাট অশোক মৌর্য শাসনব্যবস্থার মূল কাঠামোটিকে অপরিবর্তিত রেখে কিছু সংযোজন ঘটান ।

প্রশাসনিক স্তরবিন্যাস :- বিশাল মৌর্য সাম্রাজ্যে সুদক্ষ শাসনব্যবস্থা প্রণয়নের জন্য সাম্রাজ্যটি কতকগুলি প্রশাসনিক স্তরে বিভক্ত ছিল । সমগ্র সাম্রাজ্য কয়েকটি প্রদেশে বিভক্ত ছিল । প্রদেশগুলি আবার কতকগুলি 'বিষয়' বা 'আহর' বা জেলায় বিভক্ত ছিল । জেলাগুলি অসংখ্য গ্রামে বিভক্ত ছিল । আর এই গ্রাম ছিল স্বায়ত্তশাসিত মৌর্য প্রশাসনের সর্বনিম্ন স্তর ।

কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা :-

(১) রাজার ক্ষমতা :- কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র থেকে জানা যায় যে, মৌর্য যুগে রাজতান্ত্রিক আদর্শকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছিল । মৌর্য শাসনব্যবস্থায় সম্রাট ছিলেন সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী । তিনি আইন, শাসন, বিচার, রাজস্ব ও সামরিক বিভাগের কাজকর্মের তত্ত্ববধান করতেন । এজন্য মেগাস্থিনিস চন্দ্রগুপ্তের শাসনব্যবস্থাকে 'কেন্দ্রীভূত আমলাতন্ত্র' (Centralized Bureaucracy) বলে অভিহিত করেছেন । তবে স্বৈরাচারী হলেও সম্রাট কখনোই স্বেচ্ছাচারী ছিলেন না । তিনি শাসনকার্য পরিচালনায় 'মন্ত্রিণ', 'মন্ত্রীপরিষদ' ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীদের পরামর্শ নিতেন । কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র এবং সম্রাট অশোকের তৃতীয় ও ষষ্ঠ শিলালিপিতে এই মন্ত্রী পরিষদের উল্লেখ পাওয়া যায় । মন্ত্রীমন্ডলী ছাড়াও অধ্যক্ষ, বলাধ্যক্ষা, নগরাধ্যক্ষ প্রমূখ রাজকর্মচারী রাজাকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিতেন ।

(২) বিভিন্ন রাজ কর্মচারী :- কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব রাজার হাতে থাকলেও কৌটিল্যের মতে, যেমন একটি চাকার দ্বারা গাড়ি চলে না, সেইরূপ একা রাজার দ্বারা শাসনকার্য চলত না । তাই মৌর্য শাসনব্যবস্থায় রাজাকে সাহায্যের জন্য বিভিন্ন রাজকর্মচারী সহায়তা করতেন । সচিব নামে এক শ্রেণীর কর্মচারী মৌর্য সম্রাটকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে সাহায্য করতেন । মেগাস্থিনিস এই সচিবদের 'কাউন্সিল এ্যাণ্ড অ্যাসেসর্স' (Councillors and Assessors) বলে উল্লেখ করেছেন । সচিবদের মধ্যে যাঁরা দক্ষতা ও অভিজ্ঞতায় অগ্রবর্তী ছিলেন তাঁরা 'মন্ত্রিণ' বা মন্ত্রী পদে নিযুক্ত হতে পারতেন । তাঁরা রাজাকে শাসন ও পররাষ্ট্র বিষয়ে পরামর্শ দিতেন এবং যুদ্ধক্ষেত্রে রাজার সঙ্গী হতেন । 'মন্ত্রিণ' দের নীচের স্তরে ছিল মন্ত্রীপরিষদ নামে একটি পরামর্শদাতা সভা । এর সদস্যরা রাজাকে জরুরি অবস্থার সময় পরামর্শ দিত । তবে এই পরামর্শ গ্রহণ করা বা না করা রাজার ইচ্ছাধীন ছিল । 'অমাত্য'-রা রাজস্ব, অর্থ, বিচার, প্রশাসন প্রভৃতি বিভাগের দায়িত্ব পালন করতেন । অধ্যক্ষ ছিলেন সরকারের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান । কৌটিল্যের মতে ২৬-২৭ জন অধ্যক্ষ বিভিন্ন দপ্তরের কাজ পরিচালনা করতেন । কেন্দ্রীয় সরকারের দুজন বিশিষ্ট অধ্যক্ষ ছিলেন, যথা — সমাহর্তা ও সন্নিধাতা । রাজস্ব বিভাগের প্রধান ছিলেন সমাহর্তা । 'সন্নিধাতা' নামে কর্মচারী রাজার কোষাধ্যক্ষ ও হিসাব পরিক্ষক হিসাবে কাজ করতেন । এ ছাড়া, অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রাজকর্মচারীদের মধ্যে ছিলেন সেনাপতি, করণিক, পুরোহিত, দৌবারিক, প্রতিবেদক, দুর্গাপাল, গুপ্তচর প্রমূখ ।

প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা :- শাসনকার্য পরিচালনার সুবিধার্থে মৌর্য সাম্রাজ্যকে কয়েকটি প্রদেশে এবং প্রদেশগুলিকে বিভিন্ন জেলায় এবং জেলাগুলিকে বিভিন্ন গ্রামে বিভক্ত করা হয়েছিল । চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমলে দেশে চারটি প্রদেশ ছিল । পরে সম্রাট অশোক এই চারটি প্রদেশের সঙ্গে কলিঙ্গ প্রদেশটি যুক্ত করেন ।

(১) বিভিন্ন প্রদেশ :- চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য তাঁর সাম্রাজ্যকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করেছিলেন, যথা— (ক) উত্তরাপথ, (খ) অবন্তী, (গ) দক্ষিণাপথ ও (ঘ) প্রাচ্য । সম্রাট অশোক কলিঙ্গকে তাঁর রাজত্বভুক্ত করাতে মৌর্য সাম্রাজ্য পঞ্চম প্রদেশে পরিণত হয় । (ক) উত্তরাপথের রাজধানী ছিল তক্ষশীলা । (খ) অবন্তী-র রাজধানী ছিল উজ্জয়িনী । (গ) দক্ষিণাপথ -এর রাজধানী ছিল সুবর্ণগিরি । প্রাচ্য -এর রাজধানী ছিল পাটলিপুত্র । (ঙ) কলিঙ্গ -এর রাজধানী ছিল তোষালী ।

(২) প্রাদেশিক শাসক :  চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য সমস্ত প্রদেশে এক বিকেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থার প্রচলন করেন । সম্রাট বিভিন্নভাবে প্রদেশগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতেন । সম্রাট অশোকের শিলালিপি থেকে মৌর্য যুগের প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে বহু তথ্য পাওয়া যায় । প্রদেশের শাসনকর্তাকে বলা হত 'কুমার' বা 'প্রদেশপাল' । গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশগুলিতে রাজপুত্র বা রাজপরিবারের লোককে শাসনকর্তা হিসাবে নিয়োগ করা হত । এদের নাম ছিল 'কুমার অমাত্য' আর অন্যান্য সাধারণ প্রদেশে বিশ্বাসভাজন ব্যক্তিদের শাসনকর্তা রূপে নিয়োগ করা হত । এদের বলা হত 'প্রদেশপাল' । চন্দ্রগুপ্তের আমলে পুষ্যগুপ্ত সৌরাষ্ট্রের প্রদেশপালরুপে নিযুক্ত হয়েছিলেন । এই 'কুমার অমাত্য' বা 'প্রদেশপাল' রা নিজ নিজ এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা, রাজস্ব সংগ্রহ, কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা প্রভৃতি দায়িত্ব পালন করতেন । কেন্দ্রের মতো প্রদেশগুলিতেও মন্ত্রিসভা ছিল ।

স্থানীয় প্রশাসন: মৌর্য শাসনব্যবস্থার সর্বনিম্ন স্তর ছিল গ্রাম । গ্রামের প্রধান শাসককে বলা হত গ্রামিক । গ্রামিকের দায়িত্ব ছিল গ্রামের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, চুরিডাকাতি ও অন্যান্য সমস্যার বিচার প্রভৃতি । তিনি গ্রামবাসীদের দ্বারা নির্বাচিত হতেন । গ্রামে সম্ভবত স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল । গ্রামের ওপরের স্তরে পাঁচ থেকে দশটি গ্রামের শাসনের দায়িত্ব থাকত 'গোপ' নামে একজন কর্মচারীর হাতে । তাঁর ওপরে ছিল স্থানিক নামে কর্মচারী । সমাহর্তা ছিলেন জেলার প্রধান শাসক । স্বায়ত্তশাসিত শহরগুলিতে পৃথক ও উন্নত পৌর শাসনব্যবস্থা চালু ছিল । পাটলিপুত্র, উজ্জয়িনী, তক্ষশিলা, কৌশাম্বী, বৈশালী, শ্রাবন্তী, পুন্ড্রবর্ধন, কাশী প্রভৃতি নগরগুলিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জলনিকাশি ব্যবস্থা ইত্যাদি ক্ষেত্রে পৃথক শাসন পরিষদ ছিল ।

