কেন্দ্রীভূত শাসন ব্যবস্থার সূচনা

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 04/21/2012 - 12:23

কেন্দ্রীভূত শাসন ব্যবস্থার সূচনা (Growth of Centralised Administration)

দ্বৈতশাসনের ফলে বাংলার অর্থনীতি যে একবারে ভেঙ্গে পড়ছিল ওয়ারেন হেস্টিংস ভারতে এসেই তা প্রত্যক্ষ করেন । বাংলার ভেঙ্গে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য তিনি কতকগুলি ব্যবস্থা গ্রহন করেন ।

(১) প্রথমেই দ্বৈত-শাসনব্যবস্থা লোপ করেন ও  শাসনব্যবস্থা কোম্পানির তত্বাবধানে নিয়ে আসেন । 

(২) রাজস্ব আদায়কারী অত্যাচারী রেজা খাঁ ও সিতাব রায়কে পদচ্যুত করে কালেক্টর নামক এক কেন্দ্রীয় কর্মচারীর হাতে রাজস্ব আদায়ের ভার দেন ।

(৩) রাজকোষের উপর প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার জন্য তিনি রাজকোষাগার মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় উঠিয়ে নিয়ে আসেন ।

(৪) হেস্টিংস রাজস্ব বিভাগের কাজকর্ম সম্পর্কে অনুসন্ধান ও তথ্য সংগ্রহের জন্য 'আমিনি কমিশন' নামে এক সংস্থা স্থাপন করেন । এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তিনি কালেক্টর পদের পুনঃপ্রবর্তন করেন ।

(৫) কোম্পানির কর্মচারীরা যাতে বাদশাহ প্রদত্ত দস্তকের অপব্যবহার ও বিনা শুল্কে ব্যবসা না করতে পারেন সে দিকে হেস্টিংস কড়া নজর রাখতেন ।

(৬) কোম্পানির ব্যয় সংকোচনের জন্য তিনি দিল্লির মোগল বাদশাহ এবং বাংলার নবাবের বার্ষিক ভাতার পরিমাণ হ্রাস করেন । 

  এই ভাবে ভারতীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সমস্ত ক্ষমতা কলকাতার গভর্নর জেনারেল ও তাঁর সুপ্রীম কাউন্সিলের হাতে কেন্দ্রীভূত হয়, যা ভারতের কেন্দ্রীভূত প্রশাসন ব্যবস্থার সূচনা করে ।

*****

Related Items

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি (Characteristics of the Revolt of 1857) : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯শে মার্চ ব্যারাকপুর সেনা ছাউনিতে সিপাহি মঙ্গল পাণ্ডে প্রথম ব্রিটিশশক্তির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে এবং ক্রমে দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা ব্যক্তির

সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা : বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা (Early Stages of Collective Action) : ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে জুন রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পলাশির যুদ্ধে পরাজিত করলে বাংলায় ব্রিটিশ শাসনের সূচনা হয় । এই যুদ্ধের একশো বছর পর ১

পাবনার কৃষকবিদ্রোহ (১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে)

পাবনার কৃষকবিদ্রোহ (Peasants' Revolt in Pabna)  :- ১৯৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দের নীল্ বিদ্রোহের পরবর্তীকালে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে পূর্ববঙ্গের পাবনা জেলায় কৃষকদের ওপর জমিদারদের শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে কৃষকরা যে বিদ্রোহ ঘোষণা করে তা '

নীল বিদ্রোহ (Indigo Revolt)

নীল বিদ্রোহ (Indigo Revolt) : অষ্টাদশ শতকের শিল্প বিপ্লবের ফলে ইংল্যান্ডের বস্ত্রশিল্পে নীলের চাহিদা প্রবল ভাবে বৃদ্ধি পেলে মুনাফালোভী ইংরেজরা দাদনের জালে আবদ্ধ করে ছলে, বলে, কৌশলে দিল্লি থেকে ঢাকা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কৃষকদের নীলচ

বাংলায় ফরাজি আন্দোলন (Farazi Movement in Bengal)

ফরাজি আন্দোলন (Farazi Movement):- ঊনিশ শতকে বাংলায় সংঘটিত কৃষক-বিদ্রোহগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল ফরাজি আন্দোলন । 'ফরাজি' শব্দটি আরবি শব্দ 'ফরজ' থেকে এসেছে । ফরজ শব্দের অর্থ হল 'আল্লাহ কর্তৃক নির্দেশিত বাধ্যতামূলক কর্তব্য' । ইসলাম ধর্ম সংস্কারের উদ্দেশ্যে হা