মরুভূমি অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকার সর্বাধিক হয় কেন ?

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 12/27/2021 - 12:13

প্রশ্ন:- মরুভূমি অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকার সর্বাধিক হয় কেন ? 

তাপের দ্রুত পরিবর্তন এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে শিলাস্তর ফেটে ছোটো ছোটো খন্ড বা চূর্ণে পরিণত হয়ে যখন মূল শিলার ওপরে অবস্থান করে এবং তার মধ্যে যখন কোনো রকম রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে না, তখন তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে । আর্দ্রতার অভাবে মরু অঞ্চলে রাসায়নিক আবহবিকার ঘটে না । মরুভূমি অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকার সর্বাধিক হয়, কারণ:-

(১) শিলা তাপের সুপরিবাহী না হওয়ায় উষ্ণ অঞ্চলে উষ্ণতার তারতম্যের ফলে শিলাস্তরের ক্রমাগত প্রসারণ ও সংকোচন ঘটে । দীর্ঘদিন ধরে প্রসারণ ও সংকোচনের ফলে শিলাস্তর ফেটে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ছোটো ছোটো অংশে বিভক্ত হয় এবং কালক্রমে পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মূল শিলা স্তরের ওপরে অবস্থান করে, একে খন্ডবিখন্ডিকরণ বলে ।

(২) অনেক সময় প্রখর সূর্যকিরণে উত্তপ্ত শিলা নীচের স্তরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পেঁয়াজের খোসার মতো হয়ে যায়, একে শল্কমোচন বা গোলাকৃতি বিচূর্ণীভবন বলে ।

(৩) মরুভূমি অঞ্চলে সূর্যের প্রচন্ড তাপে মোটা দানাযুক্ত শিলা ভীষণ ভাবে শব্দ করে ফেটে যায়, একে ক্ষুদ্রকণা বিশরণ বলে । এ সবই যান্ত্রিক আবহবিকারের উদাহরণ । মরুভূমি অঞ্চলে দিনরাত্রি এবং শীত ও গ্রীষ্মকালে উষ্ণতায় পার্থক্য অন্যান্য জলবায়ু অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি হয় বলে মরুভূমি অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের হার সর্বাধিক ।

*****

Comments

Related Items

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents) : সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে, নির্দিষ্ট দিকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয় । সমুদ্রজলের এই প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে । সমুদ্রস্রোত সাধারণত একমুখী হয় । বায়ুপ্রবাহ দ্বারা তাড়িত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয় বলে এর গতিব

বারিমন্ডল (Hydrosphere)

বারিমন্ডল (Hydrosphere) : সৃষ্টির প্রথম অবস্থায় পৃথিবী ছিল এক উত্তপ্ত জ্বলন্ত মণ্ডল । ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তরল অবস্থায় আসে এবং অবিরাম তাপ বিকিরণ করে পৃথিবী ক্রমশ শীতল ও সংকুচিত হয় । আর সংকোচনের ফলে ভূপৃষ্ঠের গায়ে উঁচুনীচু আবরণের সৃষ্টি হয় । এই সম

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world)

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world) : পৃথিবীর যে সকল অঞ্চলে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মোটামুটি একই ধরনের বা সমধর্মী জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়, সেই সকল অঞ্চলকে এক-একটি জলবায়ু অঞ্চল বলা হয় । পৃথিবীর মুখ্য জলবায়ু অঞ্চলগুলি হল —

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall)

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall) : উৎপত্তির কারণ ও বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য অনুসারে বৃষ্টিপাতকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যথা:- (১) পরিচলন বৃষ্টিপাত, (২) শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত এবং (৩) ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত ।

অধঃক্ষেপণ (Precipitation)

অধঃক্ষেপণ (Precipitation) : সূর্যের উত্তাপে ভূপৃষ্ঠের সমুদ্র, হ্রদ, নদী, পুকুর, খাল, বিল প্রভৃতি জলরাশি থেকে জল জলীয়বাষ্পে পরিণত হয় । জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাস হাল্কা হওয়ার দরুন ঊর্ধগামী হয় । উপরের বায়ুমণ্ডলের প্রবল শৈত্যের সংস্পর্শে এলে ঘনিভবনের ফলে জলীয়বাষ