লবণ ও লবণের ধর্ম

Submitted by arpita pramanik on Mon, 09/21/2020 - 20:36

লবণ ও লবণের ধর্ম (Properties of Salt)

লবণ (Salt)

অ্যাসিডের প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু ধাতু বা অপর কোন ধাতুধর্মী মূলক দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিস্থাপিত হয়ে যে যৌগ উৎপন্ন হয় তাকে লবণ বলে । যেমন- সোডিয়াম ক্লোরাইড,(NaCl), ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgSO4), জিংক সালফেট (ZnSO4), অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড (NH4Cl) ইত্যাদি ।

MgO + H2SO4 = MgSO4 +H2O  ( ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgSO4)  একটি লবণ )

NaOH + HCl =NaCl +H2O  ( সোডিয়াম ক্লোরাইড,(NaCl) একটি লবণ )

Zn + H2SO4 = ZnSO4 +H2 ( জিংক সালফেট (ZnSO4) একটি লবণ )

 

ধাতু, ক্ষারক বা ক্ষারের সঙ্গে আংশিক বা সম্পূর্ণ বিক্রিয়ার ফলে হাইড্রোজেন বা জল ছাড়া অপর যে নতুন যৌগটি উৎপন্ন হয় তাকে লবণ বলে । লবন এর দুটি অংশে থাকে । ধাতু বা ধাতুধর্মী তড়িৎ ধনাত্মক অংশটিকে ক্ষারকীয় মূলক (basic radical) এবং অধাতু বা অ্যাসিডধর্মী তড়িৎ ঋনাত্বক অংশটিকে অ্যাসিড মূলক (acid radical) বলে ।

 

লবণের শ্রেণীবিভাগ (Classification of Salts)

লবণ কে সাধারণত তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায় । যথা --1.  নরমাল বা শমিত লবণ, 2. অ্যাসিড লবণ, 3. ক্ষারকীয় লবণ ।

 

নরমাল বা শমিত লবণ (Normal Salt)

কোন অ্যাসিডের প্রতিস্থাপনীয় সমস্ত হাইড্রোজেন পরমাণু ধাতু বা ধাতুধর্মী তড়িৎ ধনাত্মক মূলক দ্বারা সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপিত হয়ে যে লবণ উৎপন্ন হয় তাকে নরমাল বা শমিত লবণ (Normal Salt) বলে। যেমন- সোডিয়াম ক্লোরাইড,(NaCl), ক্যালসিয়াম কার্বনেট (CaCO3), অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড (NH4Cl), জিংক সালফেট (ZnSO4) -- ইত্যাদি

2Na + 2HCl = 2NaCl + H2

2NH4OH + H2SO4 =(NH4)2SO4 + 2H2O

 

অ্যাসিড লবণ (Acid Salt or bi-salt)

কোন অ্যাসিডের একাধিক প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণুর ধাতু বা ধাতুধর্মী তড়িৎ ধনাত্মক মৌল দ্বারা আংশিকভাবে প্রতিস্থাপিত হয়ে যে লবণ উৎপন্ন হয় তাকে অ্যাসিড লবণ (Acid Salt or bi-salt) বলে । যেমন- ক্যালসিয়াম বাই কার্বনেট CaH(CO3)2, সোডিয়াম বাই কার্বনেট NaHCO3, সোডিয়াম বাই সালফেট NaHSO4 , সোডিয়াম ডাই হাইড্রোজেন ফসফেট NaH2PO4 ইত্যাদি ।

H2SO4 +NaOH = NaHSO4 + H2O

 

ক্ষারকীয় লবণ (Basic Salt)

