নিরক্ষীয় অঞ্চলে পরিচলন বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার কারণ কী ?

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 01/02/2022 - 14:39

প্রশ্ন : নিরক্ষীয় অঞ্চলে পরিচলন বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার কারণ কী ?

(১) নিরক্ষরেখার উভয় পাশে ৫ - ১০ উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে সূর্য প্রায় সারা বছর ধরে লম্বভাবে প্রখর কিরণ দেয় ।

(২) নিরক্ষীয় অঞ্চলে স্থলভাগের তুলনায় জলভাগের বিস্তৃতি তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি এবং এই অঞ্চলে সারাবছর ধরে প্রায় লম্বভাবে সূর্যকিরণ পড়ে ফলে এখানে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতাও বেশি । তাছাড়া এই অঞ্চলে বায়ুর সমান্তরাল প্রবাহ নেই বললেই চলে । প্রচন্ড উত্তাপের জন্য নিরক্ষীয় অঞ্চলের সমুদ্রের বিপুল জলরাশি বাষ্পিভূত হয়ে দ্রুত উপরে উঠে যায় । উপরের বায়ুমণ্ডলের প্রবল শৈত্যের সংস্পর্শে এলে বাষ্পীভূত ওই আর্দ্রবায়ু আর জলীয়বাষ্প ধরে রাখতে পারে না এবং তখন তা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে বৃষ্টিরূপে ভূপৃষ্ঠে পতিত । এই বিশেষ অনুকূল পরিবেশের জন্যই নিরক্ষীয় অঞ্চলে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চল থেকে বেশি পরিচলন বৃষ্টিপাত হয় ।

(৩) নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় এই অঞ্চলে সারা বছর ধরে প্রায় প্রতিদিনই পরিচলন বৃষ্টিপাত হয় । প্রধানত বিকেলের দিকে বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল বৃষ্টিপাত হল পরিচলন বৃষ্টিপাতের প্রধান বৈশিষ্ট্য ।

নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রধানত বিকেলের দিকে পরিচলন বৃষ্টিপাত হওয়ার করণ : নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ুমণ্ডলে সারা বছর ধরেই জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় এই অঞ্চলে সারা বছর ধরে প্রায় প্রতিদিনই পরিচলন বৃষ্টিপাত হয় । সারাদিন বাষ্পীভবনের ফলে এবং দুপুরের পর থেকে বায়ুমণ্ডলের দ্রুত তাপমাত্রা হ্রাসের ফলে বিকেলের দিকে বাতাসের আপেক্ষিক আদ্রতাও বাড়তে থাকে ও বিকেলে বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতাও কমতে থাকে । এই জন্য নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রধানত বিকেলের দিকে বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল বৃষ্টিপাত হল পরিচলন বৃষ্টিপাতের প্রধান বৈশিষ্ট্য ।

*****

Comments

Related Items

নর্মদা নদী (The Narmada)

নর্মদা নদী (The Narmada) : মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ অমরকন্টক থেকে উৎপন্ন হয়ে নর্মদা নদী উত্তর-পশ্চিমে বেঁকে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র হয়ে গুজরাটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিন্ধ্য ও সাতপুরার সংকীর্ণ গিরিখাত অতিক্রম করে

ব্রহ্মপুত্র নদ (The Brahmaputra)

ব্রহ্মপুত্র নদ : তিব্বতের মানস সরোবরের নিকটবর্তী চেমায়ুং-দুং হিমবাহ থেকে সাংপো নামে উৎপন্ন হয়ে নামচাবারওয়া শৃঙ্গের কাছে চুলের কাটার মত বেঁকে অরুণাচল প্রদেশের মধ্য দিয়ে ডিহং নামে ভারতে প্রবেশ করেছে । এর মোট দৈর্ঘ্য ২,৯০০ কিমি, এর মধ্

সিন্ধু নদ (The Indus)

সিন্ধু নদ : সিন্ধু নদ তিব্বতের মানস সরোবরের উত্তরে অবস্থিত সিন-কা-বাব জলধারা থেকে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পশ্চিমে প্রথমে তিব্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পরে লাদাখ অঞ্চল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে । সিন্ধু নদের মোট দৈর্ঘ্য ৩,১৮০ কিমি এবং এর মধ

গঙ্গা নদী (The Ganges)

গঙ্গা নদী : গঙ্গা ভারতের শ্রেষ্ঠ নদী এবং ভারতের দীর্ঘতম নদী । গঙ্গানদীর মোট দৈর্ঘ্য ২৫১০ কিমি এবং এর মধ্যে ২০১৭ কিমি ভারতে প্রবাহিত । কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষার গুহা থেকে ভাগীরথী নামে উৎপন্ন হয়ে সংকীর্ণ গিরিখাতের

ভারতের নদনদী (Rivers of India)

ভারতের নদনদী : ভারতে অসংখ্য নদনদী বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়েছে । উৎস, প্রবাহের অঞ্চল, এবং মোহানা অনুসারে ভারতের নদনদীকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় । যেমন— (১) উত্তর ভারতের নদী এবং (২) দক্ষিণ ভারতের নদী ।