কোশ বিভাজন (Cell Division)
আজ থেকে প্রায় ২৬০ কোটি বছর আগের ঘটনা । পৃথিবীতে জন্ম নিল প্রথম জীব । পৃথিবীর বুকে জাগল প্রাণের স্পন্দন । প্রথম সৃষ্টি হওয়া সেই জীব না ছিল উদ্ভিদ না কোন প্রাণী । জেলির মতো থকথকে খানিকটা প্রোটোপ্লাজম নিয়ে নির্দিষ্ট আকার ও আকৃতিবিহীন সেই জীবের দেহ গড়ে উঠেছিল । কালক্রমে সেই প্রোটোপ্লাজমকে ঘিরে এক আবরণ রচিত হল —সৃষ্টি হল এককোশী জীব । পরবর্তিকালে বহুকোশী জীবের উদ্ভব ঘটল, আর যে পদ্ধতিতে এককোশী জীব থেকে বহুকোশী জীবের উদ্ভব ঘটল, তা হল কোশ বিভাজন । যে প্রক্রিয়ায় একটি কোশ থেকে দুটি নতুন কোশের সৃষ্টি হয় তাকে কোশ বিভাজন বলে । যে কোশটি বিভাজিত হয় তাকে জনিতৃ কোশ [parent cell] বলে এবং যে নতুন কোশ দুটি সৃষ্টি হয় তাদের অপত্য কোশ [daughter cells] বলে । সুতরাং জনিতৃ কোশ থেকে অপত্য কোশ সৃষ্টি হওয়ার পদ্ধতিকেই কোশ বিভাজন বলা যায় ।
সংজ্ঞা [Defination]:- যে জৈবিক পদ্ধতিতে একটি জনিতৃ-মাতৃকোশ বিভাজিত হয়ে দুই বা ততোধিক অপত্য কোশ সৃষ্টি হয়, তাকে কোশ বিভাজন বলা হয় ।
বিজ্ঞানী ওয়াল্টার ফ্লেমিং [W.Flemming] 1880 খ্রিস্টাব্দে স্যালামান্ডারের দেহে প্রথম কোশ বিভাজন (মাইটোসিস) প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করেন । বিজ্ঞানী বোভেরি [Boveri] 1887 খ্রিস্টাব্দে প্রথম অ্যাসকারিস -এর দেহে মিওসিস কোশ বিভাজন পর্যবেক্ষণ করেন ।
কোশ বিভাজনের তাৎপর্য (Significance of Cell Division)
কোশ বিভাজনের তাত্পর্য হল :
(১) কোশ বিভাজনের ফলে জীবের আকার ও আয়তনের বৃদ্ধি হয় এবং বিভিন্ন অঙ্গের ক্রমবিকাশ ঘটে ।
(২) ভ্রুণের পরিস্ফুটনের জন্য কোশ বিভাজনের প্রয়োজন ।
(৩) কোশের জীর্ণ ও ক্ষয়প্রাপ্ত স্থান মেরামত অথবা ক্ষতস্থান পূরণেও কোশ বিভাজনের ভূমিকা রয়েছে ।
(৪) জনন এবং বংশবিস্তারের জন্য কোশ বিভাজনের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে ।
*****
- 2886 views