Submitted by arpita pramanik on Sun, 05/22/2011 - 12:50

ডিটারজেন্ট (Detergent) :

ডিটারজেন্ট হল লবণ জাতীয় জৈব ও অজৈব পদার্থের মিশ্রণ । ডিটারজেন্টের গঠন অনেকটা সাবানের মত । এর অণুর একটি অংশ জল অনুরাগী এবং অপরটি জল বিরাগী । এগুলি কয়লা ও পেট্রোলিয়ামের হাইড্রোকার্বন থেকে তৈরি হয় । হাইড্রোকার্বনের অংশটি জল বিরাগী এবং জল অনুরাগী অংশটি সালফেট বা সালফোনেট দিয়ে গঠিত । ওয়াশিং পাউডারে প্রায় 10-30% ডিটারজেন্ট থাকে । ডিটারজেন্টে সোডিয়াম সালফেট ও সোডিয়াম সিলিকেট মেশানো হয়, কারণ এরা ডিটারজেন্টকে শুষ্ক রাখে । ডিটারজেন্টের সঙ্গে সোডিয়াম ট্রাইপলি ফসফেট বা সোডিয়াম কার্বনেট মিশিয়ে একে ক্ষারীয় করলে এর ময়লা পরিষ্কারের ক্ষমতা অনেকগুণ বেড়ে যায় । ডিটারজেন্টের কার্বক্সি মিথাইল সেলুলোজ উপাদানটি জলের মধ্যে ময়লার অণুগুলিকে প্রলম্বিত রাখে । ব্লিচিং পদার্থ হিসাবে সোডিয়াম পারবোরেট মেশালে শুভ্রতা বাড়ে ।

সাবানের পরিবর্তে জামা-কাপড় কাচা বা ধোয়ার জন্য বহুল পরিমাণে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে । সমস্ত ডিটারজেন্ট কিন্তু একই সংযুক্তি থাকে না । প্রচলিত দুটি সিন্থেটিক ডিটারজেন্ট হল— (1) দীর্ঘ শৃঙ্খল সোডিয়াম অ্যালকিল সালফেট (CH3 - (CH2)10 - CH2 - SO-4Na+) এবং  (2) দীর্ঘ শৃঙ্খল সোডিয়াম অ্যালকিল বেঞ্জিন সালফানেট (CH3 - (CH2)11 - C6H4 - SO-3Na+) । বর্তমানে দ্বিতীয় ডিটারজেন্টটি বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হচ্ছে ।

প্রকৃতি :-

[i] ডিটারজেন্ট বস্তুটি গন্ধহীন, বর্ণহীন অনুদ্বায়ী কঠিন পদার্থ ।

[ii] এটি কঠিন ও তরল উভয় প্রকারের হয় এবং এটি একটি জৈব লবণ যা জলে সম্পূর্ণ দ্রবণীয় ।

[iii] সাধারণ অবস্থায় ডিটারজেন্ট প্রশম পদার্থ কিন্তু জলে দ্রবীভূত করলে ক্ষারীয় হয় ।

ব্যবহার :- বর্তমান যুগে ডিটারজেন্টের ব্যবহার ব্যাপক । শুধুমাত্র কাপড় কাচার কাজ নয়, শ্যাম্পুতে, মুখ পরিষ্কার (Mouth wash) করতে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হয় । তাছাড়া জীবাণুনাশক হিসাবে ও খর জলে ফেনা উত্পন্ন করতে সাবানের অসুবিধা হলেও ডিটারজেন্টের হয় না । অ্যাসিড মিশ্রিত জল হলেও ডিটারজেন্ট ব্যবহারে অসুবিধা হয় না ।

পরিবেশ দুষণ :- ডিটারজেন্টগুলি বায়োডিগ্রেডেবল নয়, সহজে এরা জল বা মাটির সঙ্গে মিশে অন্য পদার্থে বিয়োজিত হতে পারে না । এদের দীর্ঘ শৃঙ্খলগুলি প্রায় অবিকৃতভাবে জলের মধ্যে থাকে, তাতে জল দুষিত হয় । পরিণামে জলজ জীবনের ক্ষতি হয় এবং পরিবেশ দূষণ ঘটে ।

*****

Related Items

হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার

রসায়নাগারে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড খুবই প্রয়োজনীয় বিকারক । ক্লোরিনের শিল্পোত্পাদনে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার হয় । অ্যাকুয়া রিজিয়া (অম্লরাজ) প্রস্তুতিতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার হয়, যা সোনা গলাতে দরকার হয় । রঞ্জন শিল্পে, চর্ম শিল্পে, লোহার ওপর দস্তা ...

হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের শনাক্তকরণ

সিলভার নাইট্রেট দ্রবণের সঙ্গে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় অদ্রাব্য সিলভার ক্লোরাইডের থকথকে সাদা অধঃক্ষেপ পাওয়া যায় । এই অধঃক্ষেপ নাইট্রিক অ্যাসিড -তে অদ্রাব্য কিন্তু অতিরিক্ত অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সিড -এ দ্রাব্য । হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের মধ্যে ক্লোরিন এবং হাইড্রোজেন ...

হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাসের ধর্ম

হাইড্রোজেন ক্লোরাইড বর্ণহীন, শ্বাসরোধী, ঝাঁঝালো গন্ধযুক্ত, অম্লস্বাদ বিশিষ্ট গ্যাস । হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস বাতাসের চেয়ে প্রায় 1.3 গুণ ভারী, এর বাষ্পীয় ঘনত্ব 18.25। এই গ্যাস জলে অত্যন্ত দ্রাব্য, 0°C উষ্ণতায় এবং প্রমাণ চাপে 1 সিসি জলে 450 সিসি হাইড্রোজেন ক্লোরাইড ...

হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড প্রস্তুতি

HCl -এর জলীয় দ্রবণ অর্থাৎ, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড প্রস্তুতি: গ্যাসীয় অবস্থায় HCl -কে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড বলে । এই গ্যাসের জলীয় দ্রবণকে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড বলে । উত্পন্ন হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাসকে জলে দ্রবীভূত করলে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড পাওয়া যায় । ...

হাইড্রোজেন ক্লোরাইড এবং হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড

1648 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী গ্লোবার রক সল্ট ও গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিডের বিক্রিয়া ঘটিয়ে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস তৈরি করেন । বিজ্ঞানী প্রিস্টলী 1772 খ্রিস্টাব্দে সমুদ্রের লবণ থেকে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড প্রস্তুত করেন । তিনিএই অ্যাসিডের নাম দেন সামুদ্রিক অ্যাসিড ...