প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরের স্রোতের সাদৃশ্য বর্ণনা কর ।

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 01/02/2022 - 22:37

প্রশ্ন : প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরের স্রোতের সাদৃশ্য বর্ণনা কর ।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোত আটলান্টিক মহাসাগরীয় স্রোত
সমুদ্রস্রোত প্রকৃতি বৈশিষ্ট্য সমুদ্র স্রোত প্রকৃতি বৈশিষ্ট্য
(১) পেরু স্রোত শীতল দক্ষিণ মহাসাগর থেকে দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে প্রতিহত হয়ে উত্তরে চিলি উপকূল বেয়ে প্রবাহিত হয় ।

(১) বেঙ্গুয়েলা স্রোত

শীতল দক্ষিণ মহাসাগর থেকে এসে আফ্রিকার দক্ষিণ পশ্চিম উপকূল বেয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে প্রবেশ করে পশ্চিমে বেঁকে দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের সঙ্গে মেশে ।

 

(২) নিরক্ষীয় স্রোত

উষ্ণ আয়নবায়ুর প্রভাবে নিরক্ষরেখার উত্তর ও দক্ষিণে উৎপন্ন হয়ে যথাক্রমে উত্তর ও দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত নামে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয় ।

(২) নিরক্ষীয় স্রোত

উষ্ণ দক্ষিণ-পূর্ব আয়নবায়ুর প্রভাবে নিরক্ষরেখার উত্তর ও দক্ষিণে উৎপন্ন হয়ে যথাক্রমে উত্তর ও দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত নামে পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত হয় ।

(৩) পূর্ব অস্ট্রেলীয় স্রোত

উষ্ণ দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের এই শাখাটি অস্ট্রেলিয়ার উত্তর দিয়ে পশ্চিমমুখী হয়ে ভারত মহাসাগরে প্রবেশ করে ।

(৩) ব্রাজিল স্রোত

উষ্ণ বেঙ্গুয়েলা স্রোত ও দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের এই মিলিত শাখাটি ব্রাজিলের পূর্ব উপকূল বরাবর দক্ষিণে প্রবাহিত হয় ।

(৪) কু্রেশিয়ো বা জাপান স্রোত

উষ্ণ উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতটি আয়নবায়ুর প্রভাবে এশিয়ার পূর্ব উপকূলে বাধা পেয়ে উত্তরমূখী হয়ে জাপানের পূর্ব উপকূল বেয়ে কুরেশিয়ো বা জাপান স্রোত নামে আরও উত্তরের দিকে প্রবাহিত হয় । (৪) উপসাগরীয় স্রোত উষ্ণ বেঙ্গুয়েলা স্রোত ও দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের মিলিত উত্তর শাখাটি দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর-পূর্ব উপকূল ধরে ক্যারিবিয়ান সাগরে প্রবেশ করে এবং উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতের দক্ষিণ-শাখার সঙ্গে মিলিত হয়ে মেক্সিকো উপসাগরে প্রবেশ করে বিখ্যাত ‘উপসাগরীয় স্রোত’ নামে প্রবাহিত হয় ।

(৫) উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোত

উষ্ণ জাপান স্রোতের প্রধান শাখাটি উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোত নামে পূর্ব ও উত্তর-পূর্বে প্রবাহিত হয়ে কানাডার পশ্চিম উপকূল বরাবর প্রবাহিত হয় ।

(৫) উত্তর আটলান্টিক স্রোত

উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত ও উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতের মিলিত স্রোত প্রবাহের প্রধান ও প্রশান্ত শাখা উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ ও ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিম উপকূল বরাবর প্রবাহিত হয় ।

(৬) ক্যালিফোর্নিয়া স্রোত

উষ্ণ উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোতের একটি শাখা ক্যালিফোর্নিয়ার কাছে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে নিরক্ষীয় স্রোতের সঙ্গে মিশে যায় । (৬) ক্যানারি স্রোত উষ্ণ উপসসাগরীয় স্রোত ও উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতের মিলিত প্রবাহের দক্ষিণ শাখা পর্তুগালের কাছে প্রথমে দক্ষিণে এবং পরে পশ্চিমে ডিম্বাকারে বেঁকে ক্যানারি স্রোত নামে উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতের সঙ্গে মিলিত হয় ।

