Submitted by arpita pramanik on Sun, 05/22/2011 - 11:24

কলিচুন (Slaked Lime) :

কলিচুনের রাসায়নিক নাম ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সাইড এবং রাসায়নিক সংকেত Ca(OH)2 । পাথুরে চুনের (CaO) সঙ্গে জল মিশিয়ে কলিচুন প্রস্তুত করা হয়  ।

CaO + H2O = Ca(OH)2 + উৎপন্ন তাপ ।

প্রকৃতি :-

[i] কলিচুন সাদা, গন্ধহীন, অনিয়তাকার একটি অজৈব কঠিন পদার্থ ।

[ii] কলিচুন অনুদ্বায়ী পদার্থ এবং জলে সামান্য দ্রাব্য ।  উষ্ণতা বৃধিতে এর দ্রাব্যতা কমে যায় । তাই গরম জলের চেয়ে ঠান্ডা জলে কলিচুনের দ্রাব্যতা বেশি হয় ।

[iii] জলে কলিচুন মেশালে ওপরের অংশে যে স্বচ্ছ দ্রবণ পাওয়া যায়, তাকেই চুনজল বলে । চুনের পরিমাণ বেশি হলে মিশ্রণটি দুধের মতো সাদা দেখায় । একে চুনগোলা (milk of lime) বলে ।

[iv] কলিচুন তীব্র ক্ষারীয় পদার্থ । অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে লবণ এবং জল উৎপন্ন করে ।

[v] অ্যামোনিয়াম লবণের সঙ্গে উত্তপ্ত করলে অ্যামোনিয়া গ্যাস নির্গত হয় ।

[vi] কলিচুনের সঙ্গে ক্লোরিন মিশিয়ে ব্লিচিং পাউডার উৎপন্ন করা হয় ।

[vii] কলিচুন CO2 শোষণ করে । স্বচ্ছ চুনজলের মধ্যে CO2 চালনা করলে অদ্রাব্য CaCO3 উৎপন্ন হয় । তাই চুনজল ঘোলা হয়ে থাকে ।

     Ca(OH)2 + CO2 = CaCO3 + H2O

ব্যবহার :-

[i] ব্লিচিং পাউডার এবং কষ্টিক সোডা প্রস্তুতিতে কলিচুন ব্যবহার করা হয় ।

[ii] সলভে পদ্ধতিতে প্রাপ্ত অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড এবং কয়লার অন্তর্ধুম পাতনের ফলে প্রাপ্ত অ্যামোনিয়া-দ্রব্য থেকে অ্যামোনিয়া গ্যাস পুনরুদ্ধারে কলিচুন ব্যবহৃত হয় ।

[iii] খরজলকে মৃদু করতে কলিচুন ব্যবহৃত হয় ।

[iv] সিমেন্ট কংক্রীট প্রস্তুতিতে এবং অট্টালিকা নির্মাণে কলিচুন ব্যবহার করা হয় ।

[v] মাটির অ্যাসিড ধর্ম হ্রাস করতে কলিচুন ব্যবহার করা হয় ।

[vi] বাড়ির দেওয়াল চুনকাম করতে কলিচুনের ঘন জলীয় দ্রবণ ব্যবহৃত হয় ।

*****

Related Items

গাণিতিক প্রশ্নোত্তর : অ্যাভোগাড্রোর সূত্র

অ্যাভোগাড্রো সূত্র সম্পর্কিত গাণিতিক প্রশ্নোত্তর ও তার সমাধান এখানে দেওয়া হলো । বিভিন্ন পরীক্ষায় আগত প্রশ্নোত্তর আলোচনা ও তার সমাধান ...

অ্যাভোগাড্রোর সূত্রের অনুসিদ্ধান্ত

অ্যাভোগাড্রোর সূত্র থেকে নিম্নলিখিত অনুসিদ্ধান্তগুলি পাওয়া যায়— নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলি ছাড়া অন্যান্য মৌলিক গ্যাসগুলি (যেমন— হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ইত্যাদি) দ্বি-পরমাণুক । কোনো গ্যাসের আণবিক ভর [M] গ্যাসটির বাষ্প ঘনত্বের [D] দ্বিগুণ অর্থাৎ, M = 2D ।

আণবিক ভর ও গ্রাম-পারমাণবিক ভর

আণবিক ভর ও গ্রাম-পারমাণবিক ভর :

আণবিক ভর (Molecular mass) :

কোনো মৌল বা যৌগের একটি অণু একটি কার্বন -12 (C12) পরমাণুর ভরের 1/12 অংশের তুলনায় যতগুণ ভারী, সেই তুলনামূলক সংখ্যাটিকে ওই মৌল বা যৌগের আণবিক ভর বলে

অ্যাভোগাড্রোর প্রকল্প

একই চাপ ও উষ্ণতায় সম-আয়তন সকল গ্যাসের মধ্যে সমান সংখ্যক অণু থাকে । বার্জিলিয়াসের প্রকল্প সংশোধন করে অ্যাভোগাড্রো এই প্রকল্পটি প্রকাশ করেন । এটি অ্যাভোগাড্রোর প্রকল্প নামে খ্যাত । অ্যাভোগাড্রোর সূত্রের সাহায্যে গ্যাস-আয়তন সূত্র এবং পরমাণুবাদের মধ্যে সমন্বয় ...

অণুর ধারণা ও প্রকারভেদ

বিজ্ঞানী ডালটনের পরমাণুবাদের মূল কথা হল— প্রত্যেক মৌলিক পদার্থ বহু সংখ্যক অতি ক্ষুদ্র অবিভাজ্য কণা দিয়ে গঠিত । এই ক্ষুদ্রতম কণাগুলির নাম হল পরমাণু । রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলি পূর্ণ সংখ্যার সরল অনুপাতে যুক্ত হয়ে যৌগ গঠন করে । ...