Submitted by avimanyu pramanik on Wed, 07/28/2021 - 07:26

বায়ুপ্রবাহের কাজ (Work of Wind) : বায়ুপ্রবাহের প্রধান কাজ ক্ষয়সাধন করা । এছাড়া অপসারণ বা বহন এবং সঞ্চয় বা অবক্ষেপণের মাধ্যমেও বায়ুপ্রবাহ কাজ করে থাকে । বায়ুপ্রবাহ সহজেই বালুকণাকে উপরে তুলে উড়িয়ে নিয়ে যায় । ভূমি বা মাটির কাছাকাছি বায়ু প্রবাহের গতিবেগ কম হয় । কারণ ভূমির সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ কিছুটা হ্রাস পায় । আবার মাটি থেকে বেশি উপরে বায়ুতে বালুকণার পরিমাণ কমে যাওয়ায় বায়ুপ্রবাহের ক্ষয় করার শক্তি কম হয় । তাই এর মাঝামাঝি জায়গায় অর্থাৎ মাটি থেকে মিটার খানেক উপরে বায়ুপ্রবাহের ক্ষয় করার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি হয় । এই অংশে একদিকে বায়ুপ্রবাহের গতি বেগ থাকে বেশি, আবার অপরদিকে বায়ুতে বালুকণার পরিমাণও থাকে বেশি । সেই জন্য ভূমির কিছু উপরে দণ্ডায়মান পাথরের স্তুপ বা শিলাময় ভূমির ক্ষয় বেশি হয় । এর ফলে নানা রকম ভূমিরূপের সৃষ্টি হয় । ভূপৃষ্ঠে বায়ুপ্রবাহের কাজ প্রধানত উদ্ভিদহীন মরুভূমি অঞ্চলে পরিলক্ষিত হয় । এছাড়া সমুদ্র উপকূল অঞ্চলেও বায়ুর কাজের প্রাধান্য লক্ষ করা যায় ।

পৃথিবীর প্রধান প্রধান মরু অঞ্চল : ভূবিজ্ঞানী কুক ও ওয়ারেন -এর মতে ভূপৃষ্ঠের স্থলভাগের প্রায় শতকরা ৩৬ ভাগ স্থান মরু, মরুপ্রায় ও শুষ্ক সাভানা অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত । পৃথিবীতে উষ্ণ মরু অঞ্চল ও শীতল মরু অঞ্চল —এই দুই প্রকার মরু অঞ্চল অবস্থান করে এবং প্রধানত উষ্ণ মরু অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহের কাজ পরিলক্ষিত হয় । পৃথিবীর প্রধান প্রধান উষ্ণ মরু অঞ্চলগুলি হল— (i) আফ্রিকা মহাদেশে পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমি সাহারা কালাহারি মরুভূমি, (ii) এশিয়া মহাদেশে রাব-আল-খালিথর মরুভূমি, (iii) ওশিয়ানিয়া মহাদেশে : বৃহৎ অস্ট্রেলিয় মরুভূমি, (iv) উত্তর আমেরিকায় সোনেরানমোজাভি মরুভূমি, (v) দক্ষিণ আমেরিকায় আটাকামাসেচুরা মরুভূমি ।

আফ্রিকা মহাদেশের সাহারায় সচল বালি দ্বারা গঠিত মরুভুমিকে আর্গ ও শিলাময় মরুভুমিকে হামাদা বলা হয় । বিভিন্ন আকৃতির প্রস্তরখণ্ডপূর্ণ মরুভূমি আলজিরিয়ায় রেগ এবং লিবিয়া ও মিশরে সেরীর নামে পরিচিত ।

বালুকণা কিভাবে সৃষ্টি হয় (Formation of sand particles) ? বালুকণা হল ০.০২ - ০.২ মিমি ব্যাসযুক্ত কোয়ার্টজ খনিজকণা দ্বারা গঠিত সূক্ষ্ম পাললিক কণা । মরু অঞ্চলে দিন ও রাতের উষ্ণতার অধিক পার্থক্য, বৃষ্টিপাতের অভাব ও উদ্ভিদহীনতার কারণে শিলাস্তর যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে অথবা বিয়োজিত হয়ে সুক্ষ্ম বালুকণায় পরিণত হয় । আবার উপকূল অঞ্চলে সমুদ্রতরঙ্গের আঘাতে শিলা যান্ত্রিকভাবে ভেঙে এবং প্রবাল ও শেল সমৃদ্ধ পদার্থ রাসায়নিকভাবে বিয়োজিত হয়ে বালুকণায় পরিণত হয় ।

****

Comments

Related Items

কাবেরী নদী (The Kaveri)

কাবেরী নদী (The Kaveri) : কর্ণাটক রাজ্যের তালাকাভেরি উচ্চভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে কাবেরী নদী কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মধ্য দিয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । কাবেরী নদীর দৈর্ঘ্য ৭৬৫ কিমি.

কৃষ্ণা নদী (The Krishna)

কৃষ্ণা নদী (The Krishna) : পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মহাবালেশ্বরের শৃঙ্গের কিছুটা উত্তরে প্রায় ১৪০০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর কৃষ্ণা নদী দক্ষিণ-পূর্বে তেলেঙ্গানা ও অন্ধপ্রদেশ রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিশাল বদ্বীপ সৃষ্টি করে

গোদাবরী নদী (The Godavari)

গোদাবরী নদী (The Godavari) : গোদাবরী নদী 'দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা' নামে পরিচিত । মহারাষ্ট্রের ব্রম্ভগিরি পাহাড়ের ত্র্যম্বক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে এবং পরে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ

মহানদী (The Mahanadi)

মহানদী (The Mahanadi) : ছত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুর জেলার দক্ষিণাংশের সিয়াওয়া মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্য অতিক্রম করার পর বদ্বীপ সৃষ্টি করে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । মহানদী

তাপী নদী (The Tapti)

তাপী বা তাপ্তি নদী (The Tapti) : মধ্যপ্রদেশের মহাদেব পর্বতের মুলতাই উচ্চভূমির প্রায় ৭৭০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হয়ে তাপী নদী মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ওপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে সাতপুরা ও অজন্তার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত