"হায় ছায়াবৃতা" —'ছায়াবৃতা' বলার কারণ কী ? তার সম্পর্কে কবি কী বলেছেন সংক্ষেপে লেখো ।

Submitted by avimanyu pramanik on Fri, 08/27/2021 - 07:55

প্রশ্ন:- "হায় ছায়াবৃতা" —'ছায়াবৃতা' বলার কারণ কী ?  তার সম্পর্কে কবি কী বলেছেন সংক্ষেপে লেখো

উঃ-  কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'পত্রপুট' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত 'আফ্রিকা' কবিতার প্রশ্নোদ্ধৃতাংশে অসূর্যম্পশ্যা, বনস্পতি পরিবেষ্টিত আফ্রিকা মহাদেশে দীর্ঘদিন সূর্যের আলো ও সভ্যতার আলো প্রবেশ না করায় তাকে 'ছায়াবৃতা' বলা হয়েছে ।

♦ 'আফ্রিকা' কবিতায় কবিগুরু আফ্রিকার জন্মলগ্ন থেকে তার বিবর্তনের কথা ও সর্বশেষে ঔপনিবেশিক শক্তির হাতে তার বন্দিনী হওয়ার করুন আখ্যান বর্ণনা করেছেন । জন্মমুহূর্তে আফ্রিকা প্রাচী ধরিত্রীর অখন্ড অংশের সাথে যুক্ত ছিল । কিন্তু সমুদ্রের উত্তাল জলস্রোতে সে মাতৃহারা হল, আশ্রয় নিল অরণ্যের বন্ধনে, যেখানে সূর্যরশ্মিরও প্রবেশ নিষেধ । এই ঘন অরণ্যবেষ্টিত আফ্রিকা ক্রমশ ভীষণ থেকে ভীষণতর হয়ে উঠছিল, চিনছিল জলস্থলের দুর্বোধ সংকেত । কবির কথায় —

            "বিদ্রুপ করেছিলে ভীষণকে

                     বিরূপের ছদ্মবেশে"

আফ্রিকার এই স্বাধীন সফর, নিজেকে চিনতে শেখার সফর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সমাপ্ত হয়ে গেল । তার কোমল কায়ায় থাবা বসলো মানুষ— নেকড়ের দল যারা নিজেদের পাশ্চাত্যের শিক্ষিত সম্প্রদায় বলেই পরিচয় দিয়ে থাকেন । ঔপনিবেশিক শক্তির আক্রমণে আফ্রিকার কুমারীত্ব গেল ঘুচে । তার বনজ ও মানবিক সম্পদ দখল করে নিল 'মানুষ ধরার দল' কালিমালিপ্ত হল ইতিহাস, অপমানিত আফ্রিকার অশ্রুজলে । আফ্রিকার অবগুণ্ঠিত ক্রন্দনে —

           "বাষ্পাকুল হল অরণ্যপথে,

                পঙ্কিল হলো ধুলি তোমার রক্তে অশ্রুতে মিশে"

 ছায়াবৃতা আফ্রিকার কালো ঘোমটার নীচে লুক্কায়িত মানবী রূপ প্রকাশিত হল বিশ্বের কাছে, কিন্তু সে যে যন্ত্রণাদায়ক প্রকাশ । কবি একথা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছিলেন । তাই তিনি 'যুগান্তের কবি' কে আহ্বান করেছেন এবং বিশ্বমানবতাকে বলেছেন এই 'মানহারা মানবী'র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে । কবির কথায়, এই ক্ষমাভিক্ষাই হয়ে উঠুক 'সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী' ।

****

Comments

Related Items

দ্বন্দ্ব সমাসের শ্রেণিবিভাগ

দ্বন্দ্ব সমাসের শ্রেণিবিভাগ:—

কর্মধারয় সমাসের শ্রেণিবিভাগ

কর্মধারয় সমাসের শ্রেণিবিভাগ :- (ক) সাধারণ কর্মধারয় সমাস (খ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস (গ) উপমান কর্মধারয় (ঘ) উপমিত কর্মধারয় এবং (ঙ) রূপক কর্মধারয় সমাস ।

তৎপুরুষ সমাসের শ্রেণিবিভাগ

তৎপুরুষ সমাসের শ্রেণিবিভাগ— কারক ও অকারকের বিভক্তি অনুযায়ী তৎপুরুষ সমাসকে ছটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে ।

বহু বিকল্পীয় (M.C.Q) সহ ছোটো প্রশ্নোত্তর - সমাস

বহু বিকল্পীয় প্রশ্ন (M.C.Q):-

(১)  সমাসের বুৎপত্তি হল—

       (ক) সমা √আস + অ       (খ) সমা √অস + অ       (গ) সম্- √অস + অ       (ঘ) সম্ + আস  ।

(২)  ব্যাসবাক্যের প্রথম পদকে বলে —

সমাসের শ্রেণিবিভাগ

সমাসের শ্রেণিবিভাগ :- বাংলা ভাষায় সমাস মূলত ছয় প্রকার— (১) তৎপুরুষ, (২) কর্মধারয়, (৩) দ্বন্দ্ব,  (৪) দ্বিগু, (৫) বহুব্রীহি, (৬) অব্যয়ীভাব । এছাড়াও (৭) নিত্য সমাস, (৮) বাক্যাশ্রয়ী সমাস ও (৯) অলোপ সমাস আছে ।