কোন ক্ষারকের এর সমস্ত হাইড্রক্সিল মূলক অধাতু বা অ্যাসিড মূলক দ্বারা আংশিকভাবে প্রতিস্থাপিত হয়ে যে লবণ উৎপন্ন হয় তাকে তাকে ক্ষারকীয় লবণ (Basic Salt) লবণ বলে । যেমন-ক্ষারকীয় কপার কার্বনেট CuCO3, Cu(OH)2 , বেসিক লেড ক্লোরাইড Pb(OH)Cl, বেসিক জিংক ক্লোরাইড Zn(OH)Cl, বেসিক লেড নাইট্রেট Pb(OH)NO3 ইত্যাদি ।

Pb(OH)2 + HNO3 = Pb(OH)NO3 +2H2O

 

এছাড়াও আরেক ধরনের লবণ প্রকৃতিতে পাওয়া - যুগ্ম লবণ (Double Salt)

যুগ্ম লবণ (Double Salt)

দুটি সরল লবণ নির্দিষ্ট আণবিক অনুপাতে যুক্ত হয়ে এমন একটি নতুন লবণ সৃষ্টি করে যা কঠিন অবস্থায় স্থায়ী কিন্তু জলীয় দ্রবণে প্রায় সম্পূর্ণ রূপে তড়িৎ বিয়োজিত হয়ে উপাদান লবণ দুটির আয়ন উৎপন্ন করে, তাকে যুগ্ম লবণ বলে । যেমন-

1.মোর লবণ (Mohr salt)  FeSO4, (NH4)2SO4, 6H2O

2. ক্রোম আলাম K2SO4, Cr2(SO4)3, 24H2O

-- ইত্যাদি

*****

Comments

Related Items

অ্যাসিড, ক্ষারক ও লবণ

সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4), নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3), হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCL), সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড (NaOH), পটাশিয়াম হাইড্রক্সাইড (KOH), ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgSO4), সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl)

দ্রবণ (Solution)

যে পদার্থ দ্রবীভূত হয় তাকে দ্রাব বলে এবং যার মধ্যে দ্রাব দ্রবীভূত হয় তাকে বলা হয় দ্রাবক । দ্রাব এবং দ্রাবক এর সমসত্ব মিশ্রণ হল দ্রবণ । দ্রবণের দুটি অংশে থাকে --- দ্রাব (Solute) এবং দ্রাবক (Solvent) । অর্থাৎ দ্রবণ = দ্রাব + দ্রাবক

শব্দ বিস্তারের জন্য মাধ্যমের প্রয়োজন হয়

শব্দের উৎস থেকে উৎপন্ন শব্দ বায়ু মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আমাদের কানে এসে পৌঁছলে মস্তিষ্কে এক রকম অনুভূতি সৃষ্টি করে । তখন আমরা শব্দ শুনতে পাই । বায়ু মাধ্যম না থাকলে শব্দ আমাদের কানে পৌঁছতে পারত না । ফলে আমরা শব্দ শুনতে পেতাম না । কঠিন মাধ্যমের মধ্য দিয়ে শব্দের বিস্তার ...

পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন

পদার্থ কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় এই তিন অবস্থায় থাকতে পারে । তাপ প্রয়োগ করলে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন হয় । তাপ প্রয়োগে কঠিন পদার্থ প্রথমে তরল এবং পরে গ্যাসীয় অবস্থায় পরিবর্তিত হয় আবার তাপ নিষ্কাশনে গ্যাসীয় পদার্থ প্রথমে তরল এবং পরে কঠিন অবস্থায় রূপান্তরিত হয় ।

পদার্থ ও শক্তি (Matter and Energy)

প্রকৃতিতে দুটি ভিন্ন বিষয় অস্তিত্ব আমরা বুঝতে পারি একটি জড় বা পদার্থ (matter) এবং অন্যটি হলো শক্তি (energy)। পদার্থের নির্দিষ্ট পরিমাণকে বস্তু বলে । যেমন প্লাস্টিক দিয়ে জলের বালতি, মগ তৈরি করা হয় সুতরাং জলের বালতি, মগ হলো বস্তু কিন্তু এগুলির উপাদান প্লাস্টিক হলো