মগ্নচড়া কীভাবে সৃষ্টি হয় ? মগ্নচড়াগুলি মৎস্য চাষের অনুকূল কেন ?

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 01/03/2022 - 11:16

প্রশ্ন : মগ্নচড়া কীভাবে সৃষ্টি হয় ? মগ্নচড়াগুলি মৎস্য চাষের অনুকূল কেন ?

শীতল স্রোতের মিলনস্থলে শীতল স্রোত বাহিত হিমশৈল উষ্ণ স্রোতের সমুদ্র সংস্পর্শে এসে গলে যায় এবং হিমশৈল বাহিত শিলাখণ্ড, নুড়ি, কাঁকর ও  কাদা সমুদ্রের তলদেশে সঞ্চিত হয়ে মহাসাগরে মগ্নচড়ার সৃষ্টি করে ।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সুমেরু বৃত্ত থেকে আগত হিমশীতল লাব্রাডর স্রোতের সঙ্গে আসা হিমশৈলগুলির মধ্যে ছোটো বড়ো শিলাখন্ড, নুড়ি, কাঁকর ও কাদা মিশ্রিত থাকে । নিউফাউল্যান্ডের কাছে শীতল লাব্রাডর স্রোতের সঙ্গে উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের মিলন স্থলে এই স্রোতের সঙ্গে ভেসে আসা হিমশৈলগুলি গলে যায় । এই সব হিমশৈলগুলির মধ্যে থাকা নুড়ি, পাথর, কাঁকড়, কাদা প্রভৃতি থিতিয়ে পড়ে নিউফাউল্যান্ডের পূর্ব-উপকূলে সমুদ্রবক্ষে সঞ্চিত হয়ে ‘গ্রান্ড ব্যাঙ্ক' নামে বিখ্যাত মগ্নচড়ার সৃষ্টি করেছে ।

মগ্নচড়াগুলি মৎস্য চাষের অনুকূল :

(১) মগ্নচড়া অঞ্চলগুলি অগভীর হওয়ায় এবং নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে অবস্থিত হওয়ায় এখানে মাছের বসবাসের উপযোগী অনুকূল তাপমাত্রা পাওয়া যায়;

(২) মগ্নচড়া অঞ্চলগুলির উষ্ণ ও শীতল স্রোতের সংযোগস্থলে প্ল্যাঙ্কটন নামে এক ধরনের আণুবীক্ষণিক জীব প্রচুর পরিমাণে জন্মায় যা মাছের প্রধান খাদ্য । অর্থাৎ মাছের বসবাসের উপযোগী অনুকূল উষ্ণতা ও খাদ্যের অফুরন্ত যোগান থাকাতে মগ্নচড়াগুলিতে প্রচুর মাছ পাওয়া যায় । এই জন্যই মগ্নচড়াগুলি মৎস্য চাষের পক্ষে অনুকূল হয়েছে । যেমন— নিউফাউন্ডল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত আটলান্টিক মহাসাগরের গ্রান্ড ব্যাঙ্ক নামে মগ্নচড়াটি হল পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য চাষ কেন্দ্র ।

*****

Comments

Related Items

হিমবাহ পৃষ্ঠের প্রকৃতি

হিমবাহ পৃষ্ঠের প্রকৃতি : ভূবিজ্ঞানী মঙ্কহাউস -এর মতে পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহের উপরে নানা ধরনের ফাটল দেখা যায় । এই ফাটলগুলি প্রধানত তিন প্রকারের হয় যথা—

হিমরেখা [Snow Line]

হিমরেখা [Snow Line] : মেরুপ্রদেশ ও উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের তীব্র শৈত্যে, যে কাল্পনিক সীমারেখার উপরে অত্যধিক শীতলতার জন্য সারা বছর তুষার জমে থাকে এবং যে সীমারেখার নীচে উত্তাপে তুষার গলে জলে পরিণত হয় সেই সীমারেখাকে হিমরেখা । ভূবিজ্ঞানী মঙ্ক

হিমশৈল (Iceberg)

হিমশৈল (Iceberg) :  মহাদেশীয় হিমবাহের হিমরেখা সমুদ্রপৃষ্ঠ হওয়ায় কখনো কখনো হিমাবাহের বিশালাকার বরফের অংশ ভেঙে সমুদ্রের জলে এসে পড়ে ও জলে ভাসতে থাকে । এইরূপ সমুদ্রের জলে ভাসমান ও গতিশীল বিশালাকার বরফের স্তুপকে হিমশৈল বলে । হিমশৈল মিষ্

হিমবাহের প্রকারভেদ (Classification of Glacier)

হিমবাহের প্রকারভেদ (Classification of Glacier) : বিজ্ঞানী অলম্যান অবস্থানের ভিত্তিতে হিমবাহকে তিনটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করেন । যথা— (ক) মহাদেশীয় হিমবাহ (Continental Glacier), (খ) পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ (Mountain or Valley glacier)

হিমবাহ (Glaciers)

হিমবাহ (Glaciers) : হিমারেখার উপরে তুষারক্ষেত্র । সেখানে যে তুষারপাত হয় তা প্রথম অবস্থায় আলগা আলগা হয়ে পড়ে থাকে । ফরাসি ভাষায় একে নেভে [Neve] বলে । এই তুষারকণা ক্রমশ পরস্পরের সঙ্গে মিশে বরফের স্থরে [Ice Sheet] এ পরিণত হয় । ক্রমশ আরও জামাট বেঁধে ও আয়তনে