হায়দ্রাবাদ রাজ্যের ভারত অন্তর্ভুক্তি

Submitted by administrator on Fri, 02/26/2021 - 21:55

হায়দ্রাবাদ রাজ্যের ভারত অন্তর্ভুক্তি (Annexation of Hyderabad):-

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের 'ভারতের স্বাধীনতা আইন' -এ বলা হয় ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর দেশীয় রাজ্যগুলির সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের সম্পাদিত চুক্তির পরিসমাপ্তি ঘটবে । দেশীয় রাজ্যগুলিকে নিজেদের স্বাধীন অস্তিত্ব বজায় রাখার অথবা ভারত বা পাকিস্তানের যে-কোনো একটি রাষ্ট্রে যোগদানের অধিকার দেওয়া হয় । এই আইন অনুযায়ী ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় বা ব্রিটিশদের ভারত ত্যাগের পর ভারত ভূখণ্ডের হায়দ্রাবাদ রাজ্যের জনসাধারণ ভারতে যোগদান করতে চাইলেও হায়দ্রাবাদের ভারত-বিদ্বেষী নিজাম ভারত বা পকিস্তান কোনো পক্ষেই যোগ না দিয়ে নিজ রাজ্যের স্বাধীন অস্তিত্ব বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নেন ।

ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় ওসমান আলি খান হায়দ্রাবাদের নিজাম ছিলেন । এখানকার জনসংখ্যার শতকরা ৮৫ ভাগ হিন্দু হলেও প্রধান শাসক ছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত । ৮২,০০০ বর্গমাইল আয়তন বিশিষ্ট হায়দ্রাবাদ ছিল ভারতের বৃহত্তম রাজ্য । হায়দ্রাবাদের প্রশাসনে গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে হায়দ্রাবাদ রাজ্যে জাতীয় কংগ্রেস সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করে এবং তেলেঙ্গানায় কমিউনিস্টদের উদ্যোগে সশস্ত্র কৃষক সংগ্রাম শুরু হয় । এই রকম জটিল পরিস্থিতিতে ভারত সরকার হায়দ্রাবাদের নিজামকে এক চরম পত্র দেয় । কিন্তু হায়দরাবাদের নিজাম তা উপেক্ষা করেন । এই পরিস্থিতিতে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৩ সেপ্টেম্বর জেনারেল জয়ন্তনাথ চৌধুরীর নেতৃত্বে ভারতীয় সেনাবাহিনী হায়দ্রাবাদে অভিযান শুরু করে, যা 'অপারেশন পোলো' নামে পরিচিত । ভারতীয় সেনাবাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়ে হায়দ্রাবাদের বাহিনী পরাজিত হয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করলে হায়দ্রাবাদের নিজাম 'ভারতভুক্তির দলিল' -এ স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয় । পরে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে হায়দ্রাবাদ রাজ্যটি ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় ।

*****

Comments

Related Items

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

প্রশ্ন:-  আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান—

’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

প্রশ্ন:-  ’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল 'করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে' ।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

১৯৪২ সালের ৮ই আগষ্ট ‘ভারত-ছাড়ো প্রস্তাব’ গৃহীত হলে পরদিন অর্থাৎ ৯ই আগষ্ট, ১৯৪২ এর ভোর থেকেই আন্দোলন শুরু হয়, যেমন—

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাস্ট্যাস্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

প্রশ্ন:-  ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান বিশেষভাবে স্মরনীয় ।