পাটলিপুত্রের শাসন প্রণলী :- বিভিন্ন ইতিহাসবিদ মৌর্য সম্রাটদের নগর-শাসনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন । গ্রিক লেখক মেগাস্থিনিসের বর্ণনা অনুযায়ী পাটলিপুত্র ছিল সাড়ে নয় মাইল দীর্ঘ এবং প্রায় দুই মাইল প্রস্থবিশিষ্ট এক বিশাল নগরী । পাটলিপুত্রের শাসন পরিচালনার জন্য একটি পৌরবোর্ড বা পৌর পরিষদ ছিল । এই বোর্ডের সদস্যসংখ্যা ছিল ৩০ জন । বোর্ডকে ছয়টি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছিল । এর প্রতিটিতে পাঁচজন করে সদস্য ছিলেন । প্রতিটি বিভাগ নগর-শাসনের পৃথক ছয়টি দায়িত্ব পালন করত । এই ছয়টি বিভাগ হল — (ক) শিল্প পরিচালনা, (খ) বিদেশিদের আপ্যায়ন, (গ) জন্মমৃত্যুর হিসাব সংরক্ষণ, (ঘ) ব্যবসাবাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ, (ঙ) পণ্যসামগ্রী বিক্রির তদারকি, (চ) বিক্রিত দ্রব্যের উপর ১/১০ ভাগ হারে শুল্ক আদায় করা ।

সামরিক ও গুপ্তচর ব্যবস্থা :- চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য তাঁর বিশাল সাম্রাজ্যের নিরাপত্তার জন্য দক্ষ ও উন্নত সামরিক ব্যবস্থা গড়ে তোলেন । সমস্ত বর্ণের মানুষের মধ্য থেকেই সেনা সংগ্রহ করা হত । তিনি সামরিক বিভাগকে ছয়টি ভাগে ভাগ করেন । এই ছয়টি বিভাগ হল— (ক) পদাতিক বাহিনী, (খ) অশ্বারোহী বাহিনী, (গ) রথারোহী বাহিনী, (ঘ) রণহস্তী বাহিনী, (ঙ) রণতরী বাহিনী, (চ) রসদপত্র সরবরাহকারী বাহিনী । মেগাস্থিনিসের বিবরণ থেকে জানা যায় তাঁর সেনাবাহিনীতে ৬ লক্ষ পদাতিক, ৩০ হাজার অশ্বারোহী, ৮ হাজার রথারোহী এবং ৯ হাজার হস্তি ছিল । সচ্ছল জীবনযাপনের জন্য তাদের বেতনের পরিমাণ যথেষ্ট ছিল । বিশাল আয়তন মৌর্য সাম্রাজ্যের শাসন পরিচালনা ও সংহতি রক্ষার জন্য সমগ্র দেশে অসংখ্য গুপ্তচর ছিল । গুপ্তচররা সাধারণত প্রজা থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মচারী, এমনকি প্রাদেশিক শাসকদের গতিবিধির ওপরও নজর রাখত ।

বিচার ব্যবস্থা :- দেশে একটি দক্ষ ও নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থার অস্তিত্ব ছিল । স্বয়ং রাজা ছিলেন দেশের সর্বোচ্চ বিচারক । গ্রামের বিচারকার্য গ্রামিক এবং নগরের বিচারকার্য নগর-ব্যবহারিক পরিচালনা করতেন । কৌটিল্য তাঁর অর্থশাস্ত্রে ধর্মাস্থিয় নামে দেওয়ানি ও কন্টকশোধন নাম ফৌজদারি আদালতের উল্লেখ করেছেন । এ ছাড়া সংগ্রহণ, স্থানিক, দ্রোণমুখ প্রভৃতি নিম্ন আদালতের অস্তিত্ব ছিল । বিচারের দন্ডবিধি কঠোর ছিল । শাস্তি হিসেবে জরিমানা, জেল, অঙ্গচ্ছেদ, মৃত্যুদণ্ড প্রভৃতির ব্যবস্থা ছিল ।