(৭) কামচটকা

স্রোত

শীতল সুমেরু মহাসসাগর থেকে এই শীতল স্রোতটি কামচটকার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে প্রবাহিত হয় । (৭) লাব্রাডর স্রোত শীতল সুমেরু মহাসাগর থেকে দুটি শীতল স্রোত গ্রীনল্যান্ডের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্ত দিয়ে প্রবাহিত হয়ে লাব্রাডর উপদ্বীপের কাছে মিলিত হয় এবং এই মিলিত স্রোত প্রবাহকে লাব্রাডর স্রোত বলে ।
(৮) শৈবাল সাগর স্রোতহীন জাপান স্রোত, উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোত এবং ক্যালিফোর্নিয়া স্রোতের মধ্যবর্তী স্রোতহীন জলাবর্ত । (৮) শৈবাল সাগর স্রোতহীন উপসাগরীয় স্রোত, উত্তর আটলান্টিক স্রোত এবং ক্যানারি স্রোতের মধ্যবর্তী স্রোতহীন জলাবর্ত ।

(৯) জাপান স্রোত ও বেরিং স্রোতের মিলনস্থল ।

উষ্ণ ও শীতল উষ্ণ জাপান স্রোত ও শীতল বেরিং স্রোতের মিলনস্থলে হিমপ্রাচীর, মগ্নচড়া, ঝড়ঝঞ্জা ও ঘন কুয়াশার সৃষ্টি হয় ।

 

(৯) উপসাগরীয় স্রোত ও লাব্রাডর স্রোতের মিলনস্থল ।

উষ্ণ ও শীতল উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত ও শীতল লাব্রাডর স্রোতের মিলনস্থলে হিমপ্রাচীর, মগ্নচড়া, ঝড়ঝঞ্জা ও ঘন কুয়াশার সৃষ্টি হয় ।

******

Comments

Related Items

নর্মদা নদী (The Narmada)

নর্মদা নদী (The Narmada) : মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ অমরকন্টক থেকে উৎপন্ন হয়ে নর্মদা নদী উত্তর-পশ্চিমে বেঁকে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র হয়ে গুজরাটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিন্ধ্য ও সাতপুরার সংকীর্ণ গিরিখাত অতিক্রম করে

ব্রহ্মপুত্র নদ (The Brahmaputra)

ব্রহ্মপুত্র নদ : তিব্বতের মানস সরোবরের নিকটবর্তী চেমায়ুং-দুং হিমবাহ থেকে সাংপো নামে উৎপন্ন হয়ে নামচাবারওয়া শৃঙ্গের কাছে চুলের কাটার মত বেঁকে অরুণাচল প্রদেশের মধ্য দিয়ে ডিহং নামে ভারতে প্রবেশ করেছে । এর মোট দৈর্ঘ্য ২,৯০০ কিমি, এর মধ্

সিন্ধু নদ (The Indus)

সিন্ধু নদ : সিন্ধু নদ তিব্বতের মানস সরোবরের উত্তরে অবস্থিত সিন-কা-বাব জলধারা থেকে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পশ্চিমে প্রথমে তিব্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পরে লাদাখ অঞ্চল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে । সিন্ধু নদের মোট দৈর্ঘ্য ৩,১৮০ কিমি এবং এর মধ

গঙ্গা নদী (The Ganges)

গঙ্গা নদী : গঙ্গা ভারতের শ্রেষ্ঠ নদী এবং ভারতের দীর্ঘতম নদী । গঙ্গানদীর মোট দৈর্ঘ্য ২৫১০ কিমি এবং এর মধ্যে ২০১৭ কিমি ভারতে প্রবাহিত । কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষার গুহা থেকে ভাগীরথী নামে উৎপন্ন হয়ে সংকীর্ণ গিরিখাতের

ভারতের নদনদী (Rivers of India)

ভারতের নদনদী : ভারতে অসংখ্য নদনদী বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়েছে । উৎস, প্রবাহের অঞ্চল, এবং মোহানা অনুসারে ভারতের নদনদীকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় । যেমন— (১) উত্তর ভারতের নদী এবং (২) দক্ষিণ ভারতের নদী ।