Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 06/20/2021 - 15:26

নদীর গতি (Courses of the River) : উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ গতিপথে ভূমির ঢাল ও জলপ্রবাহের বৈশিষ্ট্য অনুসারে নদীর গতিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় । যথা— (১) উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহ, (২) মধ্যগতি বা সমভূমি প্রবাহ, (৩) নিম্নগতি বা বদ্বীপ প্রবাহ ।

(১) উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহ (Upper Course or Mountain course) : উৎসস্থল থেকে নদী যতদূর পর্যন্ত পর্বত বা মালভূমির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, সেই গতিটিকে বলা হয় নদীর উচ্চগতি বা পার্বত্যপ্রবাহ । যেমন— গোমুখ গুহা থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত হল গঙ্গার উচ্চগতি ।

(২) মধ্যগতি বা সমভূমি প্রবাহ (Middle Course or Plain land course) : উচ্চভূমি অঞ্চল ছেড়ে নদী যখন সমভূমির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, সেই গতিকে বলা হয় নদীর মধ্যগতি বা সমভূমি প্রবাহ । যেমন— হরিদ্বার থেকে পশ্চিমবঙ্গের ধুলিয়ান পর্যন্ত হল গঙ্গার মধ্যগতি ।

(৩) নিম্নগতি বা বদ্বীপ প্রবাহ (Lower course or Deltaic course) : সমভূমি অঞ্চল ছেড়ে নদী যখন বদ্বীপ অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, সেই গতিপথকে বলা হয় নদীর নিম্নগতি বা বদ্বীপ প্রবাহ । যেমন—ধুলিয়ান থেকে মোহনা পর্যন্ত হল গঙ্গার নিম্নগতি ।

আদর্শ নদী : উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত অংশে যে নদীর গতিপ্রবাহে উচ্চ, মধ্য ও নিম্ন —এই তিনটি গতিপথ সুস্পষ্টভাবে লক্ষ করা যায়, তাকে আদর্শ নদী বলে । আদর্শ নদীর মধ্য ও নিম্ন অংশ সুবিস্তৃত হয় এবং নদীর গতিপথ ঘন ঘন পরিবর্তিত হয় না ও নদী অববাহিকায় বন্যার প্রকোপ কম হয় । গঙ্গানদী হল আদর্শ নদীর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ । 

নদীপ্রবাহের পরিমাপ : নদীর গতিবেগ ও তার জলের পরিমাণের ওপর নদীর কাজের শক্তি নির্ভর করে । নদীর ওপর আড়াআড়ি কোনো স্থান দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে যে পরিমাণ জল প্রবাহিত হয় তাকে নদীপ্রবাহ বলে । নদীপ্রবাহ পরিমাপের একক হল কিউসেক ও কিউমেক । নদীর কোনো স্থান দিয়ে ১ সেকেন্ডে যত ঘনফুট জল প্রবাহিত হয় তাকে কিউসেক এবং যত ঘনমিটার জল প্রবাহিত হয় তাকে কিউমেক বলে ।

****

Comments

Related Items

কাবেরী নদী (The Kaveri)

কাবেরী নদী (The Kaveri) : কর্ণাটক রাজ্যের তালাকাভেরি উচ্চভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে কাবেরী নদী কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মধ্য দিয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । কাবেরী নদীর দৈর্ঘ্য ৭৬৫ কিমি.

কৃষ্ণা নদী (The Krishna)

কৃষ্ণা নদী (The Krishna) : পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মহাবালেশ্বরের শৃঙ্গের কিছুটা উত্তরে প্রায় ১৪০০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর কৃষ্ণা নদী দক্ষিণ-পূর্বে তেলেঙ্গানা ও অন্ধপ্রদেশ রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিশাল বদ্বীপ সৃষ্টি করে

গোদাবরী নদী (The Godavari)

গোদাবরী নদী (The Godavari) : গোদাবরী নদী 'দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা' নামে পরিচিত । মহারাষ্ট্রের ব্রম্ভগিরি পাহাড়ের ত্র্যম্বক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে এবং পরে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ

মহানদী (The Mahanadi)

মহানদী (The Mahanadi) : ছত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুর জেলার দক্ষিণাংশের সিয়াওয়া মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্য অতিক্রম করার পর বদ্বীপ সৃষ্টি করে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । মহানদী

তাপী নদী (The Tapti)

তাপী বা তাপ্তি নদী (The Tapti) : মধ্যপ্রদেশের মহাদেব পর্বতের মুলতাই উচ্চভূমির প্রায় ৭৭০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হয়ে তাপী নদী মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ওপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে সাতপুরা ও অজন্তার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত