শল্কমোচন বা গোলাকার বিচূর্ণীভবন কাকে বলে ?

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 12/27/2021 - 10:15

প্রশ্ন:-  শল্কমোচন বা গোলাকার বিচূর্ণীভবন কাকে বলে ?

শল্কমোচন (Exfoliation) :- উষ্ণতার পার্থক্যে যান্ত্রিক আবহবিকারের অন্যতম এক প্রক্রিয়া হল শল্কোমোচন বা গোলাকার বিচূর্ণীভবন ।

(১) শিলা তাপের সুপরিবাহী না হওয়ায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দিনের বেলা সৌরতাপে শিলার বাইরের অংশ যতটা উষ্ণ হয় ভিতরের অংশ ততটা উষ্ণ হয় না । আবার,

(২) রাতে শিলার ওপরের অংশ যত তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হয়, ভিতরের অংশ ততটা হয় না । ফলে দিনে বা রাতে শিলার বাইরের ও ভিতরের মধ্যে উষ্ণতার যথেষ্ট পার্থক্য ঘটে ।

(৩) উষ্ণতার এই তারতম্যের প্রভাবে শিলাস্তরে ক্রমাগত প্রসারণ ও সংকোচন ঘটে । দীর্ঘদিন সংকোচন ও প্রসারণের ফলে শিলার ওপরের স্তর ওপরের দিকে প্রসারিত হয় । তখন ওপরের স্তর নীচের অপেক্ষাকৃত শীতল স্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পেঁয়াজের খোসার মতো খসে পড়ে, একে শল্কমোচন বলে ।

(৪) শল্কমোচনের ফলে শিলার টুকরোগুলি গোলাকার বা উপ-গোলাকার হয়ে পড়ে । একই জাতীয় খনিজ পদার্থে গঠিত সমপ্রকৃতির শিলায় শল্কমোচন বেশি হয় । সাধারণত গ্রানাইট শিলা গঠিত খাড়া ও অপ্রশস্ত পার্বত্য অঞ্চলে, যেখানে উষ্ণতার পার্থক্য বেশি, সেখানে গোলাকার বিচূর্ণীভবন বা শল্কমোচন বেশি দেখা যায় । পর্বতের ঢাল ও পাদদেশে সঞ্চিত এই জাতীয় বিচ্ছিন্ন ও খন্ডবিখন্ড প্রস্তর খন্ডগুলিকে স্ক্রী বা ট্যালাস বলে ।

*****

Comments

Related Items

হিমবাহ পৃষ্ঠের প্রকৃতি

হিমবাহ পৃষ্ঠের প্রকৃতি : ভূবিজ্ঞানী মঙ্কহাউস -এর মতে পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহের উপরে নানা ধরনের ফাটল দেখা যায় । এই ফাটলগুলি প্রধানত তিন প্রকারের হয় যথা—

হিমরেখা [Snow Line]

হিমরেখা [Snow Line] : মেরুপ্রদেশ ও উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের তীব্র শৈত্যে, যে কাল্পনিক সীমারেখার উপরে অত্যধিক শীতলতার জন্য সারা বছর তুষার জমে থাকে এবং যে সীমারেখার নীচে উত্তাপে তুষার গলে জলে পরিণত হয় সেই সীমারেখাকে হিমরেখা । ভূবিজ্ঞানী মঙ্ক

হিমশৈল (Iceberg)

হিমশৈল (Iceberg) :  মহাদেশীয় হিমবাহের হিমরেখা সমুদ্রপৃষ্ঠ হওয়ায় কখনো কখনো হিমাবাহের বিশালাকার বরফের অংশ ভেঙে সমুদ্রের জলে এসে পড়ে ও জলে ভাসতে থাকে । এইরূপ সমুদ্রের জলে ভাসমান ও গতিশীল বিশালাকার বরফের স্তুপকে হিমশৈল বলে । হিমশৈল মিষ্

হিমবাহের প্রকারভেদ (Classification of Glacier)

হিমবাহের প্রকারভেদ (Classification of Glacier) : বিজ্ঞানী অলম্যান অবস্থানের ভিত্তিতে হিমবাহকে তিনটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করেন । যথা— (ক) মহাদেশীয় হিমবাহ (Continental Glacier), (খ) পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ (Mountain or Valley glacier)

হিমবাহ (Glaciers)

হিমবাহ (Glaciers) : হিমারেখার উপরে তুষারক্ষেত্র । সেখানে যে তুষারপাত হয় তা প্রথম অবস্থায় আলগা আলগা হয়ে পড়ে থাকে । ফরাসি ভাষায় একে নেভে [Neve] বলে । এই তুষারকণা ক্রমশ পরস্পরের সঙ্গে মিশে বরফের স্থরে [Ice Sheet] এ পরিণত হয় । ক্রমশ আরও জামাট বেঁধে ও আয়তনে