১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ বা সিপাহী বিদ্রোহ

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 04/22/2012 - 19:22

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ (The Revolt of 1857)

১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশির যুদ্ধে জয়লাভের পর বাংলায় ব্রিটিশ শাসন স্থাপিত হলে বাংলা তথা ভারতের জনগণ তাকে ভালো মনে মেনে নেয় নি এবং শুরু থেকেই জনমনে ব্রিটিশ সম্পর্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় । তারপর একের পর এক রাজ্যজয়ে রাজ্যহারা রাজন্যবর্গ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন । ঔপনিবেশিক অর্থনীতি, শাসন ও শোষণ রাজা, প্রজা প্রভৃতি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সামগ্রিকভাবে ব্রিটিশ বিরোধী করে তোলে । পরিণতিতে ভারতের নানা অঞ্চলের মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন । ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই একশো বছরের মধ্যে ভারতে অসংখ্য বিদ্রোহ অনুষ্ঠিত হয় । এগুলির মধ্যে ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে ভেলোরে বিদ্রোহী সিপাহিদের বিদ্রোহ, ১৮১৬ খ্রিস্টাব্দে উত্তরপ্রদেশে বেরিলির বিদ্রোহ, ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে ব্যারাকপুরের বিদ্রোহ, ছোটোনাগপুরের কোল বিদ্রোহ, বাংলার ফরাজি আন্দোলন, দক্ষিণ ভারতের মোপলা বিদ্রোহ, বিহারে সাঁওতাল বিদ্রোহ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য ।  এছাড়া ভারতীয়দের যোগ্যতা সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকারের উন্নাসিক দৃষ্টিভঙ্গি ভারতীয় মধ্যবিত্ত ও বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের মনে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাবের জন্ম দেয় । ইংরেজদের অত্যাচার, অনাচার প্রভৃতি বিভিন্ন কারণে ভারতবাসীর ক্ষোভ যখন পুঞ্জীভূত হতে লাগল, তখন এনফিল্ড রাইফেলের প্রচলন এই বিদ্রোহের আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছিল । এই রাইফেলে যে টোটা ব্যবহার করা হত তার উপরের আবরণটি দাঁতে কেটে রাইফেলে ভরতে হত । গুজব রটে যায় যে, এই কার্তুজে গোরু ও শুয়োরের চর্বি মেশানো হয়েছে, ফলে হিন্দু ও মুসলমান উভয়ের ধর্মনাশের সম্ভাবনা রয়েছে । ফলত ধর্মনাশের আশঙ্কায় হিন্দু ও মুসলিম সিপাহিরা এই টোটা ব্যবহারে অসম্মত হয় এবং বিদ্রোহ ঘোষণা করে । ক্রমে এই বিদ্রোহের আগুন সমগ্র দেশে ছড়িয়ে পড়ে । ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ব্যারাকপুরে মঙ্গল পান্ডে নামে জনৈক সিপাহি এক ইংরেজ অফিসারকে হত্যা করলে মহা বিদ্রোহের সূচনা হয় । ১৮৫৭ -র মহাবিদ্রোহ বা সিপাহি বিদ্রোহ হল ভারতবাসীর পুঞ্জিভূত ক্ষোভের এক অনিবার্য পরিণতি ছিল  । এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারী দু’জন নেতা ছিলেন দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ তাঁতিয়া টোপি । মহাবিদ্রোহ সংঘটিত হওয়ার সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন লর্ড ক্যানিং

*****

Related Items

বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন (Indian universities Act, 1904)

লর্ড কার্জন প্রতিক্রিয়াশীল শাসক হলেও শিক্ষার ব্যাপারে তিনি খুবই উৎসাহী ছিলেন । লর্ড কার্জন স্যার টমাস র‍্যালের সভাপতিত্বে ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে 'র‍্যালে কমিশন' গঠন করেছিলেন । এটি 'ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন' নামেও পরিচিত । স্যার টমাস র‍্যালে ছিলেন বড়লাটের কার্যনির্বাহক সমিতির আইন সদস্য । এই কমিশন ...

হান্টার কমিশন (Hunter Education Commission)

১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে লর্ড রিপণের সময় উইলিয়াম হান্টারের নেতৃত্বে হান্টার কমিশন গঠিত হয় । এই কমিশনের কাজ ছিল দেশে ইংরেজি শিক্ষার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা । শিক্ষার প্রসারে হান্টার কমিশনের ভূমিকা এক অভিনব অধ্যায়ের সূচনা করেছিল । হান্টার কমিশনের সুপারিশগুলি ছিল ....

উডের ডেসপ্যাচ (Wood's Despatch of 1854)

শিক্ষা সংক্রান্ত নানা সমস্যার সমাধান করার জন্য ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির পরিচালক সমিতির সভাপতি স্যার চার্লস উড 'শিক্ষা বিষয়ক প্রস্তাব' (Wood's Education Despatch) নামে একটি শিক্ষা নীতি রচনা করে ভারতে পাঠান । ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে চার্লস উডের সুপারিশ ...

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ:-

মাধ্যমিকের নমুনা প্রশ্ন:-

১. ভারতে 'হাফটোন' প্রিন্টিং পদ্ধতি প্রবর্তন করেন—     [মাধ্যমিক-২০১৭]

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা:-

মাধ্যমিকের নমুনা প্রশ্ন:-

১. ভারতের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হল—       [মাধ্যমিক -২০১৭]