ভৌতরাশির দৈর্ঘ্য পরিমাপে সাধারণ রৈখিক স্কেলের ব্যবহার

Submitted by arpita pramanik on Sun, 03/18/2018 - 09:21

ভৌতরাশির দৈর্ঘ্য পরিমাপে সাধারণ রৈখিক স্কেলের ব্যবহার (Measurement of length with ordinary linear scale)

বিভিন্ন ভৌতরাশির [Physical quantity] দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য ব্যবহারিক জীবনে আমরা যে সমস্ত যন্ত্র ব্যবহার করি তার মধ্যে সাধারণ রৈখিক স্কেল (Ordiary linear scale) হল অন্যতম ।

ordinary scale  

সাধারণ রৈখিক স্কেল (Ordiary linear scale ) : দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রকে রৈখিক স্কেল বলা হয় । স্কেল সাধারণত প্লাস্টিক, কাঠ বা ধাতুর তৈরি হয় এবং এর দৈর্ঘ্য বরাবর একধারে মিলিমিটার ও সেন্টিমিটারে এবং ওপর ধারে ইঞ্চি ও তার ভগ্নাংশে দাগ কাটা থাকে ।

সাধারণ স্কেলের ব্যবহার : স্কেলটিকে রেখাংশের উপর এমন ভাবে বসাতে হবে যেন স্কেলের দাগ কাটা ধার রেখাংশের সঙ্গে সমাপতিত হয় । রেখাংশের বাম প্রান্তকে স্কেলের নির্দিষ্ট দাগের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে ডান প্রান্তে স্কেলের সঙ্গে লম্বভাবে তাকিয়ে পাঠ নেওয়া হয় । দুই প্রান্তের পাঠের ব্যবধানই রেখাংশটির দৈর্ঘ্য ।

সাধারণ স্কেলে দৈর্ঘ্য পরিমাপের সীমা : আমরা যে সব স্কেল ব্যবহার করি তা মিলিমিটারে অংশাঙ্কিত ধারে ক্ষুদ্রতম এক ঘর 1 মিলিমিটার এবং ইঞ্চিতে অংশাঙ্কিত ধারে ক্ষুদ্রতম এক ঘর 0.1 ইঞ্চি হয় । তাই এই ন্যূনতম 1 মিলিমিটার বা 0.1 ইঞ্চি দৈর্ঘ্য সঠিক ভাবে পরিমাপ করা যায় । 1 ফুট দৈর্ঘ্যের স্কেলে, স্কেলের একধারে 30 সেমি এবং অপরধারে 12 ইঞ্চি পর্যন্ত দাগ কাটা থাকে বলে সর্বোচ্চ ওই দৈর্ঘ্য মাপা সম্ভব ।

 

সাধারণ রৈখিক স্কেলে দৈর্ঘ্য পরিমাপে ত্রুটি : সাধারণ স্কেলে দৈর্ঘ্য পরিমাপে বিভিন্ন ত্রুটি গুলি হল –

(1) চোখের আন্দাজ জনিত ত্রুটি : দৈর্ঘ্য পরিমাপের সময় বামদিকের পাঠ নির্দিষ্ট দাগে বসলেও ডানদিকের পাঠ নির্দিষ্ট দাগে নাও মিলতে পারে । সেক্ষত্রে ডানদিকের পাঠ চোখের আন্দাজে ঠিক করতে হয় । ফলে পাঠে যে ত্রুটি আসে তাকেই চোখের আন্দাজ জনিত ত্রুটি বলা হয় । সাধারণ স্কেলে এই ত্রুটির সম্ভাবনা থেকেই যায় ।

(2) যান্ত্রিক ত্রুটি  : স্কেলের ক্ষুদ্রতম ঘর গুলি সমান সমান ফাঁক বিশিষ্টি না হলে এই ত্রুটি আসে ।  এরূপ স্কেলের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে দৈর্ঘ্য মেপে গড় নিলে এই ত্রুটি যথা সম্ভব কমানো যায় ।

(3)  লম্বন ত্রুটি : স্কেলের পাঠ নেওয়ার সময় আমাদের দৃষ্টি রেখাকে স্কেলের সঙ্গে লম্বভাবে না রেখে তীর্যকভাবে রাখা হলে পাঠে যে ত্রুটি থাকে  তাকে লম্বন ত্রুটি বলে । পাঠ নেওয়ার বিন্দুতে দৃষ্টি রেখাকে লম্বভাবে স্থাপন করলে এই ত্রুটি দূর করা সম্ভব হয় ।

