লোহাচড়া, নিউমুর ও ঘোড়ামারা দ্বীপের বর্তমান অবস্থা

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 07/24/2021 - 16:42

লোহাচড়া, নিউমুর ও ঘোড়ামারা দ্বীপের বর্তমান অবস্থা : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সুন্দরবন অঞ্চলে বঙ্গোপসাগরের জলতলের উচ্চতা প্রায় ৩.১৪ মিমি. বৃদ্ধি পেয়েছে । উপকূল অঞ্চলের ক্ষয়, জোয়ারের প্রাবল্য ও সাইক্লোনের প্রভাবে এই অঞ্চলের দ্বীপগুলি ক্রমশ সমুদ্রজলে নিমজ্জিত হচ্ছে । যেমন—

লোহাচড়া দ্বীপ : হুগলি নদীর মোহনায় বেডফোর্ড দ্বীপের উত্তরে অবস্থিত লোহাচড়া দ্বীপটি জোয়ারের প্রাবল্যে ১৯৮০ সালে স্থায়ীভাবে প্লাবিত হয় এবং ২০০৬ সালে সম্পূর্ণরূপে সমুদ্রজলে নিমজ্জিত হয় । পলি সঞ্চয়ের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ২০০৯ সালে দ্বীপটিকে পুনরায় জেগে উঠতে দেখা যায় । তবে বছরের অর্ধেক সময় দ্বীপটি জলমগ্ন থাকে ।

নিউমুর দ্বীপ : ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমানা বরাবর হাড়িয়াভাঙ্গা নদীর মোহানা থেকে ২ কিমি. দূরে অবস্থিত দক্ষিণ তালপাতির নিউমুর দ্বীপটি ১৯৭০ সালে 'ভোলা' ঘূর্ণিঝড়ে জলমগ্ন হয় । ১৯৫১ সালে দ্বীপটির আয়তন ছিল প্রায় ৪০.১১ বর্গকিমি. । ২০১০ সালের পর সমুদ্রজলে প্রায় নিমজ্জিত হওয়ায় বর্তমানে দ্বীপটির অস্তিত্ব সংকটাপন্ন ।

ঘোড়ামারা দ্বীপ : কলকাতা থেকে ১৫০ কিমি. দক্ষিণে হুগলি নদীর মোহানায় সাগর দ্বীপের উত্তরে অবস্থিত ঘোড়ামারা দ্বীপটি বর্তমানে ক্রমশ জলে নিমজ্জিত হচ্ছে । এই দ্বীপটির খাসিমারা, লক্ষ্মীনারায়ণপুর প্রভৃতি জনবহুল গ্রাম ইতিমধ্যেই জলমগ্ন হয়েছে । হাটখোলা, মন্দিরতলা, চুনপুরী প্রভৃতি গ্রামগুলিও আগামী দিনে জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে । ১৯৫১ সালে এই দ্বীপের আয়তন ছিল প্রায় ৩৮.২৩ বর্গকিমি. । সমুদ্র জলতল বৃদ্ধি ও জোয়ারের প্রাবল্যে ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ২০১১ সালে এই দ্বীপের আয়তন কমে হয়েছে মাত্র ৪.৩৭ বর্গ কিমি. ।

*****

Comments

Related Items

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ (Causes of Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ (Causes of Ocean Currents) : সমুদ্রস্রোত বিভিন্ন কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে । এই কারণগুলি হল— (১) পৃথিবীর আবর্তন, (২) নিয়ত বায়ুপ্রবাহ, (৩) সমুদ্রজলের উষ্ণতা, (৪) সমুদ্রজলের ও লবণত্ব ও ঘনত্বের তারতম্য, (৫) বরফের গলন , (৬) উপকূলের আ

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents) : সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে, নির্দিষ্ট দিকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয় । সমুদ্রজলের এই প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে । সমুদ্রস্রোত সাধারণত একমুখী হয় । বায়ুপ্রবাহ দ্বারা তাড়িত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয় বলে এর গতিব

বারিমন্ডল (Hydrosphere)

বারিমন্ডল (Hydrosphere) : সৃষ্টির প্রথম অবস্থায় পৃথিবী ছিল এক উত্তপ্ত জ্বলন্ত মণ্ডল । ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তরল অবস্থায় আসে এবং অবিরাম তাপ বিকিরণ করে পৃথিবী ক্রমশ শীতল ও সংকুচিত হয় । আর সংকোচনের ফলে ভূপৃষ্ঠের গায়ে উঁচুনীচু আবরণের সৃষ্টি হয় । এই সম

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world)

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world) : পৃথিবীর যে সকল অঞ্চলে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মোটামুটি একই ধরনের বা সমধর্মী জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়, সেই সকল অঞ্চলকে এক-একটি জলবায়ু অঞ্চল বলা হয় । পৃথিবীর মুখ্য জলবায়ু অঞ্চলগুলি হল —

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall)

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall) : উৎপত্তির কারণ ও বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য অনুসারে বৃষ্টিপাতকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যথা:- (১) পরিচলন বৃষ্টিপাত, (২) শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত এবং (৩) ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত ।