Bengali Grammar

ব্যঞ্জনসংগতি বা সমীভবন :— কোনো শব্দের মধ্যে যদি দুটি ভিন্ন বা আলাদা ব্যঞ্জনধ্বনি পাশাপাশি থাকে, তবে উচ্চারণের সুবিধার জন্য দুটি ধ্বনিকে একই ধ্বনিতে পরিণত করা হয় । এইভাবে বিভিন্ন অসদৃশ ব্যঞ্জনধ্বনিকে সদৃশ ব্যঞ্জনধ্বনিতে পরিণত করার নাম সমীকরণ বা সমীভবন ।

বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে যে বাক্য পরিবর্তনে ভাষারীতি ও ক্রিয়ার কালের কোনো পরিবর্তন হবে না । সরল বাক্য থেকে জটিল বা যৌগিক বাক্যে পরিবর্তনের কয়েকটি নিয়ম বা বৈশিষ্ট্য আছে । সেগুলি হল—

বাক্য— আমরা যে কথা বলি অর্থাৎ একে অপরের সঙ্গে মনের ভাব বিনিময় করা হয় যে মাধ্যমের দ্বারা তাই বাক্য । কয়েকটি পদ পাশাপাশি বসে যখন মনের সম্পূর্ণভাব প্রকাশ করে তখন তাকে বাক্য বলে ।

সন্ধি বিচ্ছেদ (নমুনা প্রশ্ন এবং বিগত মাধ্যমিক পরীক্ষার)। অভীষ্ট= অভি+ইষ্ট, তেজস্ক্রিয়= তেজঃ+ক্রিয়, মুহুর্মুহু= মুহুঃ+মুহু , যজ্ঞাগারে= যজ্ঞ + আগারে, দিগভ্রম= দিক্+ভ্রম, নভোমন্ডল= নভঃ+মন্ডল, দুর্বল= দুঃ+বল, নীরব= নিঃ+রবে

বাচ্য বলতে সাধারণত বোঝায় প্রকাশভঙ্গি বা বাচনভঙ্গির রূপভেদ অর্থাৎ রূপের পরিবর্তন । যেমন— পুলিশ চোরটিকে ধরেছে । পুলিশের দ্বারা চোরটি ধরা হয়েছে । এখানে দেখা যাচ্ছে, বক্তব্য এক কিন্তু প্রকাশভঙ্গি আলাদা । সুতরাং বাচ্য হল ব্যক্তিভেদে বাচনভঙ্গি অনুযায়ী কর্তা, কর্ম বা ক্রিয়াপদের প্রাধান্য নির্দেশ করে ক্রিয়াপদের রূপের যে পরিবর্তন ঘটে, তাকেই বলে বাচ্য ।

ব্যাকরণে সমাস কথাটির অর্থ হল সংক্ষিপ্ত বা সংক্ষেপ । ব্যুৎপত্তিগত অর্থে অর্থাৎ সম্ —√অস্ + ঘঞ্ = সমাস হয় যার অর্থ হল সংক্ষেপ । মনের ভাবকে যথাযথভাবে সহজ সরল ও সংক্ষেপে প্রকাশ করার জন্য সমাস পড়া বা জানার প্রয়োজন । তাই সমাস বলতে আমরা বুঝি বাক্যের দুই বা তার বেশি পদকে এক পদে পরিণত করে সংক্ষেপ করার রীতিকে বলা হয় সমাস ।

কারক —দশম শ্রেণির ব্যাকরণের পাঠ্যসূচীতে প্রথমেই রয়েছে কারকের স্থান । সংস্কৃতে বলা হয় 'ক্রিয়ান্বয়ী কারকম্' অর্থাৎ ক্রিয়ার সঙ্গে বাক্যের অন্যান্য নামপদগুলির (বিশেষ্য, বিশেষণ ও সর্বনাম পদ) অন্বয় বা সম্পর্ক তৈরি করে দেয় কারক । সুতরাং বলাই যায় যে — বাক্যের ক্রিয়াপদের সঙ্গে নামপদের সম্বন্ধই হল কারক ।

ক্রিয়াপদের অবিভাজ্য অংশকে বলা হয় ধাতু । অর্থাৎ ক্রিয়াপদকে ভাঙতে ভাঙতে যখন আর ভাঙা যায় না, তখন সেই অবিভাজ্য অংশটি হল ধাতু ।

যেসব অব্যয় বা শব্দখণ্ড কোনো ধাতুর বা শব্দের আগে বসে ধাতু বা শব্দের অর্থের পরিবর্তন ঘটায় বা নতুন অর্থ দান করে সেই অব্যয় বা শব্দখণ্ডকে উপসর্গ বলে ।