Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 04/23/2012 - 19:25

লাহোর অধিবেশন (Lahore Congress) :

১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে ডিসেম্বর লাহোরে অনুষ্ঠিত জাতীয় কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনে গান্ধিজির অনুরোধে কংগ্রেসের তরুণ নেতা পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু সভাপতি নির্বাচিত হন । এর ঠিক এক বছর আগে জওহরলাল নেহরু ও সুভাষচন্দ্র বসু মিলিত ভাবে 'ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগ' (Independence League) গঠন করেন । তাই কংগ্রেসের লাহোর অধিবেশনে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ৩১শে ডিসেম্বর  'নেহরু রিপোর্ট' -এ উল্লিখিত 'ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাস' -এর পরিবর্তে 'পূর্ণ স্বরাজ' বা 'পূর্ণ স্বাধীনতা' -র প্রস্তাব গৃহীত হয় । স্বাধীনতার সংকল্প নিয়ে হাজার হাজার কংগ্রেস সদস্য শীত উপেক্ষা করে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ৩১শে ডিসেম্বর রাত্রি ১২টার সময় লাহোরের রাভী নদীর তীরে কংগ্রেসের 'ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা' উত্তোলন করে পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি জানিয়েছিলেন । মহাত্মা গান্ধি যিনি এযাবৎ কাল ব্রিটিশের সঙ্গে আপোষ নীতি চালিয়ে যাবার পক্ষপাতী ছিলেন তিনি পর্যন্ত এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করতে সাহস পান নি । অন্যান্য যে সকল প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন তাঁরাও এই অভিমত ব্যক্ত করলেন যে স্বাধীনতার জন্য ত্যাগ স্বীকার ও সংগ্রাম না করলে ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে ন্যায় বিচার আশা করা সম্ভব নয় । প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করা হল যে, ব্রিটিশ সরকারের সুনির্দিষ্ট মনোভাবের অভাবে প্রস্তাবিত গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দিয়ে কোনো লাভ হবে না । এরপর কংগ্রেস সদস্যদের ভবিষ্যৎ নির্বাচনসমূহে অংশ গ্রহণ না করতে এবং আইনসভাসমূহের সদস্যপদ ত্যাগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয় । সবশেষে এই অধিবেশনে জাতিকে আইন অমান্য আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়ে এক ব্যাপক জাতীয় আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয় । এইভাবে লাহোর কংগ্রেসের অধিবেশনে জওহরলাল নেহরুর সভাপতিত্বে জাতীয় কংগ্রেসের মধ্যে তারুণ্যের অভিষেক হয় ।

*****

Related Items

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (Pritilata Waddedar)

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (Pritilata Waddedar):-

বিশ শতকে ব্রিটিশ-বিরোধী বিভিন্ন গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ব্যর্থতার ফলে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে ওঠে । সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে বাংলার নারীসমাজ প্রথমদিকে পরোক্ষভাবে অংশ নি

দীপালি সংঘ (Dipali Sangha)

দীপালি সংঘ (Dipali Sangha):-

বিংশ শতকে জাতীয় কংগ্রেসের উদ্যোগে জাতীয় আন্দোলগুলি ভারতবাসীর স্বাধীনতার স্বপ্নপূরণ করতে ব্যর্থ হলে বাংলায় ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বৈপ্লবিক আন্দোলন সক্রিয় হয়ে ওঠে । এই সময় নারীদের সংগঠিত করে বিপ্লবী কার্যকলাপে শামি

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ (Nature of Women's Role in the Armed Revolution Struggles):-

বিশ শতকে ব্রিটিশ-বিরোধী বিভিন্ন গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ব্যর্থতার ফলে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে ওঠে । সশস্ত্র বিপ্

ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন

ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন (Women's Participation in the Quit India Movement):-

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৯ই আগস্ট মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দেয় । এই

আইন অমান্য আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন

আইন অমান্য আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন (Women's Participation in the Civil Disobedience Movement):-

১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে সারা বিশ্ব জুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয় । এই অর্থনৈতিক মন্দা ঔপনিবেশিক ভারতের অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করে । ভারতের কৃষিজাত পণ্