সৌর জগৎ ও পরমাণুর গঠন

Submitted by arpita pramanik on Mon, 01/07/2013 - 09:27

সৌর জগৎ ও পরমাণুর গঠন (Solar System and Planetary Model of Atom) :

লর্ড রাদারফোর্ডের কল্পনা অনুযায়ী পরমাণুর গঠন অনেকটা সৌরজগতের মতো ।

সৌরজগতের সঙ্গে পরমাণুর গঠনের সাদৃশ্য (Similarities of atomic structure and solar system) :

  সৌরজগত   পরমাণু
(i) সৌরজগতে সূর্যকে কেন্দ্র করে বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি ইত্যাদি গ্রহ বিভিন্ন কক্ষ পথে আবর্তন করে । (i) পরমাণুতে নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ইলেকট্রনগুলি বিভিন্ন কক্ষপথে আবর্তন করে ।
(ii) সৌরজগতে পরমাণুর মতোই বেশির ভাগ স্থানই ফাঁকা ।     (ii) পরমাণুতে সৌরজগতের মতোই বেশির ভাগ স্থানই ফাঁকা ।    
(iii) সৌরজগতে যে-কোনো গ্রহের ভরের তুলনায় সূর্যের ভর অনেক গুণ বেশি ।      (iii) পরমাণুতে ইলেকট্রনের ভরের তুলনায় নিউক্লিয়াসের ভর বহু গুণ বেশি ।    
(iv) সৌরজগতে গ্রহগুলির কক্ষপথ উপবৃত্তাকার, সূর্য থাকে ওই উপবৃত্তের ফোকাসে । (iv) পরমাণুতে ইলেকট্রনগুলির কক্ষপথ উপবৃত্তাকার (বিশেষ ক্ষেত্রে বৃত্তাকার), নিউক্লিয়াস থাকে উপবৃত্তের ফোকাসে (বা বৃত্তের কেন্দ্রে) ।
(v) সৌরজগতে সূর্যের চারিদিকে পরিক্রমণ করার সময় গ্রহগুলি নিজ নিজ অক্ষের চারিদিকে আবর্তন করে । (v) পরমাণুতে নিউক্লিয়াসের চারিদিকে প্রদক্ষিণ করার সময় ইলেকট্রনগুলিও নিজ নিজ অক্ষের চারিদিকে আবর্তন করে ।

 

সৌরজগতের সঙ্গে পরমাণুর গঠনের বৈসাদৃশ্য (Dissimilarities of atomic structure and solar system)

  সৌরজগত   পরমাণু
(i) সৌরজগতে গ্রহ ও সূর্যের মধ্যে এবং গ্রহগুলির নিজেদের মধ্যে মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল ক্রিয়া করে । (i) পরমাণুতে ইলেকট্রন ও নিউক্লিয়াসের মধ্যে তড়িৎ আকর্ষণ বল এবং ইলেকট্রনগুলির নিজেদের মধ্যে তড়িৎ-বিকর্ষণ বল ক্রিয়া করে ।    
(ii) সূর্য ও গ্রহগুলি সাধারণভাবে আধানযুক্ত নয় ।  (ii) নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রন যথাক্রমে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধানযুক্ত ।    
(iii) সৌরজগতের গ্রহগুলির আয়তন ও ভর ভিন্ন ভিন্ন ।  (iii) পরমাণুর প্রতিটি ইলেকট্রনের আয়তন ও ভর একই ।     
(iv) সৌরজগতে যে-কোনো কক্ষে একটিমাত্র গ্রহ থাকে । (iv) পরমাণুতে যে-কোনো কক্ষে একাধিক ইলেকট্রন থাকে বা থাকতে পারে ।    
(v) সৌরজগতে বুধ ও শুক্র ছাড়া বাকি গ্রহদের এক বা একাধিক উপগ্রহ রয়েছে ।  (v) পরমাণুতে ইলেকট্রনের কোনো উপ-ইলেকট্রন নেই ।     
(vi) সৌরজগতে এক কক্ষ থেকে অন্য কক্ষে গ্রহকে সরানো যায় না । (vi) পরমাণুতে ইলেকট্রনকে এক কক্ষ থেকে অন্য কক্ষে সরানো যায় ।    
(vii)

সৌরজগতের গ্রহগুলির কক্ষপথ মোটামুটি একই তলে থাকে ।

(vii)

পরমাণুতে ইলেকট্রনগুলির কক্ষপথ বিভিন্ন তলে থাকে ।

*****

Related Items

জারণ ও বিজারণ একসঙ্গে ঘটে

রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জারণ ও বিজারণ প্রক্রিয়া একই সঙ্গে ঘটে । অর্থাৎ, জারণ ও বিজারণ ক্রিয়া পরস্পরের পরিপূরক । কোনো বিক্রিয়ায় জারণ-ক্রিয়া ঘটলেই বিজারণ ক্রিয়াও ঘটবে । এই রকম রাসায়নিক বিক্রিয়াকে রেডক্স বিক্রিয়া বলা হয় । ...

কয়েকটি জারক ও বিজারক পদার্থ

কয়েকটি জারক পদার্থ - ম্যাঙ্গানিজ ডাইঅক্সাইড, নাইট্রিক অ্যাসিড, অক্সিজেন, পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট, গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড, ওজোন, পটাশিয়াম ডাই-ক্রোমেট, হাইড্রোজেন পারক্সাইড, ফ্লুওরিন, রেড লেড, তরল ব্রোমিন, ক্লোরিন, কয়েকটি বিজারকের বিজারণ ক্ষমতার উদাহরণ ...

জারণ বিজারণের ইলেক্ট্রনীয় মতবাদ

জারণ ও বিজারণ রসায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিক্রিয়া । সাধারণত কোনো মৌলে বা যৌগে অক্সিজেনের সংযুক্তি বা কোনো যৌগ থেকে হাইড্রোজেনের বিযুক্তিকে জারণ এবং কোনো মৌলে বা যৌগে হাইড্রোজেনের সংযুক্তি বা কোনো যৌগ থেকে অক্সিজেনের বিযুক্তিকে বিজারণ বলা হয় । ...

সমযোজী যৌগগুলির বৈশিষ্ট্য

সাধারণ তাপমাত্রায় বেশির ভাগ সমযোজী যৌগ সাধারণত তরল কিংবা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে কিন্তু বেশি আণবিক গুরুত্ববিশিষ্ট সমযোজী মৌল বা যৌগগুলি কঠিন বা তরল হয় । সমযোজী যৌগে সমযোজী বন্ধন দৃঢ় প্রকৃতির, তার ফলে অণুগুলি স্থায়ী হয় । ...

ইলেক্ট্রনীয় যোজ্যতা বা তড়িৎ-যোজ্যতা

সাধারণ অবস্থায় পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রন এবং প্রোটন সংখ্যা সমান হওয়ার জন্য পরমাণু নিস্তড়িৎ হয় । সাধারণ নিয়মে পরমাণুর সংযোগ হওয়ার সময় ধাতুর পরমাণু ইলেকট্রন বর্জন এবং অধাতুর পরমাণু ইলেকট্রন গ্রহণ করে । ফলে কোনো পরমাণু ইলেকট্রন বর্জন করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হয় ...