বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক কী ? বায়ুচাপ বলয়ের সঙ্গে মেরুবায়ুর সম্পর্ক কী ?

Submitted by avimanyu pramanik on Fri, 12/31/2021 - 10:34

প্রশ্ন :- বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক এবং বায়ুচাপ বলয়ের সঙ্গে মেরুবায়ুর সম্পর্ক কী  ?

বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক :-

(১) বায়ুচাপের তারতম্য হল বায়ুপ্রবাহের প্রধান কারণ ।

(২) বায়ুচাপের তারতম্যের দ্বারা বায়ুপ্রবাহের বেগ ও দিক নির্ধারিত হয় ।

(৩) কোনো স্থানের বায়ু উত্তপ্ত হলে সেখানে বায়ুচাপের হ্রাস ঘটে এবং আংশিক স্থান বায়ুশূন্য হয় । এই শূন্যস্থান পূরণের জন্য শীতল উচ্চচাপযুক্ত স্থান থেকে বাতাস নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হয় । বায়ুচাপের পার্থক্যের মাত্রার ওপর বায়ুপ্রবাহের বেগ নির্ভর করে ।

(৪) বায়ুচাপের পার্থক্য বেশি হলে বায়ুপ্রবাহের বেগ বৃদ্ধি পায়, অন্যদিকে বায়ুচাপের পার্থক্য কমে গেলে বায়ুপ্রবাহের বেগও কমে যায় ।

বায়ুচাপ বলয়ের সঙ্গে মেরুবায়ুর সম্পর্ক :-

(১) অতিরিক্ত শৈত্যের ফলে এবং সূর্যকিরণের অভাবে বায়ুতে জলীয়বাষ্প কম থাকে বলে দুই মেরুর নিকটবর্তী অঞ্চলে বায়ুর চাপ সারা বছরই বেশি থাকে । উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের ৬৫- ৯০ অক্ষাংশের মধ্যে সারাবছর ধরেই বায়ুর উচ্চচাপ দেখা যায়, তাই এই দুই অঞ্চলকে মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় বলা হয় ।

(২) উত্তর গোলার্ধে সুমেরুবৃত্ত এবং দক্ষিণ গোলার্ধে কুমেরুবৃত্ত অঞ্চলে সারা বছর ধরেই বায়ুর নিম্নচাপ দেখা যায়, যথাক্রমে এদের সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় এবং কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় বলা হয় ।

(৩) উত্তর গোলার্ধে মোটামুটি ভাবে ৭০- ৮০ অক্ষরেখার মধ্যে মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সারাবছর ধরে তীব্র শীতল ও শুষ্ক বায়ু প্রবাহিত হয়ে মেরুবায়ুর সৃষ্টি করে । উত্তর গোলার্ধে উত্তর-পূর্ব মেরুবায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পূর্ব মেরুবায়ু প্রবাহিত হয় ।

*****

Comments

Related Items

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents) : সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে, নির্দিষ্ট দিকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয় । সমুদ্রজলের এই প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে । সমুদ্রস্রোত সাধারণত একমুখী হয় । বায়ুপ্রবাহ দ্বারা তাড়িত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয় বলে এর গতিব

বারিমন্ডল (Hydrosphere)

বারিমন্ডল (Hydrosphere) : সৃষ্টির প্রথম অবস্থায় পৃথিবী ছিল এক উত্তপ্ত জ্বলন্ত মণ্ডল । ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তরল অবস্থায় আসে এবং অবিরাম তাপ বিকিরণ করে পৃথিবী ক্রমশ শীতল ও সংকুচিত হয় । আর সংকোচনের ফলে ভূপৃষ্ঠের গায়ে উঁচুনীচু আবরণের সৃষ্টি হয় । এই সম

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world)

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world) : পৃথিবীর যে সকল অঞ্চলে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মোটামুটি একই ধরনের বা সমধর্মী জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়, সেই সকল অঞ্চলকে এক-একটি জলবায়ু অঞ্চল বলা হয় । পৃথিবীর মুখ্য জলবায়ু অঞ্চলগুলি হল —

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall)

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall) : উৎপত্তির কারণ ও বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য অনুসারে বৃষ্টিপাতকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যথা:- (১) পরিচলন বৃষ্টিপাত, (২) শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত এবং (৩) ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত ।

অধঃক্ষেপণ (Precipitation)

অধঃক্ষেপণ (Precipitation) : সূর্যের উত্তাপে ভূপৃষ্ঠের সমুদ্র, হ্রদ, নদী, পুকুর, খাল, বিল প্রভৃতি জলরাশি থেকে জল জলীয়বাষ্পে পরিণত হয় । জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাস হাল্কা হওয়ার দরুন ঊর্ধগামী হয় । উপরের বায়ুমণ্ডলের প্রবল শৈত্যের সংস্পর্শে এলে ঘনিভবনের ফলে জলীয়বাষ