গ্র্যাণ্ড ব্যাঙ্ক মৎস্যচাসের জন্য অনুকূল কেন ?

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 01/03/2022 - 11:46

প্রশ্ন : গ্র্যাণ্ড ব্যাঙ্ক মৎস্যচাসের জন্য অনুকূল কেন ?

পৃথিবীর অন্যতম প্রধান মৎস্যশিকার ক্ষেত্র গ্র্যাণ্ড ব্যাঙ্ক আসলে একটি অগভীর মগ্নচড়া । নিঊ ফাউল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পূর্ব উপকূল বা আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিম উপকূলের বিশাল মহীসোপান অঞ্চলে গ্র্যাণ্ড ব্যাঙ্ক মগ্নচড়াটি অবস্থিত ।

শীতল লাব্রাডর স্রোতের সঙ্গে সুমেরুবৃত্ত থেকে আসা হিমশৈলগুলির মধ্যে ছোটো বড়ো শিলাখন্ড, নুড়ি, কাঁকর এবং কাদা মিশ্রিত থাকে । শীতল লাব্রাডার স্রোত যখন নিউ ফাউল্যান্ডের কাছে উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের সংস্পর্শে এসে গলে যায় । এই সব হিমশৈলের মধ্যে থাকা ছোটো-বড়ো পাথর, নুড়ি, কাদা প্রভৃতি থিতিয়ে পড়ে নিউ ফাউল্যান্ডের পূর্ব উপকূলের সমুদ্র বক্ষে সঞ্চিত হয়ে ‘গ্র্যাণ্ড ব্যাঙ্ক’ নামে অগভীর মগ্নচড়াটির সৃষ্টি করেছে । গ্র্যাণ্ড ব্যাঙ্কের জলের গভীরতা ২০০ মিটার এবং আয়তন প্রায় ৩৭ হাজার বর্গকিলোমিটার ।

গ্র্যাণ্ড ব্যাঙ্কে মৎস্য চাষের অনুকূল পরিবেশের কারণ হল—

(১) গ্র্যাণ্ড ব্যাঙ্ক নামে মগ্নচড়াটি অগভীর হওয়ায় এবং নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলে অবস্থান করার জন্য এখানে মাছের বসবাসের অনুকূল তাপমাত্রা পাওয়া যায় ।

(২) উষ্ণ ও শীতল স্রোতের সংযোগস্থলে প্লাঙ্কটন নামে এক ধরনের অতি ক্ষুদ্র আণুবীক্ষণিক জীব প্রচুর পরিমাণে জন্মায়, কারণ গ্র্যাণ্ড ব্যাঙ্ক -এ যে প্রচুর জৈব খাদ্য পাওয়া যায় তা প্লাঙ্কটনের প্রধান খাদ্য । এই প্লাঙ্কটন আবার মাছের প্রধান খাদ্য । গ্র্যাণ্ড ব্যাঙ্কে যেসব মাছ পাওয়া যায় তাদের মধ্যে কড, হেরিং, ম্যাকারেল, হ্যাডক, হ্যালিবাট প্রভৃতি মাছ উল্লেখযোগ্য । এছাড়া গ্র্যাণ্ড ব্যাঙ্ক অঞ্চলটি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কড মাছ শিকারকেন্দ্র হিসেবেও খ্যাত ।

*****

Comments

Related Items

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents) : সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে, নির্দিষ্ট দিকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয় । সমুদ্রজলের এই প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে । সমুদ্রস্রোত সাধারণত একমুখী হয় । বায়ুপ্রবাহ দ্বারা তাড়িত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয় বলে এর গতিব

বারিমন্ডল (Hydrosphere)

বারিমন্ডল (Hydrosphere) : সৃষ্টির প্রথম অবস্থায় পৃথিবী ছিল এক উত্তপ্ত জ্বলন্ত মণ্ডল । ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তরল অবস্থায় আসে এবং অবিরাম তাপ বিকিরণ করে পৃথিবী ক্রমশ শীতল ও সংকুচিত হয় । আর সংকোচনের ফলে ভূপৃষ্ঠের গায়ে উঁচুনীচু আবরণের সৃষ্টি হয় । এই সম

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world)

পৃথিবীর জলবায়ু অঞ্চল (Major climatic regions of the world) : পৃথিবীর যে সকল অঞ্চলে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মোটামুটি একই ধরনের বা সমধর্মী জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়, সেই সকল অঞ্চলকে এক-একটি জলবায়ু অঞ্চল বলা হয় । পৃথিবীর মুখ্য জলবায়ু অঞ্চলগুলি হল —

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall)

বিভিন্ন প্রকারের বৃষ্টিপাত (Types of Rainfall) : উৎপত্তির কারণ ও বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য অনুসারে বৃষ্টিপাতকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যথা:- (১) পরিচলন বৃষ্টিপাত, (২) শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত এবং (৩) ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত ।

অধঃক্ষেপণ (Precipitation)

অধঃক্ষেপণ (Precipitation) : সূর্যের উত্তাপে ভূপৃষ্ঠের সমুদ্র, হ্রদ, নদী, পুকুর, খাল, বিল প্রভৃতি জলরাশি থেকে জল জলীয়বাষ্পে পরিণত হয় । জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাস হাল্কা হওয়ার দরুন ঊর্ধগামী হয় । উপরের বায়ুমণ্ডলের প্রবল শৈত্যের সংস্পর্শে এলে ঘনিভবনের ফলে জলীয়বাষ