উষ্ণতার পরিবর্তনে ধাতব দন্ডের প্রসারণ বা সংকোচন কাঠের বা প্লাস্টিক দন্ডের প্রসারণ বা সংকোচনের তুলনায় অনেক বেশি । সেজন্য সাধারণ স্কেল ধাতুর না করে প্লাস্টিক বা কাঠের করাই শ্রেয় । ধাতুর স্কেলে পরিমিত দৈর্ঘ্য শীতকালে এবং গ্রীষ্মকালে ভিন্ন হবে অর্থাৎ, পরিমাপে ত্রুটি থাকার সম্ভাবনা থাকে ।

রৈখিক স্কেলের সাহায্যে বক্ররেখার দৈর্ঘ্য পরিমাপ : একটি লম্বা সুতো নিয়ে রেখাটির সঙ্গে মিলিয়ে তার উপর রাখতে হবে এবং রেখাটির দুপ্রান্তকে সুতোয় চিহ্নিত করতে হবে । এরপর সুতোটিকে টানটান করে ধরে চিহ্নিত দাগ দুটির মাঝের দূরত্ব স্কেলের সাহায্যে মেপে নিলে বক্ররেখার সঠিক দৈর্ঘ্য মাপা যায় ।

রৈখিক স্কেলের সাহায্যে পাতলা কাগজের বেধ পরিমাপ : একটি বড়ো পাতলা কাগজ নিয়ে অনেকবার ভাঁজ করে নিতে হবে । এবার ভাঁজ করা মোটা অংশটির বেধ স্কেল দিয়ে মেপে নিতে হবে । প্রাপ্ত বেধ কে ভাঁজ সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলেই পাতলা কাগজের বেধ জানা যায় । যদি n সংখ্যক ভাঁজের মোট বেধ d হয় তবে পাতলা কাগজটির বেধ = [tex]\frac {d}{n}[/tex] ।

*****

Comments

Related Items

ক্ষারক ও ক্ষারকের ধর্ম

ক্ষারকের গুলি হল---ক্ষারকের জলীয় দ্রবণ নির্দেশকের (Indicators) বর্ণ পরিবর্তন করে । যেমন ক্ষারকের জলীয় দ্রবণ লাল লিটমাসকে নীল করে । ক্ষারকের সঙ্গে অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় লবণ এবং জল উৎপন্ন হয় ।

অ্যাসিড ও অ্যাসিডের ধর্ম

সব অ্যাসিড কমবেশি অম্ল স্বাদ যুক্ত । লেবু, আমলকি, তেতুল, টক দই প্রভৃতিতে অ্যাসিড আছে । সেই জন্য এদের স্বাদ অম্ল যুক্ত । অ্যাসিড নির্দেশকের (Indicators) বর্ন পরিবর্তন করে । অ্যাসিডের জলীয় দ্রবণ নীল লিটমাসকে লাল করে এবং মিথাইল অরেঞ্জ এর রং কমলা থেকে লাল বর্ণে পরিণত করে । এর দ্বারা অ্যাসিডকে সনাক্ত করা হয় ।

বল এবং বলের পরিমাপ

নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে আমরা বলের সংজ্ঞা পাই । এই সূত্র থেকে বোঝা যায় কোন বস্তুর উপর বাইরে থেকে কিছু প্রয়োগ করলে তবেই বস্তুটির অচল বা সচল অবস্থার পরিবর্তন হয় । কোন জড় বস্তু জাড্য ধর্মের জন্য নিজে থেকে নিজের অচল বা সচল অবস্থার পরিবর্তন করতে পারে না ।

পদার্থের জাড্য ধর্ম (Inertia of Matter)

জড়বস্তু যে ধর্মের জন্য নিজের স্থিতিশীল বা গতিশীল অবস্থার পরিবর্তনে বাধা দেয় বা জড়বস্তু যে ধর্মের জন্য নিজে যে অবস্থায় থাকে সেই অবস্থায় থাকতে চায় সেই ধর্মকে পদার্থের জাড্য ধর্ম বা জড়তা (Inertia) বলে । এজন্য নিউটনের প্রথম গতিসূত্রকে জাড্যের সূত্র ( Law of Inertia) বলে।

নিউটনের গতিসূত্র

বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন (Sir Isaac Newton) বস্তুর গতি সম্পর্কে তিনটি মূল্যবান সূত্র আবিষ্কার করেন । এই সূত্র নিউটনের গতিসূত্র নামে পরিচিত । দার্থবিদ্যা (Physics)এবং কারিগরি বিদ্যার অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়েছে নিউটনের গতিসূত্র দ্বারা