উদ্ভিদ ও প্রাণীর রেচন ক্রিয়ার পার্থক্য

Submitted by arpita pramanik on Mon, 11/26/2012 - 09:44

উদ্ভিদ ও প্রাণীর রেচন ক্রিয়ার পার্থক্য (Comparison between Animals Excretion and Plants Excretion)

 

বৈশিষ্ট্য উদ্ভিদের রেচন ক্রিয়া প্রাণীর রেচন ক্রিয়া

১.রেচন

অঙ্গ/তন্ত্র

রেচন পদার্থ নিষ্কাশনের জন্য উদ্ভিদ দেহে কোনও নির্দিষ্ট অঙ্গ থাকে না । এরা পত্রমোচন, বাকল মোচন, গঁদ নিঃসরণের মাধ্যমে রেচন পদার্থ ত্যাগ করে ।

প্রাণীর দেহে রেচন পদার্থ নিষ্কাশনের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্গ ও তন্ত্র থাকে ।

২.সঞ্চয় 

অধিকাংশ উদ্ভিদ তাদের রেচন পদার্থ গুলোকে অদ্রাব্য কেলাস বা কোলয়েডরূপে দেহের কলাকোষে সঞ্চিত রাখে ।  প্রাণীরা রেচন পদার্থ দেহে বেশি সময়ের জন্য সঞ্চিত রাখতে পারে না, এগুলিকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় দেহ থেকে নির্গত করে । কয়েকটি সন্ধিপদ এবং সরীসৃপ প্রাণী তাদের রেচন পদার্থ সাময়িকভাবে বহিঃকঙ্কালে সঞ্চিত করে রাখে । 
৩.ব্যবহার/অর্থকরী গুরুত্ব উদ্ভিদরা তাদের রেচন পদার্থগুলোকে বিভিন্ন উপচিতি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনরায় ব্যবহার করে । উদ্ভিদের রেচন পদার্থগুলোর অর্থকরী গুরুত্ব অপেক্ষাকৃত বেশি । প্রাণীরা তাদের রেচন পদার্থগুলোকে পুনরায় ব্যবহার করতে পারে না । প্রাণীদের রেচন পদার্থগুলোর অর্থকরী গুরুত্ব কম ।
৪.পরিমাণ উদ্ভিদ দেহে বিপাকীয় ক্রিয়ার হার কম হওয়ায় এদের দেহে উত্পন্ন রেচন পদার্থের পরিমাণও খুব কম হয় । উদ্ভিদদেহে নাইট্রোজেন ঘটিত রেচন পদার্থ কম সৃষ্টি হয় । প্রাণীদেহে বিপাকীয় ক্রিয়ার হার অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ায় এদের দেহে উত্পন্ন রেচন পদার্থের পরিমাণও বেশি । প্রাণীদেহে নাইট্রোজেন ঘটিত রেচন পদার্থ তুলনামূলকভাবে বেশি উত্পন্ন হয় ।

  ৫.অপসারণ   

 

উদ্ভিদের রেচন পদার্থ কম ক্ষতিকর এবং এগুলি দেহ থেকে দ্রুত অপসারিত না হলেও তেমন কোনও ক্ষতি হয় না ।

প্রাণীদের  রেচন পদার্থ বেশি ক্ষতিকর এবং এগুলি দ্রুত অপসারিত না হলে কোষের বিপাকীয় ক্রিয়ার হার কমে যেতে পারে, এমনকি কোষের মৃত্যুও হাতে পারে ।   

 

*****

Related Items

ভাইরাস ও ভাইরাসের বৈশিষ্ঠ্য

ভাইরাস কথার শব্দতত্ত্বগত অর্থ বিষ। 1796 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড জেনার সর্বপ্রথম ভাইরাস আক্রান্ত বসন্ত রোগের কথা উল্লেখ করেন । 1936 খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের ব্যাডেন এবং পিরী পরীক্ষা করে দেখান যে, ভাইরাসে নিউক্লিক অ্যাসিড ও প্রোটিন আছে এবং ভাইরাসগুলো নিউক্লিও ...

মাছ ও পায়রার অভিযোজন বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য

মাছ জলচর প্রাণী। পায়রা খেচর প্রাণী। মাছের দেহ আঁশ অথবা পিচ্ছিল মিউকাস দিয়ে আবৃত । পায়রার দেহ পালক দ্বারা আবৃত । মাছের গমন অঙ্গ হল পাখনা । পায়রার গমন অঙ্গ হল একজোড়া ডানা এবং একজোড়া পা। মাছের মেরুদন্ডের দু'পাশে মায়োটোম পেশি থাকে, যা মেরুদন্ডকে ...

পায়রার অভিযোজন

পায়রা খেচর প্রাণী । আকাশে ওড়ার জন্য পায়রার নিম্নলিখিত অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ করা যায় । পায়রার উড্ডয়নে সাহায্যকারী অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য দেহের তাপ সংরক্ষণে সাহায্য করে । দেহের আপেক্ষিক গুরুত্ব হ্রাস করে । পায়রার পালকগুলি বার্ব, বার্বিউল ও ...

রুই মাছের অভিযোজন

রুই মাছ মুখ্য জলজ প্রাণী । জলে বসবাস করার জন্য এদের দেহে নিম্নলিখিত অভিযোজনগুলি দেখা যায় । রুই মাছের দেহ বেম বা মাকুর মতো । দেহ দু'পাশ থেকে চ্যাপ্টা এবং দেহ থেকে কোনো প্রবর্ধক বেরিয়ে থাকে না । জলে সাঁতার কাটার সময় জলের গতি রোধ করার জন্য দেহের গঠন ...

সুন্দরী বা সুঁদরী গাছের অভিযোজন

সুন্দরী এক রকমের লবণাম্বু উদ্ভিদ । এরা সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকার কর্দমাক্ত ও লবণাক্ত মাটিতে জন্মায় । এর অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্যগুলি হল - মাটি লবণাক্ত থাকায় মূল মাটির গভীরে প্রবেশ করে না, মূল মাটির অল্প নীচে বিস্তৃত থাকে । মাটি কর্দমাক্ত ও রন্ধ্রবিহীন ...