উত্তরের বিস্তীর্ণ নিম্নসমভূমি অঞ্চল

Submitted by avimanyu pramanik on Tue, 12/16/2014 - 11:37

উত্তরের বিস্তীর্ণ নিম্ন সমভূমি অঞ্চল : এই বিস্তীর্ণ নিম্ন সমভূমি অঞ্চলকে দুটি প্রধান ভুপ্রাকৃতিক উপবিভাগে ভাগ করা যায়— (ক) সাইবেরিয়ার নিম্ন সমভূমি এবং (খ) তুরাণের নিম্ন সমভূমি ।

(ক) সাইবেরিয়ার নিম্ন সমভূমি : সাইবেরিয়ার নিম্ন সমভূমিকে পৃথিবীর বৃহত্তম নিম্ন সমভূমি বলা যায়, যা পশ্চিমে ইউরাল পর্বতের কাছে সবচেয়ে চওড়া হলেও উত্তর-পূর্ব দিকে ইয়াব্লোনয় ও স্তানোভয় পর্বতের কাছে ধীরে ধীরে সংকীর্ণ হয়ে এসেছে । সমগ্র অঞ্চলটি দক্ষিণ থেকে উত্তরে সুমেরু মহাসাগরের দিকে ধীরে ধীরে ঢালু হয়ে যাওয়ায় এই অঞ্চলের প্রধান তিনটি নদী ওব, ইনিসি ও লেনা — এই তিনটি নদীই উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে সুমেরু সাগরে পড়েছে । ওব নদীর দৈর্ঘ্য ৪,৫০০ কিমি, ইনিসি নদীর দৈর্ঘ্য ৫,১৫০ কিমি এবং লেনা নদীর দৈর্ঘ্য ৪,০০০ কিমি । সুমেরু অঞ্চলের প্রচন্ড ঠান্ডার জন্য এইসব নদীগুলির নিম্ন প্রবাহ এবং উত্তর দিকের মোহানা বছরের বেশির ভাগ সময় বরফাবৃত থাকায় এইসব নদীগুলির জল সহজে সাগরে পড়তে পারে না । তাই দক্ষিণ দিক থেকে বেশি বৃষ্টির জল এবং বরফ গলা জল এলে এইসব নদীতে প্রতি বছর প্রচন্ড বন্যা হয় এবং জল উপছে পড়ে এখানকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জলাভূমি ও বিল সৃষ্টি করে ।

(খ) তুরাণের নিম্ন সমভূমি : এশিয়ার উত্তরে সমভূমির দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে কাস্পিয়ান এবং আরল সাগরের চারিদিকে অবস্থিত নিম্ন ভূমিটি তুরাণের নিম্নভুমি নামে পরিচিত । এই অঞ্চল স্থানে স্থানে সমুদ্রতল থেকেও নীচু । এই অঞ্চলের দুটো নদী— আমুদরিয়া ও সিরদরিয়া । আমুদরিয়া নদীর দৈর্ঘ্য ২,০৯০ কিমি এবং সিরদরিয়া নদীর দৈর্ঘ্য ১,৭৭০ কিমি । এই দুটি নদীই আরল সাগরে পড়েছে । কাজাকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তান নিম্নভুমি তুরাণের নিম্নভুমির অন্তর্গত ।

*****

Related Items

পলল ব্যজনী (Alluvial Cone)

পলল ব্যজনী (Alluvial Cone) : পার্বত্য অঞ্চল থেকে সমভূমিতে নেমে আসার সময়ে নদীর মাধ্যগতিতে গতিপথের ঢাল হঠাৎ কমে যাওয়ার কারণে নদীর গতিবেগ হ্রাস পায় । স্রোতের বেগ কমে যাওয়ায় পার্বত্য অঞ্চল থেকে বয়ে নিয়ে আসা নুড়ি, বালি, কাঁকর, কাদামাটি, শিলাচূর্ণ, পলিমাটি

মন্থকূপ (pot Hole)

মন্থকূপ (pot Hole) : উচ্চগতি বা পার্বত্যপ্রবাহে বন্ধুর গতিপথের কারণে নদীর প্রবল স্রোতের সঙ্গে বাহিত প্রস্তরখণ্ড, নুড়ি প্রভৃতি পাক খেয়ে ঘুরতে ঘুরতে নীচের দিকে অগ্রসর হয় । এর ফলে পরিবাহিত নুড়ি ও প্রস্তরখণ্ডের দ্বারা অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় নদীর তলদেশে ছোটো ছো

প্রপাত কূপ (Plunge pool)

প্রপাত কূপ [Plunge pool] : নদীর গতিপথের যে অংশে জলপ্রপাতের জলধারা সজোরে এসে পড়ে সেখানে এই জলধারা সজোরে এসে পড়ার ফলে এবং জলধারাবাহিত শিলাখণ্ডের আঘাতে জলপ্রপাতের পাদদেশে হাঁড়ির মতো গোলাকার গর্তের সৃষ্টি হয়, তাকে প্রপাতকূপ বা প্লাঞ্জপুল

জলপ্রপাত (Waterfalls)

জলপ্রপাত (Waterfalls) : পার্বত্য প্রবাহে নদীর গতিপথে উলম্ব বা আড়াআড়িভাবে কঠিন ও নরম শিলাস্তর অবস্থান করলে নদী কঠিন শিলা অপেক্ষা নরম শিলাস্তরকে অধিক ক্ষয় করে ও কালক্রমে উঁচু হয়ে থাকে এবং গতিপথে খাড়া ঢাল গড়ে তোলে । নদীর গতিপথের ঢাল হঠাৎ খাড়াভাবে নেম

খরস্রোত (Rapids)

খরস্রোত (Rapids) : নদীর উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপগুলির মধ্যে অন্যতম হল খরস্রোত বা র‍্যাপিডস । পার্বত্য প্রবাহে নদীর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা পরস্পর আড়াআড়িভাবে অবস্থান করলে কঠিন শিলা অপেক্ষা কোমল শিল