আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান (Elements of Weather and Climate)

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 10/31/2013 - 10:41

আবহাওয়া সংজ্ঞা (Defination of Weather) :- কোনও নির্দিষ্ট জায়গার কোনও নির্দিষ্ট দিনের বা কয়েকদিনের বায়ুর তাপ, চাপ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত প্রভৃতির অবস্থাকে আবহাওয়া [Weather] বলে ।  বিভিন্ন দিনে, এমনকি যে কোনো দিনের বিভিন্ন সময়ে, আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে ।

জলবায়ুর সংজ্ঞা (Defination of Climate):- দিনের বিভিন্ন সময়ের আবহাওয়ার অবস্থা লক্ষ করে দৈনিক গড় অবস্থা নির্ণয় করা হয় । এইভাবে মাসের বিভিন্ন দিনের আবহাওয়ার গড় অবস্থা থেকে মাসিক গড় অবস্থা নিরূপণ করা হয় । সাধারণত কোনও জায়গায় 35 বছরের আবহাওয়ার গড় অবস্থাকে সেই জায়গার জলবায়ু [Climate] বলা হয় ।

আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান (Elements of Weather and Climate):- আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান হল—

(i) বায়ুর উষ্ণতা,  (ii) বায়ুর চাপ, (iii) বায়ুপ্রবাহ,  (iv) বায়ুর আর্দ্রতা, (v) মেঘ,  (vi) বৃষ্টি প্রভৃতি । আবহাওয়া ও জলবায়ুর প্রকৃতি কি রকম হবে তা এইসব বিষয়ের উপর নির্ভর করে ।

(i) বায়ুর উষ্ণতা (Air Temperature) : আবহাওয়া ও জলবায়ুর একটি প্রধান উপাদান হল বায়ুর উষ্ণতা ।  বায়ুর উষ্ণতা বলতে বায়ুর তাপমাত্রাকে বোঝায় । বায়ুর তাপের প্রধান উৎস হল সূর্যরশ্মি । সূর্যরশ্মি সৌরশক্তির আকারে ভু-পৃষ্ঠে এসে যে তাপ সঞ্চার করে । একে সূর্যের তাপীয় ফল (Insolation) বলে । সূর্যের তাপীয় ফলের প্রভাবে বায়ু উত্তপ্ত হয় ।  তাপমান যন্ত্র (Thermometer), গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ তাপমান যন্ত্র (Maximum and Minimum Thermometer) প্রভৃতি দিয়ে বায়ুর তাপ মাপা হয় ।
কোনও জায়গায় জলবায়ু কীরকম হবে তা অনেকাংশে বায়ুর তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে । দিন বড় হলে বায়ু বেশি সময় সূর্যের তাপ পায়, ফলে বেশি উত্তপ্ত হয় । আবার দিন ছোটো হলে বায়ু, সূর্য থেকে কম তাপ পায়, ফলে বায়ুর তাপমাত্রা কম হয় । শীতকালে দিন ছোটো ; তাই বায়ুর উষ্ণতাও কম হয় । সাধারণত দিনের শেষভাগে ঠিক মধ্যাহ্নের পরে দিনের তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি এবং রাতের শেষভাগে তাপমাত্রা সবচেয়ে কম লক্ষ করা যায় ।

বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে জলবায়ুর অন্যান্য উপাদানের সম্পর্ক :-

(ক) বায়ু উত্তপ্ত হলে হালকা হয়; হালকা বায়ুর চাপ কম । তাই বায়ু উষ্ণ হলে হালকা হয়ে উপরের দিকে উঠে যায় এবং নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি করে । বায়ু শীতল হলে ভারী হয় । ভারী বায়ুর চাপ বেশি । তাই ভারী বায়ু নীচের দিকে নামে । ফলে শীতল বায়ু উচ্চ চাপকেন্দ্র গঠন করে ।  
(খ) বায়ুর চাপের পার্থক্যের ফলে উচ্চচাপ কেন্দ্র থেকে বায়ু নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ছুটে যায়, এইভাবে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয় ।
(গ) শীতল বায়ুর চেয়ে উষ্ণ বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা বেশি ।  উষ্ণ আর্দ্র বায়ু উপরে উঠে শীতল হলে বৃষ্টিপাত ঘটায় ।

***

Related Items

ভারতের ভূপ্রকৃতি (Physical Emvironment of India)

ভারতের ভূপ্রকৃতি (Physical Environment of India) : ভারত একটি সুবিশাল দেশ ও এর ভূপ্রকৃতি অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় । উত্তর ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত পামীর গ্রন্থি থেকে বের হওয়া হিন্দুকুশ, সুলেমান, খিরথর কারাকোরাম, হিমালয় প্রভৃতি কয়েক

ভারতের বর্তমান রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সমূহ

ভারতের বর্তমান রাজ্য সমূহ (২০২১ সাল পর্যন্ত ) :

১. অন্ধ্রপ্রদেশ : এই রাজ্যের আয়তন হল ১,৬০,২০৫ বর্গ কিমি. ও রাজধানী হল অমরাবতী ।

২. অরুণাচল প্রদেশ : এই রাজ্যের আয়তন হল ৮৩,৭৪৩ বর্গ কিমি. ও রাজধানী হল ইটানগর ।

স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির বিন্যাস

স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির বিন্যাস : প্রায় ১০০ বছর প্রত্যক্ষভাবে ইংরেজ শাসনাধীন থাকার পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হওয়া ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের 'ভারতের স্বাধীনতা আইন' অনুসারে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট অবিভক্ত ভারত দ্বিখণ্ডিত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে এব

ভারতের ভৌগলিক অবস্থান

অবস্থান (Location) : ভারত পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত একটি দেশ । নিরক্ষরেখার উত্তরে অর্থাৎ উত্তর গোলার্ধে এবং মূলমধ্যরেখার পূর্বে অর্থাৎ পূর্ব গোলার্ধে অবস্থিত অর্থাৎ ভারত উত্তর-পূর্ব গোলার্ধে অবস্থিত । ভারতের মূল ভূখণ্ড দক্ষি

ভারত (India)

ভারত :- প্রাচীন পারসিক লিপিতে 'সপ্ত সিন্ধু' কে বলা হয়েছে হপ্ত হিন্দু । সিন্ধু তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষকে বিদেশীরা হিন্দু বলত এবং তার থেকেই হিন্দুস্থান কথাটি এসেছে । প্রাচীন পারসি শব্দ হিন্দুস (Hindus) থেকে উৎপন্ন ইণ্ডাস (Indus) থেকে ইণ্ডিয়া (INDIA) নামট