তেজী বা ভরা কোটালকে সর্বোচ্চ জোয়ার বলা হয় কেন ?

Submitted by avimanyu pramanik on Wed, 01/05/2022 - 11:21

প্রশ্ন : তেজী বা ভরা কোটালকে সর্বোচ্চ জোয়ার বলা হয় কেন ?

অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় পৃথিবী, চন্দ্র ও সূর্য একই সরলরেখায় অবস্থান করে । অমাবস্যা এবং পূর্ণিমায় সূর্য ও চন্দ্রের মিলিত আকর্ষণী বলের প্রবল টানে যে তীব্র জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তাকেই ভরা কোটাল বা তেজী কোটাল বলে ।

অমাবস্যা তিথিতে পৃথিবীর একই পাশে একই সরলরেখায় চন্দ্র ও সূর্য অবস্থান করে এবং পূর্ণিমা তিথিতে সূর্য ও চন্দ্রের মাঝে একই সরল রেখায় পৃথিবী অবস্থান করে । এই ভাবে চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত বলের প্রবল আকর্ষণে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে যে তীব্র জোয়ার সৃষ্টি হয়, তাকে তেজী কোটাল বা ভরা জোয়ার বলে ।

অমাবস্যা ও পূর্ণিমার তেজী কোটালের সময় জোয়ারের স্থানে অত্যধিক জলস্ফীতি ঘটে এবং ভাটার স্থানে জলস্তর খুব বেশি মাত্রায় নেমে যায় । এই সময়ে সূর্য ও চন্দ্র একে অপরের পরিপূরক হিসেবে ভরা জোয়ার উৎপন্ন করে বলে জোয়ার ও ভাটার মধ্যে জলতলের পার্থক্য খুব বেশি মাত্রায় হয় । ভূপৃষ্ঠের জলভাগের একই স্থানে প্রতিমাসে দু’বার করে তেজী কোটাল (অর্থাৎ ভরা কোটাল) সংঘটিত হয় ।

অন্যান্য যে-কোনো দিনের জোয়ারের তুলনায় অমাবস্যা ও পূর্ণিমার দু’দিনে চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণে জোয়ারের জলস্ফীতি সর্বাধিক হয়, তাই তেজী বা ভরা কোটালকে সর্বোচ্চ জোয়ার বলা হয় ।

জোয়ারের জল অনেক সময় নদী মোহনার পলি তুলে নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে নদীগর্ভে জমা করে নদীর নাব্যতাকে (গভীরতা) কমিয়ে ফেলে । অন্যদিকে, ভাটার টানে নদীগর্ভ আবর্জনা ও পলিমুক্ত হওয়ায় নদীখাতের গভীরতা ও বিস্তার বৃদ্ধি পায় এবং নদীর নাব্যতা রক্ষা পায় ।

*****

Comments

Related Items

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents) : সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে, নির্দিষ্ট দিকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয় । সমুদ্রজলের এই প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে । সমুদ্রস্রোত সাধারণত একমুখী হয় । বায়ুপ্রবাহ দ্বারা তাড়িত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয় বলে এর গতিব

বারিমন্ডল (Hydrosphere)

বারিমন্ডল (Hydrosphere) : সৃষ্টির প্রথম অবস্থায় পৃথিবী ছিল এক উত্তপ্ত জ্বলন্ত মণ্ডল । ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তরল অবস্থায় আসে এবং অবিরাম তাপ বিকিরণ করে পৃথিবী ক্রমশ শীতল ও সংকুচিত হয় । আর সংকোচনের ফলে ভূপৃষ্ঠের গায়ে উঁচুনীচু আবরণের সৃষ্টি হয় । এই সম

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world)

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world) : পৃথিবীর যে সকল অঞ্চলে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মোটামুটি একই ধরনের বা সমধর্মী জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়, সেই সকল অঞ্চলকে এক-একটি জলবায়ু অঞ্চল বলা হয় । পৃথিবীর মুখ্য জলবায়ু অঞ্চলগুলি হল —

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall)

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall) : উৎপত্তির কারণ ও বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য অনুসারে বৃষ্টিপাতকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যথা:- (১) পরিচলন বৃষ্টিপাত, (২) শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত এবং (৩) ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত ।

অধঃক্ষেপণ (Precipitation)

অধঃক্ষেপণ (Precipitation) : সূর্যের উত্তাপে ভূপৃষ্ঠের সমুদ্র, হ্রদ, নদী, পুকুর, খাল, বিল প্রভৃতি জলরাশি থেকে জল জলীয়বাষ্পে পরিণত হয় । জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাস হাল্কা হওয়ার দরুন ঊর্ধগামী হয় । উপরের বায়ুমণ্ডলের প্রবল শৈত্যের সংস্পর্শে এলে ঘনিভবনের ফলে জলীয়বাষ