বাড়িতে বিদ্যুৎ-লাইন ব্যবস্থা

Submitted by arpita pramanik on Sat, 01/26/2013 - 22:25

বাড়িতে বিদ্যুৎ-লাইন ব্যবস্থা বা হাউস-ওয়ারিং ব্যবস্থা (House-hold circuits) :

বৈদ্যুতিক ফিউজ (Electric fuse) : কোনো কারণে বাড়িতে বিদ্যুৎ লাইনে নিরাপদ সীমার অতিরিক্ত তড়িৎপ্রবাহ চালু হলে আগুন লেগে বিপদ ঘটতে পারে । বাড়িতে তড়িৎ বর্তনীর লাইনে নিরাপত্তার জন্য কম গলনাঙ্ক বিশিষ্ট কোনোও সংকর ধাতুর তৈরি এবং বেশি রোধের যে সরু তার শ্রেণি সমবায়ে লাইন তারের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়, যা নির্দিষ্ট সীমার বেশি তড়িৎ প্রবাহিত হলে উত্তপ্ত হয়ে নিজে থেকে গলে যায় এবং তড়িৎ-বর্তনীকে ছিন্ন করে দেয়, তাকে বৈদ্যুতিক ফিউজ বলে ।  

সাধারণত টিন ও সিসার (সিসা 75% এবং নিকেল 25%) এক রকম সংকর ধাতুর তৈরি সরু তার ফিউজ হিসাবে ব্যবহৃত হয় । চীনামাটির ছোটো আবরণের মধ্যে ফিউজ তারকে রাখা হয় । ফিউজ তারকে স্ক্রু -এর সাহায্যে আটকে নিয়ে আবরণটিকে মূল বর্তনীতে রাখা হোল্ডারের মধ্যে চেপে বসিয়ে দিয়ে বিদ্যুতের মেইন-লাইনের সঙ্গে যুক্ত করা হয় ।

হাউস-ওয়ারিং ব্যবস্থা উপরের রেখাচিত্রের সাহায্যে দেখানো হয়েছে । মূল রাস্তার দুটি লাইন থেকে দুটি তার এসে চিত্রের মতো মিটার বাক্সের মধ্য দিয়ে মেইন সুইচে ঢোকে । বাড়িতে আলো, পাখা ইত্যাদি শাখা লাইনের সঙ্গে সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত থাকে ।

টু-পিন প্লাগ (Two-pin plug) : যে প্লাগে দুটো পিনের ব্যবস্থা থাকে, তাকে টু-পিন প্লাগ বলে ।  

থ্রি-পিন প্লাগ (Three-pin plug) : যে প্লাগে তিনটি পিনের ব্যবস্থা থাকে, তাকে থ্রি-পিন প্লাগ বলে । থ্রি-পিন প্লাগে দুটো সরু পিন দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ যায়-আসে, আর অপেক্ষাকৃত মোটা তৃতীয়টির সঙ্গে আর্থের সংযোগ করা থাকে ।  

আর্থিং এবং তারের কালার কোডিং (Earthing and colour coding of wires) : থ্রি-পিন প্লাগের সঙ্গে যে ফ্লেক্সিবল-কর্ড লাগানো হয় তাতে তিনগাছা তার থাকে । এদের মধ্যে দুটো তার লাইনের সঙ্গে সমান্তরাল যুক্ত করা হয় - লাল রং -এর প্লাস্টিকের ইনসুলেশন তারটি লাইনের তারের সঙ্গে এবং কালো রং -এর তারটি নিউট্রাল তার -এর সঙ্গে যুক্ত করা হয় । আর তৃতীয় সবুজ রং -এর তারের একটি প্রান্ত প্লাগের আর্থ পিন -এর সঙ্গে লাগিয়ে অন্য প্রান্ত হিটার, ইস্ত্রি, টেবিল পাখা প্রভৃতি ধাতুর খোলওয়ালা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির বাইরের আবরণের সঙ্গে লাগাতে হয় । বর্তমানে আন্তর্জাতিক নিয়মে লাইভ তার -কে বাদামি, নিউট্রাল তারকে হালকা নীল এবং আর্থ তারকে সবুজ বা হলুদ রং -এর অন্তরিত করা হয় । লাইনের খোলা লাইভ তারের সঙ্গে যন্ত্রপাতির ধাতু নির্মিত বহিরাবরণের সংযোগ কখনো ঘটে যেতে পারে । এই অবস্থায় বহিরাবরণের সঙ্গে সংস্পর্শে যাতে কোনো রকম বিপদ না ঘটে, সেজন্য বহিরাবরণের সঙ্গে উপযুক্ত পরিবাহীর দ্বারা আর্থের সংযোগ ঘটালে তবেই নিরাপত্তা সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায় । আর্থ পিন অপেক্ষাকৃত মোটা করা হয় যাতে ভুল করে এটিকে লাইভ বা নিউট্রাল ছিদ্রে প্রবেশ করানোর চেষ্টা না করা হয় । 

*****

Comments

Related Items

তড়িৎ-বিশ্লেষণের প্রয়োগ

তীব্র তড়িৎ-ধনাত্মক ধাতুগুলি যেমন - সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতি ধাতুগুলিকে তাদের আকরিক থেকে নিষ্কাশিত করা হয় । আবার কতকগুলি ধাতু যেমন - কপার, জিঙ্ক, অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতির তড়িৎ-বিশ্লেষণ পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিশোধন করা হয় । ...

কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণ

কপার সালফেট জলে আয়নিত হয়ে কপার (+) এবং সালফেট (-) আয়ন উত্পন্ন করে । সুতরাং, জলীয় দ্রবণে চার প্রকার আয়ন থাকে, দুধরনের ক্যাটায়ান H (+) ও Cu (+) এবং দু ধরনের অ্যানায়ন OH (-) ও সালফেট (-) ।

জলের তড়িৎ-বিশ্লেষণ

বিশুদ্ধ জল তড়িতের কুপরিবাহী, কিন্তু সামান্য অ্যাসিড কিংবা ক্ষার জলে মেশালে ওই জল তড়িতের সুপরিবাহী হয় । এর কারণ হল বিশুদ্ধ জলে খুব কম সংখ্যক অণু H+ এবং OH- আয়নে বিশ্লেষিত অবস্থায় থাকে । ওই জলে সামান্য অ্যাসিড কিংবা ক্ষার যোগ করলে এদের আয়ন ...

তড়িৎ-বিশ্লেষ্য ও তড়িৎ-অবিশ্লেষ্য পদার্থ

যেসব পদার্থ জলে দ্রবীভূত বা গলিত অবস্থায় আয়নে বিশ্লিষ্ট হয়ে তড়িৎ পরিবহন করে এবং তড়িৎ পরিবহনের ফলে নিজেরা রাসায়নিকভাবে বিশ্লিষ্ট হয়ে নতুন ধর্মবিশিষ্ট পদার্থ উত্পন্ন হয়, সেই সব পদার্থকে তড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থ বলে ।

তড়িৎ-পরিবাহী এবং তড়িৎ-অপরিবাহী

যে সব পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ-প্রবাহিত করলে তা তড়িৎ-পরিবহনে সক্ষম হয়, তাদের তড়িৎ-পরিবাহী পদার্থ বলে । যেমন; সোনা, রুপো, তামা, প্রভৃতি ধাতু, গ্রাফাইট, সোডিয়াম ক্লোরাইড দ্রবণ ইত্যাদি । তড়িৎ-পরিবহনে সক্ষম এমন পদার্থগুলিকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় --