রাজস্ব ব্যবস্থা:-  ভূমিরাজস্ব ছিল সরকারের আয়ের প্রধান উৎস । ভূমিরাজস্ব নগদে বা শস্যের দ্বার দেওয়া যেত । সাধারণত উৎপন্ন ফসলের ১/৬ বা ১/৪ অংশ রাজস্ব নেওয়া হত । এই করকে বলা হত 'ভাগ' । এ ছাড়াও অন্যান্য করের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল পথকর, জলকর, ফেরিকর, চারণকর, বিবাহকর, জন্ম-মৃত্যু কর প্রভৃতি । কৌটিল্য এই সব করকে 'বলি' বলে উল্লেখ করেছেন । বিভিন্ন ধরনের কর আদায়ের ফলে মৌর্য রাজকোশ সবসময় পূর্ণ থাকত । কর্মচারী ও সৈন্যদের বেতন, জনকল্যাণমূলক কাজ, সেচ প্রভৃতি ক্ষেত্রে এই অর্থের একটা অংশ বড় অংশ ব্যয় হত । ডঃ রামশরণ শর্মা বলেন যে, এইভাবে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য একটি সুসংগঠিত শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন এবং তাকে একটি সুদৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করেন ।

***

Comments

Related Items

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনার উপকরণ হিসাবে মুদ্রার গুরুত্ব

প্রাচীন ভারতের কোনো লিখিত ইতিহাস এ পর্যন্ত পাওয়া না যাওয়ায় দেশি ও বিদেশি ঐতিহাসিকরা বহু পরিশ্রম করে বিভিন্ন উপকরণ থেকে তিল তিল করে ঐতিহাসিক তথ্যাদি সংগ্রহ করে প্রাচীন ভারতের একটি লিখিত ইতিহাস কোনো রকমে খাড়া করেছেন ।

হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসের বা পতনের কারণ

হরপ্পা সভ্যতা ছিল এক বিশাল প্রাণবন্ত সভ্যতা এবং এই প্রাণবন্ত সভ্যতা কি কারণে বিলুপ্ত হয়েছিল, তা সঠিক ভাবে জানা যায় না । দীর্ঘ ছয়শো বছর উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত অস্তিত্বের পর আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ১৭৫০ অব্দের কিছুকাল পরে এই সভ্যতার অবসান ঘটেছিল একথা সর্বজনস্বীকৃত ।

গুপ্ত যুগকে ভারতের ইতিহাসে সুবর্ণ যুগ বলা হয় কেন ?

প্রাচীন ভারতের সভ্যতা ও সংস্কৃতির ইতিহাসে গুপ্ত রাজাদের শাসনকাল এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় । গ্রিক ইতিহাসে সভ্যতা ও সংস্কৃতির দিক দিয়ে যেমন পেরিক্লিসের যুগকে সুবর্ণযুগ বলা হয় তেমনই গুপ্ত যুগকে ভারত ইতিহাসে সুবর্ণ যুগ বলা হয় ।

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় সাহিত্যিক উপাদানগুলির গুরুত্ব

প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের উপাদানগুলিকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা যায় । যথা —সাহিত্যিক উপাদান এবং প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান । প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় সাহিত্যের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ । সাহিত্যিক উপাদানগুলিকে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে । যেমন— (১) দেশীয় সাহিত্য এবং (২) বৈদেশিক বিবরণী ।

গান্ধীজির সঙ্গে সুভাষচন্দ্র বসুর মতভেদের কারণ

মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে সুভাষচন্দ্র বসুর মতভেদের কারণ ছিল কিছুটা ব্যক্তিগত ও কিছুটা মতাদর্শগত । সুভাষচন্দ্র বসু গান্ধীজীর প্রতি ব্যক্তিগত ভাবে শ্রদ্ধাশীল হলেও কংগ্রেসে তার ডিক্টেটরসুলভ কর্তৃত্ব ও সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে তাঁর আপসধর্মী মনোভাব তিনি পছন্দ করতেন না ।