বায়ুর বিভিন্ন প্রকারের কাজ (Work of Wind) : বায়ু প্রধানত (ক) ক্ষয়সাধন (Erosion), (খ) অপসারণ বা বহন (Transportation) ও (গ) সঞ্চয় বা অবক্ষেপণ (Deposition) — এই তিন প্রকারে কাজ করে থাকে ।
(ক) ক্ষয়সাধন (Erosion) : বায়ু (i) অবনমন (Deflation), (ii) অবঘর্ষ (Abrasion) ও (iii) ঘর্ষণ (Attrition) পদ্ধতির দ্বারা ক্ষয়সাধন কাজ করে । বায়ুপ্রবাহ আলগা বালুরাশিকে উড়িয়ে নিয়ে অবনমন প্রক্রিয়ায় গর্তের সৃষ্টি করে । বায়ুবাহিত সূক্ষ্ম বালিকণা শিলার গায়ে আছড়ে পড়ে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় এবং বায়ু বাহিত হওয়ার সময় বালিকণার মধ্যে ঘর্ষণ প্রক্রিয়ায় নানা রকম ভূমিরূপ গঠিত হয় । বায়ুর ক্ষয়সাধন কাজের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয় তা হল— (i) অপসারণ সৃষ্ট গর্ত (Blow-outs) (ii) গৌর (Gour), (iii) জিউগেন (Zeugen), (iv) ইয়ারদাঙ (Yardang), (v) ইনসেলবার্জ (Inselberg) প্রভৃতি ।
(খ) অপসারণ বা বহন (Transportation) : (i) ভাসমান প্রক্রিয়া, (ii) লম্ফদান প্রক্রিয়া ও (iii) গড়ানে প্রক্রিয়া দ্বারা অপসারণ বা বহন কাজ করে থাকে । প্রবল বায়ুপ্রবাহে বালুকণাসমূহ ভাসতে ভাসতে বা ভূমির ওপর ঠোক্কর খেতে খেতে অথবা গড়াতে গড়াতে অপসারিত বা বাহিত হয়ে থাকে । অপসারণ বা বহন কার্যের ফলে সৃষ্ট ভুলিরূপ হল— অবনমিত ভূমি ।
(গ) সঞ্চয় বা অবক্ষেপণ (Deposition) : (i) থিতানো প্রক্রিয়া, (ii) উপলেপন প্রক্রিয়া ও (iii) অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় সঞ্চয় বা অবক্ষেপণ কাজ করে থাকে । বায়ুবাহিত বালিকণা কোনো স্থানে থিতিয়ে পড়ে বা গড়াতে গড়াতে সঞ্চিত হয়ে অথবা অসমতল ভূপৃষ্ঠে আটকে পড়ে সঞ্চিত হয় ও নানা রকম ভূমিরূপের সৃষ্টি করে । যেমন— (i) বালিয়াড়ি (Sand Dunes, (ii) লোয়েশ (Loess) ।
****