মেন্ডেল তাঁর পরীক্ষার জন্য মটর গাছ নির্বাচনের কারণ

Submitted by arpita pramanik on Tue, 12/18/2012 - 20:02

কী কারণে মেন্ডেল মটর গাছকে তাঁর পরীক্ষার জন্য নির্বাচন করেছিলেন ?

Why Mendel selected pea plant for his experiment ?

বাগানের মিষ্টি মটর গাছে নিম্নলিখিত নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলি থাকায় মেন্ডেল তাঁর পরীক্ষার জন্য মটর গাছকে নমুনা হিসেবে  ব্যবহার করেছিলেন ।

১. মটর গাছ দ্রুত বংশবিস্তারে সক্ষম, তাই অল্প সময়ের মধ্যে বংশানুক্রম কয়েকপুরুষ ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব ।

২. মটর ফুল উভলিঙ্গ হওয়ায় মটর গাছে স্ব-পরাগযোগ ঘটানো সম্ভব ।

৩. মটর গাছ স্ব-পরাগী হওয়ায় বাইরে থেকে আসা অন্য কোনো চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম ।

৪. মটর গাছের মধ্যে অনেক রকমের বিপরীত বৈশিষ্ট্যের সমন্বয় ঘটতে দেখা যায়, অর্থাৎ মটর গাছের মধ্যে বহু প্রকার [varieties] দেখা যায় ।

৫. মটর গাছ বংশপরম্পরায় নির্দিষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাঁটি অপত্য গাছ উত্পাদনে সক্ষম ।

৬. সংকর গাছগুলি জননক্ষম হওয়ায় নিয়মিতভাবে বংশবৃদ্ধি করতে পারে ।

মেন্ডেল কর্তৃক নির্বাচিত সাত জোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য (Seven pairs of opposite characters selected by Mendel)

মেন্ডেল তাঁর পরীক্ষার জন্য মটর গাছগুলোর মধ্যে যে সাত জোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য লক্ষ করেছিলেন তা হল : বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের প্রথমোক্তগুলি ছিল প্রকট গুণসম্পন্ন এবং শেষোক্তগুলি ছিল প্রচ্ছন্ন গুণসম্পন্ন ।

মটর গাছের সাত জোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য

মটর গাছের অংশ বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য
১. কান্ডের দৈর্ঘ্য লম্বা ও বেঁটে
২. বিজের আকার গোল ও কুঞ্চিত
৩. বীজপত্রের বর্ণ হলুদ ও সবুজ
৪. বীজ-ত্বকের বর্ণ রঙ্গিন ও সাদা
৫. পরিপক্ক ফলের আকার স্ফীত ও খাঁজবিশিষ্ট
৬. অপরিপক্ক ফলের বর্ণ সবুজ ও হলুদ
৭. কান্ডে ফুলের অবস্থান শীর্ষে ও কক্ষে

*****

Related Items

উদ্ভিদ হরমোন বা ফাইটোহরমোন

উদ্ভিদের কান্ড ও মূলের অগ্রস্থ ভাজক কলা উদ্ভিদ-হরমোনের প্রধান উত্সস্থল । এছাড়া বীজপত্র, মুকুলিত পত্র, ভ্রূণ মুকুল, ভ্রূণমুকুলাবরণী অর্থাৎ কোলিওপটাইল, শস্য, ফল ইত্যাদিতে উদ্ভিদ হরমোন থাকে । উদ্ভিদ হরমোনগুলিকে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে যথা ...

হরমোনের উৎপত্তিস্থল ও কর্মস্থল এবং সাধারণ কাজ

উদ্ভিদদেহে হরমোন ভাজক কলায়, বিশেষ করে কান্ডও মূলের অগ্রভাগে অবস্থিত তরুণ কোষের মধ্যে উত্পত্তি লাভ করে । প্রাণীদেহে হরমোন অনাল গ্রন্থি বা অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির কোষে উত্পন্ন হয় । সুতরাং উদ্ভিদদেহে ভাজক কলা এবং প্রাণীদেহে অনাল গ্রন্থি হরমোনের প্রধান উত্সস্থল ...

হরমোনের সাধারণ ধারণা - সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য

জীবদেহের যে জৈব-রাসায়নিক পদার্থ সারা দেহে রাসায়নিক সমন্বয়সাধন করে তাকেই হরমোন বলা হয় । হরমোন সাধারণত বিশেষ ধরনের কোষ, কলা এবং অন্তঃক্ষরা বা অনালগ্রন্থি থেকে ক্ষরিত হয় । ওই জৈব-রাসায়নিক পদার্থ সাধারণত প্রাণীদের ক্ষেত্রে রক্ত ও লসিকার মাধ্যমে এবং উদ্ভিদের ...

জিভ, ত্বক ও নাসিকা

জিহ্বার সাহায্যে আমরা প্রধানত স্বাদ গ্রহন করি । এইজন্য জিহ্বাকে স্বাদেন্দ্রিয় বলে। যে আচ্ছাদন আমাদের দেহের কোমল অংশকে ঢেকে রাখে এবং চাপ, তাপ, স্পর্শ, বেদনা ইত্যাদি অনুভব করতে সাহায্য করে, তাকে ত্বক বা চর্ম বলে । নাসিকা বা নাক হল আমাদের ঘ্রাণেন্দ্রিয় । নাসা-গহ্বরের ছাদে ...

কর্ণ বা কান (Ear)

যে জ্ঞানেন্দ্রিয়ের সাহায্যে মানুষ বহিরাগত শব্দ শোনে তাকে কর্ণ বা কান বলে । মানুষের কানের প্রধান তিনটি অংশ হল - বহিঃকর্ণ, মধ্য কর্ণ এবং অন্তঃকর্ণ । মানুষের বহিঃকর্ণটি তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত; যথা- কর্ণছত্র, কর্ণকুহর, এবং কর্ণপটহ । কর্ণছত্র দুটি মাথার দু'পাশে অবস্থিত এবং অনৈচ্ছিক ...