Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 12/10/2020 - 19:42

ঊনিশ শতকে বাংলায় সর্বধর্মসমন্বয়ের ক্ষেত্রে যাঁরা গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছিলেন লালন ফকির বা লালন সাঁই হলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম আধ্যাত্মিক বাউলসাধক । তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ও বাংলাদেশের বাউলগানের শ্রেষ্ঠতম রচয়িতা ছিলেন । তিনি সাধারণ মানুষের কাছে লালন ফকির, লালন সাঁই, লালন শাহ ইত্যাদি নামে পরিচিত ছিলেন । লালন ফকিরের প্রথম জীবনের বেশ কিছু বিষয়ের সঠিক তথ্য জানা যায় না । সম্ভবত তিনি ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে যশোহর জেলার ঝিনাইদহ মহকুমার হরিশপুর গ্রামে বা কুষ্ঠিয়া জেলার কুমারখালি থানার ভাড়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । একটি মতানুসারে লালন ফকির সম্ভ্রান্ত হিন্দু কায়স্থ পরিবারের সন্তান ছিলেন । অন্য মতানুসারে লালন ফকির ছিলেন মুসলমান তন্তুবায় পরিবারের সন্তান । সমাজ ও সংসার সম্পর্কে বীতশ্রদ্ধ হয়ে লালন বৈরাগ্য গ্রহণ করে সিরাজ সাঁই নামে বাউল গুরুর কাছে দীক্ষা নেন ও বাউল সাধনায় মনোনিবেশ করেন । অসামান্য প্রতিভার গুণে তিনি অল্পদিনেই বাউল গীতিকে অত্যন্ত জনপ্রিয় করে তোলেন । লালন ফকির ছিলেন একজন মানবতাবাদী সাধক, যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সকল প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন । তিনি নিরাকার পরমেশ্বরে বিশ্বাস করতেন । তিনি তাঁর বাউল গানের মধ্যে দিয়ে জাতিভেদের উর্ধ্বে উঠে মানবধর্মের জয়গান গেয়েছেন । তাঁর বাউল গানের মধ্যে যেমন ইসলামি চিন্তার প্রভাব আছে তেমন বৈষ্ণব ভাবনাও আছে । আল্লা-মহম্মদ-কৃষ্ণ-গৌর সবাইকে নিয়ে তিনি উদারভাবে গানে বেঁধেছেন । লালন লেখেন— "সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে / লালন বলে জাতের কি রূপ দেখলাম না এই নজরে ।" ১৮৯০ সালের ১৭ই অক্টোবর লালন ফকির ১১৬ বছর বয়সে কুষ্টিয়ার কুমারখালির ছেউড়িয়াতে নিজ আখড়ায় মৃত্যুবরণ করেন ।

*****

Comments

Related Items

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

প্রশ্ন:-  আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান—

’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

প্রশ্ন:-  ’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল 'করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে' ।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

১৯৪২ সালের ৮ই আগষ্ট ‘ভারত-ছাড়ো প্রস্তাব’ গৃহীত হলে পরদিন অর্থাৎ ৯ই আগষ্ট, ১৯৪২ এর ভোর থেকেই আন্দোলন শুরু হয়, যেমন—

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাস্ট্যাস্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

প্রশ্ন:-  ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান বিশেষভাবে স্মরনীয় ।