অসুখী একজন
পাবলো নেরুদা
আমি তাকে ছেড়ে দিলাম
অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখে দরজায়
আমি চলে গেলাম দূর ..... দূরে ।
সে জানত না আমি আর কখনো ফিরে আসব না ।
একটা কুকুর চলে গেল, হেঁটে গেল গির্জার এক নান
একটা সপ্তাহ আর একটা বছর কেটে গেল ।
বৃষ্টিতে ধুয়ে দিল আমার পায়ের দাগ
ঘাস জন্মালো রাস্তায়
আর একটার পর একটা, পাথরের মতো
পর পর পাথরের মতো, বছরগুলো
নেমে এল তার মাথার ওপর ।
তারপর যুদ্ধ এল
রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের মতো ।
শিশু আর বাড়িরা খুন হলো ।
সেই মেয়েটির মৃত্যু হলো না ।
সমস্ত সমতলে ধরে গেল আগুন
শান্ত হলুদ দেবতারা
যারা হাজার বছর ধরে
ডুবে ছিল ধ্যানে
উল্টে পড়ল মন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে
তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না ।
সেই মিষ্টি বাড়ি, সেই বারান্দা
যেখানে আমি ঝুলন্ত বিছানায় ঘুমিয়েছিলাম,
গোলাপি গাছ, ছড়ানো করতলের মতো পাতা
চিমনি, প্রাচীন জলতরঙ্গ
সব চূর্ণ হয়ে গেল, জ্বলে গেল আগুনে ।
যেখানে ছিল শহর
সেখানে ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা
দোমড়ানো লোহা, মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস
মাথা
রক্তের একটা কালো দাগ ।
আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় ।
****
তরজমা : নবারুণ ভট্টাচার্য