‘স্বত্ববিলোপ নীতি’ কে প্রবর্তন করেন ? এই নীতির মূলকথা কী ছিল ? এই নীতি প্রয়োগ করে সর্বপ্রথম এবং কোন কোন দেশীয় রাজ্যকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয় ?

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 01/06/2022 - 11:58

প্রশ্ন:-  ‘স্বত্ববিলোপ নীতি’ কে প্রবর্তন করেন ? এই নীতির মূলকথা কী ছিল ? এই নীতি প্রয়োগ করে সর্বপ্রথম এবং কোন কোন দেশীয় রাজ্যকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয় ?

লর্ড ডালহৌসি স্বত্ববিলোপ নীতি প্রবর্তন করেন ।

স্বত্ববিলোপ নীতি (Doctrine of lapse) : এই নীতির মূলকথা ছিল এই যে, ইংরেজদের আশ্রিত কোনো রাজ্যের উত্তরাধিকারী না থাকলে সেই রাজ্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করা হবে এবং দত্তক পুত্রের উত্তরাধিকার স্বীকার করা হবে না । ডালহৌসি স্বত্ববিলোপ নীতি ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করে রাজ্য বিস্তারে উদ্যোগী হন । দত্তক প্রথা প্রয়োগ করার ব্যাপারে, তিনি দেশীয় রাজ্যগুলিকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করেন, যথা— (১) কোম্পানির সৃষ্ট দেশীয় রাজ্য; (২) কোম্পানির অধীন করদ রাজ্য এবং (৩) স্বাধীন দেশীয় রাজ্য । 

লর্ড ডালহৌসি এক নির্দেশনামা ঘোষণা করে প্রথম শ্রেণির দেশীয় রাজ্যগুলিতে দত্তক-প্রথা নিষিদ্ধ করেন; দ্বিতীয় শ্রেণির রাজ্যে কোম্পানির অনুমতি ছাড়া দত্তক গ্রহণ করা নিষিদ্ধ করেন এবং স্বাধীন দেশীয় রাজ্যগুলিতে দত্তক প্রথা বহাল রাখেন । ডালহৌসির এই নির্দেশনামা স্বত্ববিলোপ নীতি নামে খ্যাত ।

স্বত্ববিলোপ নীতি কঠোরভাবে প্রয়োগ করে

(১) ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম সাতারা নামক দেশীয় রাজ্যকে ব্রিটিস সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয় ।

(২) এর পর ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে নাগপুরের রাজা অপুত্রক অবস্থায় মারা গেলে তাঁর রাজ্যটি গ্রাস করা হয়, এক্ষেত্রে ডালহৌসির যুক্তি ছিল এই যে, নাগপুর রাজ্যটি ইংরেজরাই সৃষ্টি করে ছিল ।

(৩) ঝাঁসির রাজা গঙ্গাধর রাও-এর মৃত্যু হলে ডালহৌসি তাঁর দত্তক পুত্রকে মেনে নিতে রাজি হলেন না এবং ঝাঁসির রানির মতামতকে উপেক্ষা করেই এই রাজ্যটিকে দখল করা হয় ।

(৪) পরবর্তীকালে ভগৎপুর, করৌলি, সম্বলপুর, উদয়পুর, জৈৎপুর, বাগৎ প্রভৃতি রাজ্যগুলি একই কারণে গ্রাস করা হয়, যদিও উদয়পুর কোম্পানির সৃষ্ট দেশীয় রাজ্য ছিল না ।

*****

Comments

Related Items

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - সংস্কার : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - সংস্কার : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা:-

মাধ্যমিকের নমুনা প্রশ্ন :-

১.  'বামাবোধিনী' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন—          [মাধ্যমিক- ২০১৭]

ভাষার ভিত্তিতে ভারতে রাজ্য পুনর্গঠনের উদ্যোগ ও বিতর্ক

ভাষার ভিত্তিতে ভারতে রাজ্য পুনর্গঠনের উদ্যোগ ও বিতর্ক (Initiatives Undertaken and Controversies Related to Linguistic Reorganization of States):-

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট অবিভক্ত ভারত দ্বিখণ্ডিত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে । স্বাধীনতা লাভের পর ন

আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় দেশভাগ

আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় দেশভাগ :-

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের 'ভারতের স্বাধীনতা আইন' অনুযায়ী ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট অবিভক্ত ভারত দ্বিখণ্ডিত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে এবং ভারত ও পাকিস্তান নাম দুটি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয় । মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চ

১৯৪৭-পরবর্তী উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ ও বিতর্ক

১৯৪৭-পরবর্তী উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ ও বিতর্ক (Initiative Undertaken and Controversies Related to the Refugee Problem in Post-1947 India) :-

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হওয়া 'ভারতের স্বাধীনতা আইন' অনুসারে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব

কাশ্মীর রাজ্যের ভারত অন্তর্ভুক্তি

কাশ্মীর রাজ্যের ভারত অন্তর্ভুক্তি (Annexation of Kashmir):-

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হওয়া ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের 'ভারতের স্বাধীনতা আইন' অনুসারে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট অবিভক্ত ভারত দ্বিখণ্ডিত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে এবং ভারত ও পাকিস্তান নামে দু