বহুব্রীহি সমাসের শ্রেণিবিভাগ

Submitted by Nandarani Pramanik on Mon, 07/26/2021 - 16:32

বহুব্রীহি সমাসের শ্রেণিবিভাগ:- 

(ক) সমানাধিকরণ বহুব্রীহি :- যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্ব ও পরপদের বিভক্তি একই হয়, তাকে সমানাধিকরণ বহুব্রীহি বলে । যেমন— পক্ব কেশ যার = পক্ককেশ ।  গৌর অঙ্গ যার = গৌরাঙ্গ । ছিন্ন মুল যার = ছিন্নমূল । নীল কন্ঠ যার = নীলকণ্ঠ । কু আকার যার = কদাকার ।

(খ) ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি সমাস :- যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্ব ও পরপদে ভিন্ন ভিন্ন বিভক্তি থাকে তাকে ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি বলে । যেমন— শূল পাণিতে যার = শূলপাণি । চন্দ্র চূড়ায় যাঁর = চন্দ্রচুড় । রত্ন গর্ভে যার = রত্নগর্ভা ইত্যাদি ।

(গ) মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি সমাস :- যে বহুব্রীহি সমাসের ব্যাসবাক্যের মধ্য পদগুলো লোপ পায় তাকে মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি সমাস বলে । যেমন— কুম্ভের ন্যায় কর্ণ যার = কুম্ভকর্ণ । বৌ ভাত পরিবেশন করে যে অনুষ্ঠানে = বৌভাত । কমলের ন্যায় অক্ষি যার = কমলাক্ষ । চন্দ্রের মতো আনন যার = চন্দ্রানন ইত্যাদি ।

(ঘ) ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস :-  যে বহুব্রীহি সমাসে পরস্পরের মধ্যে একই প্রকার কাজ বোঝায়, তাকে ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস বলে । যেমন— চোখে চোখে যে দেখা = চোখাচোখি । গলায় গলায় যে মিল = গলাগলি । কানে কানে যে কথা = কানাকানি ইত্যাদি ।

(ঙ) সহার্থক বহুব্রীহি সমাস :- যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্বপদের সহার্থক বাচক পরপদের সমাস হয় তাকেই সহার্থক বহুব্রীহি সমাস বলে । যেমন— শব্দের সঙ্গে বর্তমান = সশব্দ । স্ত্রীর সঙ্গে বর্তমান = সস্ত্রীক । লজ্জার সঙ্গে বর্তমান = সলজ্জ । শিষ্যের সঙ্গে বর্তমান = সশিষ্য প্রভৃতি ।

(চ) নঞ বহুব্রীহি সমাস :- যে বহুব্রীহি সমাসের পূর্বপদ নঞর্থক অব্যয় হয় তাকে নঞ বহুব্রীহি সমাস বলে । যেমন— নাই অন্ত যার = অনন্ত । নাই খাদ যার = নিখাদ । নাই সঙ্গী যার = নিঃসঙ্গ । বে (নাই) পরোয়া যার = বেপরোয়া ইত্যাদি ।

(ছ) সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাস :-  যে বহুব্রীহি সমাসের পূর্বপদটি সংখ্যাবাচক বিশেষণ হয় সেটিকে সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাস বলে । যেমন— দশ আনন যার = দশানন (রাবণ) । ত্রি নয়ন যার = ত্রিনয়ন (শিব) । পঞ্চ আনন যার = পঞ্চানন ইত্যাদি ।

*****

Comments

Related Items

সংলাপ রচনা (Dialogue writing)

মাধ্যমিক পরীক্ষায় আগত বিভিন্ন সংলাপ রচনা নিচে তুলে ধরা হলো -

সন্ধি ও সন্ধি বিচ্ছেদ

সন্ধি বিচ্ছেদ (নমুনা প্রশ্ন এবং বিগত মাধ্যমিক পরীক্ষার)। অভীষ্ট= অভি+ইষ্ট, তেজস্ক্রিয়= তেজঃ+ক্রিয়, মুহুর্মুহু= মুহুঃ+মুহু , যজ্ঞাগারে= যজ্ঞ + আগারে, দিগভ্রম= দিক্+ভ্রম, নভোমন্ডল= নভঃ+মন্ডল, দুর্বল= দুঃ+বল, নীরব= নিঃ+রবে

বাচ্য (Voice)

বাচ্য বলতে সাধারণত বোঝায় প্রকাশভঙ্গি বা বাচনভঙ্গির রূপভেদ অর্থাৎ রূপের পরিবর্তন । যেমন— পুলিশ চোরটিকে ধরেছে । পুলিশের দ্বারা চোরটি ধরা হয়েছে । এখানে দেখা যাচ্ছে, বক্তব্য এক কিন্তু প্রকাশভঙ্গি আলাদা । সুতরাং বাচ্য হল ব্যক্তিভেদে বাচনভঙ্গি অনুযায়ী কর্তা, কর্ম বা ক্রিয়াপদের প্রাধান্য নির্দেশ করে ক্রিয়াপদের রূপের যে পরিবর্তন ঘটে, তাকেই বলে বাচ্য ।

সমাস

ব্যাকরণে সমাস কথাটির অর্থ হল সংক্ষিপ্ত বা সংক্ষেপ । ব্যুৎপত্তিগত অর্থে অর্থাৎ সম্ —√অস্ + ঘঞ্ = সমাস হয় যার অর্থ হল সংক্ষেপ । মনের ভাবকে যথাযথভাবে সহজ সরল ও সংক্ষেপে প্রকাশ করার জন্য সমাস পড়া বা জানার প্রয়োজন । তাই সমাস বলতে আমরা বুঝি বাক্যের দুই বা তার বেশি পদকে এক পদে পরিণত করে সংক্ষেপ করার রীতিকে বলা হয় সমাস ।

কারক ও অকারক সম্পর্ক

কারক —দশম শ্রেণির ব্যাকরণের পাঠ্যসূচীতে প্রথমেই রয়েছে কারকের স্থান । সংস্কৃতে বলা হয় 'ক্রিয়ান্বয়ী কারকম্' অর্থাৎ ক্রিয়ার সঙ্গে বাক্যের অন্যান্য নামপদগুলির (বিশেষ্য, বিশেষণ ও সর্বনাম পদ) অন্বয় বা সম্পর্ক তৈরি করে দেয় কারক । সুতরাং বলাই যায় যে — বাক্যের ক্রিয়াপদের সঙ্গে নামপদের সম্বন্ধই হল কারক ।